প্রতিবেদন: দৈহিক প্রতিবন্ধকতা নয়, ইচ্ছাশক্তিটাই শেষ কথা। নিজের ব্যতিক্রমী সাফল্য দিয়ে এই সত্যটাই তুলে ধরলেন রাজস্থানের সাড়া জাগানো আইএএস অফিসার আরতি ডোগরা। হ্যাঁ, জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই আরতি বুঝতে শিখেছিলেন, খর্বতার কারণে তাঁর দিকে বিদ্রুপের পাথর ছুঁড়ে আত্মতৃপ্তি লাভ করবে সমাজের একাংশ। পদে পদে বাধা পাবে নিষ্ঠুর প্রতিকূলতাকে পরাজিত করে তাঁর অগ্রগতি। তবুও দমে যাননি সাড়ে ৩ ফুট উচ্চতার আরতি। ভেঙেও পড়েননি। ভোগেননি হীনমন্যতায়। কারণ, তিনি নিশ্চিত ছিলেন, লক্ষ্য যদি স্থির থাকে, তাহলে তা যত দূরেই হোক, পৌঁছানো অসম্ভব নয়। নিজের লক্ষ্যে পৌঁছতে সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করেছিলেন আরতি। ২০০৬ সালে খর্বকায়তম আইএএস অফিসার হিসেবে কর্মজীবনে প্রবেশ করে প্রমাণ করে দিয়েছিলেন যোগ্যতা থাকলে বয়সের মতো উচ্চতাও একটা সংখ্যামাত্র। সেনা আধিকারিক বাবা এবং স্কুলশিক্ষিকা মায়ের মেয়ে আরতি এখন রাজস্থানের তথ্য প্রযুক্তি এবং যোগাযোগ দফতরের সচিব পদে কর্মরত।
আরও পড়ুন-প্রধানমন্ত্রীকে তোপ তৃণমূলের
কাজ করেছেন আজমেঢ়, বিকানের, যোধপুর এবং বুঁদির জেলাশাসক হিসেবে। নিজের অসাধারণ যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন। দক্ষতা প্রমাণ করেছেন যোধপুর বিদ্যুৎ বিতরণ নিগমের সচিব পদে। ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের সচিব এবং বিশেষ সচিব পদেও। কিন্তু সবকিছু ছাড়িয়ে গিয়েছে, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ভোটারদের পাশে দাঁড়াতে তাঁর বিশেষ উদ্যোগ। তাঁদের বুথে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছেন তিনি। তাঁর আমলেই আজমেঢ়ে বিশেষভাবে সক্ষম ভোটারদের ভোটদানে আগ্রহ বেড়েছে লক্ষণীয়ভাবে। রাজস্থানে প্রত্যন্ত গ্রামের বিশেষ সক্ষম ভোটাররা অনেক বেশি সংখ্যায় বুথমুখী হয়েছেন।
অথচ দেরাদুনে আরতির শৈশবকালে চিকিৎসকরা যখন বলেছিলেন, তাঁর উচ্চতা থেমে যাবে ৩ ফুট ২ ইঞ্চিতে তখন অনেকেই বাবা-মাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন দ্বিতীয় সন্তান নিতে। সত্যিই থেমে গিয়েছিল আরতির উচ্চতা, কিন্তু শুরু হয়েছিল তাঁর শিখরে ওঠার স্বপ্ন। বিরামহীন অনুশীলন প্রমাণ করেছিল, আটকে রাখা যায় না মেধাকে। মেধার উচ্চতার আলোয় হার মেনেছিল আরতির শারীরিক খর্বতা।