মানস দাস, মালদহ : দরজা খুলুন। দরজার বাইরে পুলিশ দেখে ভয় পেয়েছিলেন মালদহের কোভিড আক্রান্ত এক পরিবার। তবে নিমেষে সেই ভয় বদলে গেল শ্রদ্ধায়। বাড়ির প্রতিটি সদস্যের খোঁজ নিলেন পুলিশ কর্তারা। ব্যাগভর্তি খাবার, স্যানিটাইজার, মাস্ক তুলে দিলেন এক সদস্যের হাতে। যাওয়ার আগে বললেন, সব সময় পাশে আছি। চিন্তা করবেন না, সুস্থ থাকুন। হ্যাঁ, এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হচ্ছেন মালদহ (Malda) জেলার সমস্ত থানা এলাকার কোভিড আক্রান্তরা। গাড়িভর্তি খাবার নিয়ে জেলার পুলিশকর্তারা বেরিয়ে পড়ছেন নিজের নিজের এলাকায় কোভিড আক্রান্তদের বাড়ি। পিস্তল, লাঠির বদলে হাতে থাকছে কোভিড আক্রান্তদের নাম ও ঠিকানার পূর্ণাঙ্গ তালিকা। কখনও দিবালোকে, আবার কখনও নিশিরাতে কোভিড আক্রান্তদের বাড়িতে কড়া নাড়ছে পুলিশ।
আরও পড়ুন – রূপশ্রী প্রকল্পে ১২ লক্ষ বিয়ে
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশকে কোভিড আক্রান্তদের পাশে থাকার নির্দেশ দেওয়ার পর জেলা পুলিশকর্তারা তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করছেন। পুলিশের গতানুগতিক কাজের বাইরে এই মানবিক কাজ জেলা জুড়ে প্রশংসিত হয়েছে। খাবারের প্যাকেট বিতরণ করেই ক্ষান্ত থাকছেন না পুলিশ কর্তারা। পাশাপাশি চালাচ্ছেন এলাকার কোভিড সম্পর্কে মানুষজনকে সচেতন করার কাজ। বিতরণ করছেন মাস্ক, স্যানিটাইজার। পুলিশের এহেন উদ্যোগের সাক্ষী থেকেছেন মালদহ (Malda) জেলার বামনগোলা ব্লকের পলাশ সর্দার, প্রমীলা ঘোষ, সজল সরকার-সহ অন্য কোভিড আক্রান্তরা।
বামনগোলা থানার আইসি জয়দীপ চক্রবর্তী বলেন, কোভিড আক্রান্তদের বাড়িতে খাবারের প্যাকেট নিয়ে যাচ্ছি। এ-সব কাজ করতে খুব ভাল লাগছে। শুধু বামনগোলা ব্লক নয়, জেলার ১৬টি থানা এলাকার কোভিড আক্রান্তদের প্রত্যেকের বাড়িতেই খাবারের প্যাকেট নিয়ে হাজির হয়ে যাচ্ছেন পুলিশকর্তারা। কোভিড আক্রান্ত সজল সরকার জানান, পুলিশ যোগাযোগ করে খাবারের প্যাকেট, ফল দেওয়ার পর শরীরের খোঁজ নিলেন। বিশ্রাম করুন, সুস্থ হয়ে যাবেন। ঘাবড়াবেন না। আমরা পাশে আছি। পুলিশের এ-সব কথা শুনেই মন-শরীর চাঙ্গা হয়ে গেল। মালদহ জেলা পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি জানান, জনসংযোগের পাশাপাশি পুলিশের উপর মানুষের আস্থা বাড়ছে। জেলার প্রতিটি থানা এলাকায় এই কর্মসূচি চলছে। কোভিড আক্রান্তদের শুকনো খাবার ও ফল দেওয়া হচ্ছে।