প্রতিবেদন : স্নাতকস্তরে ভর্তি-প্রক্রিয়াকে এক ছাদের তলায় আনতে এবার অনলাইন পোর্টাল খুলল রাজ্য উচ্চশিক্ষা দফতর। গোটা দেশের মধ্যে প্রথম এই রাজ্যেই এই ধরনের অনলাইনে ভর্তির ব্যবস্থা শুরু হল। বুধবার বিকাশ ভবনে এই পোর্টালের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। দুটি পর্যায়ে আবেদন করা যাবে এই পোর্টালের মাধ্যমে। প্রথম পর্যায়ের আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হবে ২৪ জুন থেকে, চলবে ৭ জুলাই পর্যন্ত। প্রথম দফার ভর্তির মেধাতালিকা প্রকাশিত হবে ১২ জুলাই। ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হবে। তারপর আসন অনুযায়ী ফের দ্বিতীয় দফার ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে। যদিও এই শিক্ষাবর্ষের স্নাতকস্তরের ক্লাস ৭ অগাস্ট থেকে শুরু হবে বলেও জানাচ্ছে শিক্ষা দফতর। রাজ্যের ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে, ৪৬১টি সরাসরি সরকারি কলেজ ও সরকার পোষিত কলেজ এই পোর্টালের আওতাধীন। সেখানে ৭২১৭টি কোর্সে ৯ লক্ষ ৪৬ হাজার ৯২১ জন ভর্তি হতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, স্বশাসিত কলেজ, সংখ্যালঘু কলেজ, বিএড, ফাইন আর্টস, পারফর্মিং আর্টস, ক্রাফ্টস, নৃত্য, সঙ্গীত কলেজগুলি বাদ থাকছে। দেশের যেকোনও প্রান্তের পড়ুয়া বিনামূল্যে অনলাইনে আবেদন পারবেন তবে বিদেশি কেউ এই সুযোগ পাবেন না। বুধবার থেকে আগামী রবিবার পর্যন্ত পোর্টালটি ঘেঁটে দেখে সড়গড় হওয়ার সুযোগ পাবেন পড়ুয়ারা। এ-ছাড়াও ভর্তি-সংক্রান্ত কোনও রকম সমস্যা হলে টোল ফ্রি নম্বর ১৮০০১০২৮০১৪-এ ফোন করে যাবতীয় সংশয় মেটানো যাবে।
আরও পড়ুন- পার্ক স্ট্রিট শ্যুটআউটে ঝাড়খণ্ড থেকে গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত
উচ্চশিক্ষা দফতরের এই উদ্যোগে কলেজে ভর্তি সংক্রান্ত সব ধরনের জটিলতা যেমন কমবে শিক্ষার্থীদের তেমনই তাঁদের কোনওভাবে ভর্তিতে অতিরিক্ত টাকা দেওয়ার সমস্যাতেও পড়তে হবে না। ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) জানান, বিভিন্ন অস্বচ্ছতার অভিযোগ শোনা যাচ্ছিল। একাধিক জায়গায় ভর্তি হতে অভিভাবকদের বেশি টাকা খরচ হচ্ছিল। পরবর্তী সময়ে ভাল কলেজে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কেবলমাত্র সেই কলেজে ভর্তি হতে পারেননি। আসন খালি ইত্যাদি অসুবিধার কথা বহুদিন ধরে শুনতে পাচ্ছিলাম। এবছর তাই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আসন নিয়ে কেন্দ্রীয় অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে এই ভর্তির ব্যবস্থা হয়েছে। দুটি নির্দিষ্ট গেটওয়ের মাধ্যমে ভর্তির টাকা নেওয়া হবে। একটি কলেজে ভর্তি হওয়ার পর যদি শিক্ষার্থী মনে করেন অন্য কলেজে ভর্তি হবেন তাহলে সেক্ষেত্রে পরবর্তী কলেজে ভর্তির জন্য যদি অতিরিক্ত টাকা লাগে তাহলে আগের জমা দেওয়া টাকা বাদ দিয়ে বাদবাকি অতিরিক্ত টাকাটি দিতে হবে। আবার যদি দেখা যায় কোনও শিক্ষার্থী অন্য কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে আগের দেওয়া টাকা থেকে কম টাকা লাগছে। সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত জমা দেওয়া টাকা ফেরত পাবেন। ফলে আর্থিক দিক থেকে নিশ্চিন্ত থাকতে পারবেন অভিভাবকরা। অন্যদিকে, আবেদন করা সব কোর্সের মেরিট র্যা ঙ্ক আবেদনকারী নিজের ড্যাশবোর্ডে দেখতে পাবেন। আসন সংখ্যা ও যোগ্যতার মান স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকায় আরও ভাল কোর্সে আবেদন করারও সুযোগ পাওয়া যাবে।
এই পোর্টালে কলেজে ভর্তির আবেদনের জন্য প্রথমে একটি রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। তবে একটি আইডি ও পাসওয়ার্ড পাবেন আবেদনকারী। সেই আইডি পাসওয়ার্ড দিয়ে সর্বোচ্চ ২৫টি স্নাতকস্তরের কোর্সে আবেদন করতে পারবেন। পোর্টাল বন্ধ হওয়া পর্যন্ত সেই আবেদনে তিনি পরিবর্তন করতে পারবেন। এরপর একইদিনে সব কোর্সের মেধাতালিকা প্রকাশিত হবে। তবে একজন শিক্ষার্থী একটিমাত্র কোর্সেই ভর্তি হতে পারবেন। প্রয়োজনে মেধাতালিকা প্রকাশের পর তিনি আরও ভাল কোর্সের জন্যও আসন অনুযায়ী আবেদন করতে পারবেন। একজন পড়ুয়া কোনও বিষয় বাছাইয়ের পর বিষয় আপগ্রেড করতে চাইলে তাও পারবেন। আপগ্রেডেশনের পর বিষয়ভিত্তিক অতিরিক্ত ফি ব্যতীত কোনও টাকা শিক্ষার্থীকে দিতে হবে না।