অপরাজিতা জোয়ারদার, রায়গঞ্জ : তিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান। কিন্তু এলাকাবাসী সকলেই তাঁকে টোটোচালক সুখেনদা নামেই চেনেন। এমনই মাটির মানুষ ইটাহার ব্লকের সুরুন-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) সুখেন দেবশর্মা। পেশায় টোটোচালক। তবে ২০১৮ সালে সুরুন-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হিসেবে কাজ শুরু করেন। উপপ্রধান হয়েও জীবনযাত্রা একটুও পাল্টাননি সুখেন। দুই সন্তান, স্ত্রী ও মাকে নিয়ে সংসার। সংসার চালাতে এখনও তিনি সকাল ও বিকেলে নিয়মিত টোটো চালান। বেলুল গ্রামের সুখেন প্রতিদিন সকালে গ্রাম থেকে মাছ ও সবজি নিয়ে রায়গঞ্জের দেবীনগর বাজারে আসেন। এরপর টোটোতে যাত্রী নিয়ে যান রূপাহার বাজারে। সেখানে চা-বিস্কুট খেয়ে বেরিয়ে পড়েন ফের টোটো চালিয়ে জীবিকার সন্ধানে। কেউ অসুস্থ হলে নিজের টোটোতে ডাক্তারের কাছে বা হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার কাজ যেমন করেন, তেমনি গ্রামের কারও গ্রাম পঞ্চায়েত দফতরে কাজ থাকলে পৌঁছে দিয়ে নিজের কাজ সেরে আসেন। বাড়ি থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে টোটো চালিয়ে পৌঁছন গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে। সপ্তাহের সবদিন যেতে না পারলেও তিনদিন পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে উপপ্রধানের সব কর্তব্য সারেন সুখেন। কোনওদিন ৪০০, কোনওদিন ৩০০ টাকা রোজগার হয় তাঁর। তাতেই আরামে সংসার চালান। ২০১৮ তে সুরুন-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বেলুল থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) প্রতীকে জয়ী হন সুখেন। উপপ্রধান নির্বাচিত হন। পঞ্চায়েত প্রধান সুপ্রিয়া বেগম বলেন, ‘‘সুখেনবাবু নিয়মিত টোটো চালান। কারণ তাঁর অন্য কোনও আয় নেই। তাঁকে দেখে সকলের শিক্ষা নেওয়া উচিত।’’