খোদ পুলিশ সুপারের একটি ফোনের কল রেকর্ডেই ধরা পড়ে গেল ত্রিপুরা পুলিশের নির্লজ্জ মিথ্যাচারের নাটক। খোয়াই থানায় বসে জেলার পুলিশ সুপারের ফোন কলের সেই রেকর্ড আদালতে পেশ করার কথা বলতেই চুপসে গেল বিজেপির পুলিশ। তৃণমূল যুব নেতাদের গ্রেফতারের পিছনে ত্রিপুরার বিজেপি আর পুলিশের গড়াপেটা খেলাটাও বেআব্রু করে দিল ওই একটি ফোনকলের রেকর্ডার।
আরও পড়ুন-ত্রিপুরা : কোর্ট থেকে নিয়ে যাওয়ার মুখে আক্রান্তদের ফের আক্রমণের ছক কষছে বিজেপি
কী হয়েছিল এদিন? ধৃত তৃণমূল কর্মীদের গ্রেফতারির প্রতিবাদে ও মুক্তির দাবিতে কলকাতা থেকে আগরতলা নেমেই খোয়াই থানায় যান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন বাংলার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, সাংসদ দোলা সেন, তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। বেআইনি গ্রেফতারির প্রতিবাদে পুলিশের সঙ্গে তুমুল তর্ক শুরু হয় নেতৃত্বের। সেই সময় অভিষেক উপস্থিত অ্যাডিশনাল এসপিকে ফোন করে চ্যালেঞ্জ করেন, আপনারা যে বেআইনিভাবে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা মামলায় আমাদের কর্মীদের ফাঁসিয়েছেন তার প্রমাণ আমার ফোনেই আছে। পুলিশ সুপারের ফোন কলের রেকর্ডসুদ্ধ আমার ফোনটি প্রয়োজনে আমি আদালতে পেশ করব। দেখি আপনারা কদ্দূর যেতে পারেন! অভিষেকের এই তুরুপের তাস প্রকাশ্যে আসায় দিশেহারা হয়ে যায় পুলিশ। স্বঃতপ্রণোদিত মামলা করার পিছনে যে বিশেষ সক্রিয়তা ছিল তা মেনে অবশেষে সুর নরম করে তারা।
আরও পড়ুন-ইস্যু ত্রিপুরা : তৃণমূল কংগ্রেস সোমে ‘ঝড়’ তুলবে সংসদে
ঘটনা হল, শনিবার রাতে আক্রান্ত যুবনেতাদের এসকর্ট করে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ত্রিপুরা পুলিশ। পুলিশের কথা মেনে যুবনেতারা তাঁদের সঙ্গে যেতে রাজি হন। কিন্তু রাতে হঠাৎ দেখা যায় যে পথ ধরে তাঁদের গন্তব্যে ফেরার কথা, সেখান দিয়ে না গিয়ে হঠাৎ অন্য রুট ধরেছে পুলিশ। আর আশ্চর্যজনকভাবে সেই রুটে আগে থেকেই বিজেপি গুন্ডারা রাস্তা আটকে দাঁড়িয়ে ছিল। বোঝা যায়, বিজেপি কর্মীদের যে জমায়েত রয়েছে তা জেনেবুঝেই নির্দিষ্ট রুট বদলে ওই রাস্তায় তৃণমূল কর্মীদের নিয়ে আসে পুলিশ। শনিবার রাতে এই ঘটনা জানামাত্র জেলার পুলিশ সুপারকে ফোন করেন অভিষেক। এসপি বলেন, আপনি চিন্তা করবেন না, আমি গোটা বিষয়টা মনিটর করছি, কোনও সমস্যা হবে না। পরে দেখা যায়, সকালে দলীয় কর্মীদের থানায় এনে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপরেই রবিবার অকুস্থলে গিয়ে এসপির বক্তব্য প্রকাশ্যে এনে পুলিশি ষড়যন্ত্রের পর্দা ফাঁস করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।