মৌসুমী দাস পাত্র, নদিয়া: রবিবার শান্তিপুরের জগদ্বিখ্যাত ভাঙা রাসে প্রায় ১০০টি শোভাযাত্রা বের হল। অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকাতে আঁটসাঁট নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে পুলিশ ও প্রশাসন। এই উৎসব কমবেশি পাঁচশো বছরের প্রাচীন। শহরে এখন প্রায় ৩০টি বিগ্রহবাড়ির মধ্যে সুপরিচিত বড় গোস্বামী, মেজ গোস্বামী, ছোট গোস্বামী, মদন গোস্বামী, বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী বাড়ির রাস। ভাঙা রাসে আড়ম্বরের সঙ্গে শোভাযাত্রা করেন এঁরা। এছাড়াও ছোট-বড় অন্তত খান পঞ্চাশেক বারোয়ারিও অংশ নেয় রাসের শোভাযাত্রায়।
আরও পড়ুন-রাসে শতাব্দীপ্রাচীন ব্যতিক্রমী রক্ষাকালী পুজো জিয়াগঞ্জে
এর মাধ্যমেই উৎসব মরশুমের ইতি পড়ে শান্তিপুরে। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তো বটেই, এমনকী রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকেও মানুষ জড়ো হয়েছেন রাস দেখতে। ভিড় নিয়ন্ত্রণে ছিল কঠোর পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। রানাঘাট পুলিশ জেলা সূত্রে জানা যায়, সব মিলিয়ে প্রায় এক হাজার পুলিশকর্মী ও সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হয়েছে ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তার কাজে। এছাড়াও শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে সিসি টিভি বসানো হয়েছে। ড্রোন উড়িয়েও শোভাযাত্রার উপর নজরদারি চালানো হয়। স্বয়ং পুলিশ জেলার এসপি কুমার সানি রাজের তত্ত্বাবধানে ছিল পুরো নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আনুমানিক প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগে বড় গোস্বামী বাড়ির বিগ্রহ রাধারমনের সঙ্গে শ্রীমতী বিগ্রহের মিলন বা বিবাহ হয়। রাসপূর্ণিমা তিথিতে তাঁদের সেই বিবাহ কার্যত উৎসবের রূপ নেয়। সমস্ত নগরবাসীকে বিগ্রহ দর্শনের সুযোগ করে দিতেই রাসপূর্ণিমার একদিন বাদে শহর পরিক্রমার উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেই থেকেই শান্তিপুরে এই ভাঙা রাস বা শোভাযাত্রার রীতি চালু।