‘জাগোবাংলা’য় (Jago Bangla) শুরু হয়েছে নতুন সিরিজ— ‘দিনের কবিতা’ (poem of the day)। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) কবিতাবিতান থেকে একেকদিন এক-একটি কবিতা নির্বাচন করে ছাপা হবে দিনের কবিতা। সমকালীন দিনে যার জন্ম, চিরদিনের জন্য যার যাত্রা, তা-ই আমাদের দিনের কবিতা।
আরও পড়ুন-ও ডাক্তার, সাত ঘণ্টাও কাজ করবেন না!
দর
সবে ঘুমটা ঘুম ঘুম করে
আস্তে আস্তে ঘুমের দেশে নিয়ে যাচ্ছিলো
হঠাৎ একটা বিশ্রী আরশোলার আগমন
একেবারে মুখমণ্ডলের ওপরে
হতচকিত নিদ্রা ধাক্কা খেল।
ঘুমটা একেবারে চটপট করে সরে গেলো,
মাথাটা কেমন কিচির-মিচির করতে শুরু করলো
আর চুলগুলোর চারপাশটা
চুলকোতে চুলকোতে চমকাতে শুরু করলো।
নানারকম প্রশ্ন ও উত্তর ঘুরপাক করতে লাগলো।
একটা থেকে আর একটা
এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত মনের মধ্যে
লুকোচুরি করতে শুরু করলো
প্রথম প্রশ্নটা ভাবলো
ভাবতে লাগলাম
প্রশ্নটা ছুড়ে দিলো,
বাজার করতে যাও তো তোমরা দোকানে দোকানে
দরদাম করে জিনিসও কেনো
একবারও কি ভাবো যে
আলুর দোকানে, সবজির দোকানে
মাছের দোকানে, আনাজের দোকানে দর করো
কত দাম? দাম কমাও
কত কমাবো? এই ১৫ টাকা নয়—
৮ টাকায় দাও।
দরকষাকষি চলতেই থাকে—
ফলও ফলে; কোথাও দু’টাকা কমে
কোথাও বা ১ টাকা কমে
ভাবো তোমরা দরকষাকষি করে
কত সাশ্রয় করলে।
দ্বিতীয় প্রশ্ন—জামাকাপড় কিনতে গিয়ে
দরদাম করো, অনেক সময় দাম বেশি বলে
দরকষাকষি করে তাও কমাও
কিন্তু বড় জায়গায় যাও ঘুরতে ঘুরতে
সেখানে, যেখানে দরকষাকষির জায়গা নেই।
কত দাম? লেখা আছে—
সাজানো-গোছানো বাহার সাজানো
কৈফিয়ত কিন্তু চাও না।
১০ টাকার জিনিস ১০০ টাকায় কেনো
উত্তর কিন্তু চাও না।
আলুপটলের দাম করো
কিন্তু সোনা-হীরে-মুক্ত যখন কিনতে যাও
তখন তার তো দাম কষাকষি করো না
তবে? পাঁচ/দশের তফাত-এর মধ্যে
যত দরকষাকষি।
যেখানে লক্ষ হাজার দাম
সেখানে তো এক টাকা কমাতেও বলো না
তবে?
আমরা কি দেখতে খারাপ?
না তোমাদের মনের মাঝারে
একাদশীর জলসাঘর যে
তুচ্ছ জিনিস নিয়ে ভাবো
আর বড় জিনিস হলে
তা তো পালঙ্কের আয়না
তাই তাদের জন্য না-না
কী তোমাদের আজব ভাবনা!
প্রশ্ন ও উত্তর দিয়েই দিলাম
ভাবো তো, ভাবনাটার গুরুত্ব আছে কিনা?