অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, বোলপুর :সোনাঝুরি বনের মাঝে সরু লালমাটির রাস্তা। একটু এগিয়ে ছোট্ট ছোট্ট মাটির বাড়ি। দাওয়ায়, দেওয়ালে সুন্দর করে আঁকা আলপনা। আদিবাসীদের ছোট্ট গ্রাম আলো করে রয়েছে কাঠের কারুকাজ করা পুজোমণ্ডপ। ভিতরে দুর্গা প্রতিমা। দেবীর দশ হাতে নেই কোনও অস্ত্র।
শান্তির প্রতীক হিসাবে দশ হাতে থাকে দশটি ফুল। এই পুজো ঘিরে আশেপাশের আদিবাসী সম্প্রদায়ের মাীনুষ আনন্দে মেতে ওঠেন। এভাবেই প্রায় দু’দশক ধরে শান্তিনিকেতনের বোনের পুকুর ডাঙ্গা সোনাঝুরির জঙ্গলে পূজিত হয়ে আসছেন মা দুর্গা। এই পুজোকে ঘরি রয়েছে নানান ইতিহাস। শিল্পী বাঁধন দাস এই পুজো শুরু করেছিলেন দু’দশক আগে। তখন এই পুজোর নাম ছিল হীরালিনী দুর্গাউৎসব। শিল্পীর মৃত্যুর পর তাঁর বোন চিত্রা ঘোষ এবং তাঁর স্বামী আশিস ঘোষ এই পুজোর দায়িত্ব নেন।
আরও পড়ুন : দেবীর তেজে শান্ত হয়েছিল পাক সেনা, ফিরেছিল পাত পেড়ে ভোগ খেয়ে
এই পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল এখানে নতুন মূর্তি হয় না। প্রতিবছরই পুরনো মূর্তিকেই দেওয়া নতুন রূপ। তবে তার মধ্যেও থাকে অভিনত্ব। প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পুজোর আয়োজন করা হয়। কাঠের কারুকাজে সাজানো মণ্ডপ, মণ্ডেপ আঁকা বিভন্ন ধরনের নকশায় ধরা পড়েছে শিল্পের ছোঁয়া। মণ্ডপের সামনে রঙিন আলপনা।
শরতে দুর্গোৎসবের সঙ্গে আদিবাসি জনজাতির মানুষেরা ‘বেলবরণ’ উৎসবে মেতে ওঠেন। ফলে সোনাঝুরি উৎসব এক অন্যমাত্রা পায়। আদিবাসী এবং বাঙালি সম্প্রদায়ের মেলবন্ধনে লালমাটির দেশের এই পুজো পর্যটকদের কাছেও আকর্ষনীয়। ধামসা-মাদল, ঢাক পুজো ক’দিন মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। শুধু দৃষ্টি সুখ নয় মনের টানে এই পুজো দেখতে দূর দূর থেকে আসেন বহু মানুষ।