প্রতিবেদন: বছরে ন্যূনতম ১০০ দিন সংসদ চালাতেই হবে। আগে থেকেই তৈরি করতে হবে সংসদীয় ক্যালেন্ডার, যেখানে অনেক আগে থেকেই জানা যাবে কবে, কীভাবে সংসদের অধিবেশন পরিচালিত হবে। আসন্ন বাজেট অধিবেশনের আগেই এই গুরুত্বপূর্ণ দাবি তুলল তৃণমূল কংগ্রেস৷
আরও পড়ুন-জালিয়াতি, ধৃত বিজেপি নেতা
দেশের সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রতি কোনওদিনই শ্রদ্ধাশীল নয় মোদি সরকার৷ বিগত দশ বছর ধরেই সংসদীয় গণতন্ত্রের অমর্যাদা করেছে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার৷ এই পরিস্থিতিতে এখন প্রায় রুটিন হয়ে গিয়েছে প্রতিটি সংসদীয় অধিবেশনের মেয়াদ কাটছাঁট করা এবং গুরুত্বপূর্ণ বিলগুলিতে জনগণের মতামতের তোয়াক্কা না করে তড়িঘড়ি আলোচনা ছাড়া সেগুলি পাশ করিয়ে দেওয়া৷ এই পদ্ধতিতে সংসদীয় গণতন্ত্রের অবক্ষয় মেনে নেওয়া হবে না উল্লেখ করে অবিলম্বে সংসদীয় ক্যালেন্ডার তৈরি এবং প্রকাশের দাবি তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন রবিবার এই প্রসঙ্গে বলেছেন, যদি স্কুল-কলেজগুলি আগে থেকেই তাদের ক্যালেন্ডার তৈরি করতে পারে, তাহলে সংসদ কেন পারবে না তাদের কার্যসূচি সম্পর্কিত ক্যালেন্ডার তৈরি করে আগাম প্রকাশ করতে? তাঁর কথায়, সংসদকে একটি গভীর, অন্ধকার প্রকোষ্ঠে পরিণত করছে মোদি সরকার৷ গণতন্ত্র-বিরোধী এইসব পদক্ষেপ বন্ধ করতে হবে৷ মোদি সরকার জনতার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে পালাতে পারবে না৷
কেন তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে সংসদীয় ক্যালেন্ডার তৈরির দাবি জানানো হচ্ছে, তার সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন দাবি করেন, লোকসভা ও রাজ্যসভার সদস্যরা শুধুমাত্র আইন প্রণয়নের জন্য নির্বাচিত হন না৷ সরকারের কাছে জবাবদিহি চাইতে, তাদের ক্রিয়াকলাপ যাচাই করতে এবং জাতীয় ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনার জন্য তাঁদের নির্বাচিত করা হয়ে থাকে৷ সংসদীয় ক্যালেন্ডার তৈরি করা হলে এই দায়িত্বগুলি আরও ভালভাবে পূরণ করা সম্ভব হবে৷
আরও পড়ুন-কেন পিএম কেয়ারস ফান্ড রিপোর্টেরআর্থিক বিবৃতি পেশ করছে না কেন্দ্র?
এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে অভিযোগ করা হয়, গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশের আগে জনতার মতামত সংগ্রহের জন্য যে ৩০ দিনের মেয়াদ রাখা বাধ্যতামূলক, সেই নীতি না মেনে, জনমত ছাড়াই সংসদে পাশ করানো হয়েছে ৫৪ শতাংশ বিল৷ এই অগণতান্ত্রিক পদ্ধতি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে, দাবি জানান তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন৷ বলেন, সংসদের অধিবেশনের বিজ্ঞপ্তি জারির দিন থেকে সংসদ শুরু হওয়ার মেয়াদও বাড়াতে হবে৷ আসন্ন বাজেট অধিবেশনের মাত্র ১৫ দিন আগে অধিবেশন শুরুর বিজ্ঞপ্তি জানানো হয়েছে৷ তাত্পর্যপূর্ণ হল, গত বছর সংসদের শীতকালীন অধিবেশনেই রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকড়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল বিরোধী শিবির৷ তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগেই নিয়ে আসা হয়েছিল এই অনাস্থা প্রস্তাব, যেখানে তৃণমূল সাংসদ সাগরিকা ঘোষের চিঠিতে স্বাক্ষর করেছিলেন বিরোধী শিবিরের তাবড় সাংসদরা৷ মোদি সরকারের ষড়যন্ত্রে এই অনাস্থা খারিজ হওয়ার পরে এবারের আসন্ন বাজেট অধিবেশনে আরও একবার ধনকড়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করার কথা ভাবছে বিরোধী শিবির৷ সূত্রের দাবি, গতবারের মতো এবারও বড় ভূমিকায় দেখা যেতে পারে তৃণমূল কংগ্রেসকে৷ রবিবার সেই আভাস দিয়েছেন ডেরেক।
এদিকে এবছর ৩১ জানুয়ারি শুরু হবে সংসদের বাজেট অধিবেশন, সাধারণ বাজেট পেশ হবে ১ ফেব্রুয়ারি৷ প্রথম পর্যায়ের সংসদীয় অধিবেশন চলবে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত৷