নবনীতা মণ্ডল, নয়াদিল্লি : মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ থেকে বাড়িয়ে ২১ বছর করার জন্য সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে একটি বিল (Prohibition of Child Marriage (Amendment) Bill ) পেশ করেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি (Minister Smriti Irani)। কিন্তু ওই বিল নিয়ে একাধিক বিরোধী দল তীব্র আপত্তি জানায়। বিরোধীদের আপত্তির চাপে বাধ্য হয়ে সরকার শেষ পর্যন্ত বিলটি (Prohibition of Child Marriage (Amendment) Bill ) খতিয়ে দেখার জন্য সংসদীয় কমিটির কাছে পাঠায়। ওই কমিটির সদস্য সংখ্যা ৩১। মেয়েদের বিয়ের বয়স খতিয়ে দেখতে কমিটি, অথচ তাতে মাত্র একজন মহিলা সদস্য জায়গা পেয়েছেন৷ ঘটনাচক্রে, কমিটির মহিলা সদস্য তৃণমূল কংগ্রেসরই (TMC)৷ রাজ্যসভার তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সুস্মিতা দেব (MP Susmita Dev)। কমিটির নেতৃত্বে বিজেপি সাংসদ বিনয় সহস্রবুদ্ধে৷
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, মহিলাদের ইস্যুতে কমিটি গঠন, অথচ সেখানে যথাযথ মহিলা প্রতিনিধিত্ব নেই কেন? তাহলে বিজেপি সরকার কি মহিলা প্রতিনিধিদের মতামতকে উপেক্ষা করেই নিজেদের অ্যাজেন্ডা চাপিয়ে দিতে চায়? কমিটির ৩১ জন সদস্যের মধ্যে মাত্র একজন মহিলা থাকায় তাঁর মতামতকে কি আদৌ গুরুত্ব দেওয়া হবে? যদিও তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা নিজে আত্মবিশ্বাসী৷ তিনি বলেছেন, বাল্যবিবাহ (সংশোধনী) বিল নিয়ে আলোচনা শুরু হলে তিনি দৃঢ়ভাবে নিজের মতামত জানাবেন। দলের বক্তব্য তুলে ধরবেন৷ তাঁর মতামতকে যাতে গুরুত্ব দেওয়া হয় তা নিশ্চিত করবেন৷
আরও পড়ুন-উদ্বুদ্ধ করলেন কলকাতার মেয়র এবং ডেপুটি মেয়র, উৎসবের মেজাজে টিকা টিনএজারদের
কেন্দ্রের এই বিল নিয়ে বিরোধীরা শুরু থেকেই তীব্র আপত্তি জানায়। বিরোধীদের বক্তব্য, এই বিল নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। কেন্দ্রের উচিত, মেয়েদের বিয়ের বয়স না বাড়িয়ে নারীশিক্ষা ও তাদের পুষ্টির দিকে নজর দেওয়া। একটি মেয়ে ১৮ বছরে তাঁর ভোটাধিকার প্রাপ্ত হন। অর্থাৎ তিনি প্রাপ্তবয়স্ক। কিন্তু শুধুমাত্র বিয়ের ক্ষেত্রে তাঁকে অপ্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে গণ্য করা হলে সেটা আইনের বিরোধিতা করা হবে। আইনে বলা আছে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা নিজের পছন্দের জীবনসঙ্গী বেছে নিতে পারেন। কিন্তু প্রস্তাবিত আইন সেই অধিকার ভঙ্গ করছে।
৩১ সদস্যের কমিটির একমাত্র মহিলা সাংসদ তৃণমূল কংগ্রেসের সুস্মিতা দেব বলেছেন, আরও কয়েকজন মহিলা প্রতিনিধিকে এই কমিটিতে রাখা হলে ভাল হত। তবে কমিটির চেয়ারম্যান যাতে সকলের মতামতকে সমানরকম গুরুত্ব দেন সে বিষয়টি তিনি দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। সুস্মিতা বলেন, এই বিলটির বিষয় অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এক্ষেত্রে সকলের মতামত শোনা এবং তা বিবেচনা করে দেখা উচিত। একা হলেও তিনি এই বিল নিয়ে তাঁর সুচিন্তিত মতামত কমিটির সামনে তুলে ধরবেন।