প্রতিবেদন: শুধু কাশ্মীরেই আর গুপ্তচরবৃত্তির জালবিস্তার সীমাবদ্ধ রাখছে না পাকিস্তান। পাঞ্জাব, হরিয়ানাতেও গুপ্তচর ছড়িয়ে দিচ্ছে পাকিস্তানের দুষ্টচক্র। আর সেই কাজে স্থানীয় অল্পবয়সী ছেলেদের পাশাপাশি এবার মহিলাদেরও কাজে লাগানো হচ্ছে। জানা গিয়েছে, সন্দেহ এড়াতে জনপ্রিয় ইউটিউবার থেকে বিধবা মহিলাদের দিয়ে সংগ্রহ করা হচ্ছিল ভারতীয় সেনার তথ্য। একাধিক রাজ্যের পুলিশের গোয়েন্দা অভিযানে এবার ভারতে বসে পাকিস্তানের চরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ছয় ভারতীয়কে। শুধুমাত্র দেশের পশ্চিম সীমান্ত নয়, উত্তর-পূর্বের অসম পুলিশও গ্রেফতার করেছে সাত পাক গোয়েন্দা সহকারীকে।
আরও পড়ুন-ইডেনের ফাইনাল নিয়ে এখনও আশাবাদী সৌরভ
পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে হরিয়ানার জনপ্রিয় ইউটিউবার জ্যোতি রানিকে গ্রেফতার করল হরিয়ানা পুলিশ। অভিযোগ, পাকিস্তানে গিয়ে ইউটিউব ভিডিও বানানোর টোপ দিয়ে জ্যোতির সঙ্গে বন্ধুত্ব করে পাকিস্তান হাই কমিশনের কর্মী এহসান-উর-রহিম ওরফে দানিশ নামে এক ব্যক্তি। ভারতে গুপ্তচর নিয়োগে বড় ভূমিকা ছিল এই দানিশের, দাবি গোয়েন্দাদের। পাকিস্তানে দু’বার গিয়েছিল এই ইউটিউবার জ্যোতি। সেখানেই পাকিস্তানি ইন্টেলিজেন্স অপারেটিভসের দুই কর্মীর সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্মে তাদের কাছে ভারতের বিভিন্ন তথ্য পাঠাত জ্যোতি, গোয়েন্দাদের জেরায় সে স্বীকার করেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এমনকী জেহাদিদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পাকিস্তান নিয়ে ইতিবাচক বার্তা দিয়ে ভিডিও বানিয়ে নিজের চ্যানেলে প্রচারও চালায় জ্যোতি। এর পাশাপাশি পাঞ্জাবের বাসিন্দা এক বিধবা মহিলাকেও বিয়ের টোপ দিয়ে পাক গুপ্তচর বানিয়ে ফেলে এই দানিশ। গুজালা নামে ওই মহিলাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার টাকা পাঠায় দানিশ। পরে আরও টাকা পাকিস্তানের গুপ্তচরদের অ্যাকাউন্ট থেকে গুজালাকে পাঠানোর প্রমাণও পেয়েছেন গোয়েন্দারা। আবার পরে সেই টাকাই গুজালা নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে ভাগে ভাগে বিভিন্ন পাকিস্তানি স্লিপার সেলের অ্যাকাউন্টে পাঠায়। তাকেও গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে পুলিশ। এদিকে খালসা কলেজের এক পড়ুয়া আস্থা মোদিকেও গ্রেফতার করেছে হরিয়ানা পুলিশ। গুরুত্বপূর্ণ পাতিয়ালা সেনা ছাউনির তথ্য পাকিস্তানের হাতে তুলে দিত এই কলেজ পড়ুয়া, দাবি গোয়েন্দাদের। তার মোবাইল থেকে পাওয়া সূত্র ধরে তদন্ত চালাচ্ছেন গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন-মুম্বই বিমানবন্দর ও তাজ হোটেল উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি ই-মেইল
মহিলাদের পাশাপাশি কমবয়সি কলেজ ছাত্রদের ভারতের তথ্য হাতাতে গুপ্তচরের কাজে লাগিয়েছিল পাক গুপ্তচর সংস্থাগুলি। দেবেন্দ্র সিং ধিলো নামে আরেক কলেজ পড়ুয়াকে গ্রেফতার করে এমনই তথ্য উঠে এসেছে গোয়েন্দাদের হাতে। জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করে পাকিস্তানে বেড়াতে যাওয়ার পরে সেনার অস্ত্রের ছবি পাক গুপ্তচরদের পাঠানোর কাজ করেছে। তার সঙ্গে আইএসআই-এর কর্মীদের যোগাযোগ ছিল বলে তদন্তে উঠে এসেছে। এছাড়াও ভারতে বসে পাকিস্তানকে তথ্য দিয়ে সাহায্য করার জন্য মালেরকোটলা থেকে ইয়ামিন ও নুহ থেকে আরমান নামে দু’জনকেও গ্রেফতার করা হয়েছে শনিবার। পাক গুপ্তচারদের টাকার আদানপ্রদান ও সিমকার্ড দিয়ে সাহায্য করত এই গুপ্তচার, উঠে এসেছে তদন্তে।
অন্যদিকে শনিবারই অসম পুলিশ দাবি করেছে, রাজ্যের গোয়েন্দা ও এসটিএফ সাতজন সন্দেহভাজনকে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে। তাদের বেআইনি সিমকার্ড ব্যবহারের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি অসম পুলিশের। এই সিমকার্ড দিয়ে জালিয়াতির পাশাপাশি দেশবিরোধী কাজ, তথ্যপাচারের কাজ চলত
বলে অভিযোগ।