জম্মু-কাশ্মীরে হামলার দায় স্বীকার পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠনের, তদন্তে এনআইএ, ড্রোন উড়িয়ে তল্লাশি সেনার

জম্মু ও কাশ্মীরে জঙ্গিহানায় ১০ তীর্থযাত্রীর মৃত্যুর ঘটনার দায় স্বীকার করল পাকিস্তানি মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট বা টিআরএফ

Must read

প্রতিবেদন: জম্মু ও কাশ্মীরে জঙ্গিহানায় ১০ তীর্থযাত্রীর মৃত্যুর ঘটনার দায় স্বীকার করল পাকিস্তানি মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট বা টিআরএফ। লস্কর-ই তইবার ৩ জঙ্গিও এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ঘটনার তদন্তে নেমেছে এনআইএ। বিরোধীরা এই ঘটনার জন্য কেন্দ্রের গাফিলতিকেই দায়ী করেছে। তাদের অভিযোগ, ৩৭০ ধারা অবলুপ্তির পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে জঙ্গিরা। লক্ষণীয়, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই জম্মু-কাশ্মীরে নির্বাচন সেরে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। তার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। বেশ কয়েকটি সফল অপারেশনে পুলিশ এবং সেনাবাহিনী জঙ্গিদের চক্রান্ত ভেস্তে দিয়েছে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে এমন বড় জঙ্গিহানা নিঃসন্দেহে প্রবল চাপের মুখে ফেলে দিল কেন্দ্রকে।
মৃতদের পরিবারবর্গের জন্য এককালীন ১০ লক্ষ টাকা এবং আহতদের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে সাহায্য ঘোষণা করেছেন জম্মু-কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর।

আরও পড়ুন-আখের খেত থেকে উদ্ধার পুলিশকর্মীর ছেলের দেহ! ফের প্রশ্নের মুখে যোগীরাজ্যের আইনশৃঙ্খলা

রবিবার সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিট নাগাদ প্রধানমন্ত্রী পদে নরেন্দ্র মোদির শপথগ্রহণের কিছুক্ষণ আগেই রিয়াসি জেলার পনি এলাকার তেরিয়াথ গ্রামের কাছে পুণ্যার্থী-বোঝাই একটি বাসে হামলা চালায় সশস্ত্র জঙ্গিরা। বাসটি গড়িয়ে পড়ে খাদে। ওই অবস্থাতেই গুলিবৃষ্টি চালায় সন্ত্রাসবাদীরা। প্রথমে ৯ জনের মৃত্যুর খবর আসে। পরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০ হয়েছে বলে জানা যায়। জখমের সংখ্যা অন্তত ৩৩।
হামলাকারীদের কাউকেই এখনও ধরা সম্ভব হয়নি। রবিবার রাত থেকেই এলাকা ঘিরে ফেলে চিরুনি-তল্লাশি শুরু করেছে সেনাবাহিনী। সোমবার সকাল থেকে ড্রোন উড়িয়ে চলছে তল্লাশি। এখনও গ্রেফতারের কোনও খবর নেই। তবে তদন্তকারীদের বিশ্বাস, স্থানীয় সোর্সের সাহায্য নিয়েছে জঙ্গিরা। ঘটনাস্থলে এসেছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, রিয়াসি জেলার একটি মন্দিরের কাছে বাসে হামলা চালায় জঙ্গিরা। শিবখোরি মন্দির থেকে বৈষ্ণোদেবী মন্দিরের বেস ক্যাম্পে ফেরার সময়। জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা জঙ্গিরা গুলি ছুঁড়তে শুরু করলে চালক গুলিবিদ্ধ হয়ে ভারসাম্য হারান। বাসটি গড়িয়ে খাদে পড়ে যায়। ওই অবস্থাতেও গুলি চালাতে থাকে আক্রমণকারীরা। প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ অনুযায়ী, জঙ্গিরা গুলিবৃষ্টি থামাচ্ছে না দেখে অনেকে মরার ভান করে পড়ে থাকেন। মিনিট ২০ গুলি চালানোর পরে সকলেরই মৃত্যু হয়েছে ভেবে জঙ্গিরা জঙ্গলে গা ঢাকা দেয়। মৃতদের মধ্যে একটি ২ বছরের শিশু এবং তার মা আছে বলে জানা গিয়েছে। রয়েছে ১৪ বছরের এক কিশোরও। চেষ্টা চলছে শনাক্তকরণের। তবে বাসযাত্রীদের অধিকাংশই উত্তরপ্রদেশ এবং রাজস্থানের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু ঠিক কী কারণে এই হামলা? তদন্তকারীরা মূলত ২টি সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে। প্রথমত, সাম্প্রদায়িক উত্তেজনাকে উসকে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এই সুপরিকল্পিত হামলা। ভূস্বর্গের পর্যটনশিল্পের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রয়াসকে ধাক্কা দেওয়াও উদ্দেশ্য হতে পারে জঙ্গিদের। তবে পাকিস্তানের মদতে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি যে ভূস্বর্গে ক্রমাগত অস্থিরতা বৃদ্ধির অবিরত অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, এই ঘটনা তারই প্রমাণ।

Latest article