রাজবলহাট
জাঙ্গিপাড়ায় অবস্থিত রাজবলহাট। কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যারয়ের জন্মস্থান। একটি জনপ্রিয় পিকনিক স্পট (Picnic Spot)। ষোড়শ শতকে এটাই ছিল ভুরসুট রাজবংশের রাজধানী। এখানে আছে চতুর্ভুজা মৃন্ময়ীদেবী রাজবল্লভীর মন্দির। মূর্তিটির উচ্চতা ছয় ফুট। ১৭২৪-এ অপরূপ ভাস্কর্য শোভিত এই টেরাকোটার মন্দিরটি নির্মিত হয়েছিল। এছাড়াও এখানে আরও দুটি টেরাকোটার মন্দির আছে। সেই দুটি হল রাধাকান্ত মন্দির ও শ্রীধর দামোদর মন্দির। আটচালা-বিশিষ্ট এই দুটি মন্দির এখানকার অন্য তম দ্রষ্টব্যে। মন্দিরের আশপাশে আছে কয়েকটি বড় মাঠ ও পুকুর। শীতের নরম রোদ গায়ে মেখে জায়গা বেছে নিয়ে দলবেঁধে পিকনিক করা যায়। স্থানীয় বাজার বা হরিপাল থেকে কিনে নেওয়া যায় যাবতীয় যাবতীয় সামগ্রী। তারপর খোলা আকাশের নিচে রান্না এবং খাওয়া।
কীভাবে যাবেন?
ট্রেনে হাওড়া থেকে তারকেশ্বর বা হরিপাল লোকাল। নামতে হবে হরিপাল স্টেশনে। সেখান থেকে ১০ নম্বর রুটের বাস ধরে পৌঁছে যাওয়া যায় রাজবলহাট। টানা বাসেও যাওয়া যায়। হাওড়া ও ধর্মতলা থেকে সরাসরি বাস আছে। যেতে হবে ডোমজুড়, বড়গাছিয়া, জাঙ্গিপাড়া হয়ে। নিজেদের গাড়িতেও যাওয়া যায়।
গোবরডাঙা
পিকনিকের (Picnic Spot) আদর্শ জায়গা গোবরডাঙা। স্টেশনের কাছেই আছে সুন্দর স্পট কঙ্কণা। গোবরডাঙা স্টেশন রোড ধরে পূর্ব দিকে কয়েক কিলোমিটার এগোলেই ইছামতীর উপনদী যমুনার দেখা মেলে। যমুনা এখানে বারবার গতির দিক বদলে বানিয়ে তুলেছে অশ্বখুরাকৃতি হ্রদ। স্থানীয়রা বাঁওড় বলে। শীতকালে এই বাঁওড়ের পাশেই বসে পিকনিক। কঙ্কণায় কোনওরকম স্পট বুকিংয়ের সমস্যা্ নেই। পছন্দসই জায়গা বেছে নিলেই হল। জিনিসপত্র চাইলে গোবরডাঙা বাজার থেকেই কিনে নেওয়া যায়। রান্না এবং খাওয়ার ফাঁকে ঘুরে নেওয়া যায় আশপাশের গ্রাম। মাছের ভেড়ি, মাটির ঘর, জেলে নৌকায় সাজানো গ্রামীণ জনপদ মনের মধ্যে অদ্ভুত আনন্দের জন্ম দেবে। শীতের সময় উড়ে আসে পরিযায়ী পাখি। ভিড় করে বাঁওড়ের চারপাশে। ছবি তোলা যায়। ভেসে বেড়ানো যায় জেলেনৌকায় সওয়ারি হয়ে।
কীভাবে যাবেন?
শিয়ালদহ থেকে বনগাঁগামী ট্রেন। নামতে হবে গোবরডাঙা স্টেশনে। চাপতে হবে ভ্যা নরিকশায়। ১ কিলোমিটার দূরে মেদিয়াপথ গ্রাম। এখানেই রয়েছে পিকনিক স্পট। কলকাতা থেকে টানা গাড়িতেও যাওয়া যায়।
বাদু
মধ্যরমগ্রাম স্টেশনের কাছেই বাদু। পিকনিকের আদর্শ ঠিকানা। আছে অনেক স্পট। তারমধ্যে অন্যতম একান্ত আপন। এক বিঘা জমির উপর মনোরম পরিবেশে গড়ে ওঠা এই পিকনিক স্পটে রয়েছে আমোদপ্রমোদের নানাবিধ আয়োজন। ছোটদের খেলাধুলোর জন্যে আছে দোলনা-সহ নানা উপকরণ। রান্না এবং খেতে বসার জন্য এখানে আলাদা ব্যাবস্থাও রয়েছে। একসঙ্গে ১০০ জন পিকনিক করতে পারেন। একদিনে একটিমাত্র দলকেই অনুমতি দেওয়া হয়।
কীভাবে যাবেন?
শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে মধ্য১মগ্রাম। স্টেশনে নেমে বাদুগামী ভ্যা ন বা রিকশায় পৌঁছে যাওয়া যায় পিকনিক স্পটে। আছে বাসও। টানা গাড়িতেও যাওয়া যায়।
আরও পড়ুন- বড়দিনের উৎসব, সতর্ক প্রশাসন, ২৪ ঘণ্টাই সজাগ দৃষ্টি মুখ্যমন্ত্রীর
ডাবু
সুন্দরবনের মাতলা নদীর তীরে অবস্থিত ডাবু। অসাধারণ জায়গা। জনপ্রিয় পিকনিক স্পট (Picnic Spot)। এখানে পিকনিক করতে হলে সেচদফতরের অনুমতি নিতে হয়। পিকনিকের যাবতীয় সরঞ্জাম সঙ্গে নিয়ে যেতে হয়। রান্না-খাওয়ার ফাঁকে নৌকা নিয়ে ভেসে বেড়ানো যায় মাতলার বুকে। এখানে দর্শন পাওয়া যায় বেশ কিছু বিরল প্রজাতির পাখিরও। থাকার জন্য রয়েছে সেচদফতরের সুদৃশ্যদ বাংলো।
কীভাবে যাবেন?
শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখা থেকে ধরতে হবে ক্যা নিংগামী ট্রেন। সময় লাগবে ঘণ্টা দেড়েক। ক্যা নিং স্টেশন থেকে অটো বা সাইকেল রিকশায় মিনিট পনেরোর মধ্যে পৌঁছে যাওয়া যায় ডাবুতে। সড়কপথে গাড়িতে গড়িয়া-বারুইপুরের রাস্তা ধরে ক্যা নিং যাওয়া যায়।
অশোকনগর
অশোকনগরে আছে বেশকিছু পিকনিক স্পট। তারমধ্যে অন্যতম সংহতি পার্ক। ১০ বিঘে জমি আর জলাশয় নিয়ে গড়ে উঠেছে। চারপাশে রয়েছে নারকেল, সুপারি গাছ। এছাড়াও রয়েছে ফুলের বাগান। জলাশয়ে জলবিহারের জন্যস আছে বোটিংয়ের ব্যবস্থা। আনন্দ দেবে রোপওয়ে, ভুতুড়ে বৃষ্টি, ওয়ান্ডার হাউস, কৃত্রিম পাহাড়ি বনভূমি, ঝরনা। শিশুদের মনোরঞ্জনের জন্য রয়েছে কার রাইডিং, টয়ট্রেন, মিকি মাউসের মতো মজাদার আইটেম। পার্কের ভিতরেই রয়েছে পিকনিকের ব্যকবস্থা। রান্নার যাবতীয় সরঞ্জাম পাওয়া যায় অশোকনগর স্টেশন রোড বাজারে। রান্না-খাওয়ার ফাঁকে সময় বের করে ভ্যা ন রিকশায় চেপে ঘুরে আসা যায় কাঠিয়াবাবার আশ্রম। সেইসঙ্গে দেখে নেওয়া যায় বাবা লোকনাথের জন্মভিটে চাকলাধাম।
কীভাবে যাবেন?
ট্রেনে শিয়ালদহ থেকে বনগাঁ বা হাবড়া লোকালে চেপে নামতে হবে অশোকনগর স্টেশনে। সেখান থেকে অটো, ভ্যা নরিকশা বা রিকশায় চেপে পিকনিক স্পটে যাওয়া যায়। টানা গাড়িতে গেলে উত্তর বারাসত হয়ে যশোর রোড ধরে অশোকনগর বিল্ডিং মোড় পেরিয়ে পৌঁছতে হবে সংহতি পার্কে।