প্রতিবেদন: নিম্নবিত্তদের ঘাড়ে বন্দুক রেখেই গোটা দেশের অর্থনীতি চলছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা অক্সফ্যামের রিপোর্টে তা সুস্পষ্ট। ‘সার্ভাইভাল অফ দ্য রিচেস্ট: দ্য ইন্ডিয়া স্টোরি’ শীর্ষক সমীক্ষায় অক্সফ্যাম দাবি করেছে, দেশের ৮০ শতাংশ আর্থিক ক্ষমতা যাঁদের হাতে, তাঁরা মাত্র ৩-৪ শতাংশ জিএসটি দিচ্ছেন দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে। এমনকী করোনা পরিস্থিতিতে চরম আর্থিক বৈষম্য তৈরি হওয়ার পরেও এর পরিবর্তনের দিকে নজর দেয়নি মোদি সরকার।
আরও পড়ুন-ভোটের মুখে শিন্ডের দলে গৌরী লঙ্কেশ খুনের মূল অভিযুক্ত, দুষ্কৃতীদের পাশে বিজেপি জোট
আন্তর্জাতিক সংস্থা অক্সফ্যামের দাবি, দেশের ৫০ শতাংশ গরিব মানুষ জিএসটি-র মাধ্যমে দেশের ভাঁড়ারে দিচ্ছেন দুই-তৃতীয়াংশ। যা শতাংশের হিসাবে ৬৪.৩ শতাংশ। দুঃখের বিষয়, বিভিন্ন পণ্য থেকে পরিষেবার মাধ্যমে সবথেকে বেশি জিএসটি দেয় দেশের সবথেকে নিম্নবিত্ত ৫০ শতাংশ নাগরিক। যাঁদের হাতে রয়েছে দেশের সম্পদের মাত্র ৪০.৬ শতাংশ। এমনকী মধ্যবিত্তের থেকেও তাঁদের অবদান বেশি।
ব্রিটিশ সংস্থা অক্সফ্যাম ২১টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সম্মিলিত একটি সংস্থা। মূলত দারিদ্র দূরীকরণ ও আর্থিক সাম্য প্রতিষ্ঠায় কাজ করে এই সংস্থা। অক্সফ্যামের রিপোর্টে দাবি, যেখানে দুই-তৃতীয়াংশ জিএসটি বহন করে দেশের দরিদ্র শ্রেণি, সেখানে মধ্যবিত্ত শ্রেণি জিএসটি-র মাধ্যমে ৪০ শতাংশ তুলে দেয় সরকারের ঝুলিতে। তবে সবথেকে হাস্যকর পরিস্থিতিতে দেশের সবথেকে অর্থবান ১০ শতাংশ, যাঁরা জিএসটির মাধ্যমে সরকারের ভাঁড়ারে দেয় মাত্র ৩-৪ শতাংশ। দেশের সম্পদের ৮০ শতাংশের বেশি ধারণ করছে বিত্তবান ১০ শতাংশ। অথচ মোদি সরকারের কর ব্যবস্থার এমন কাঠামো যে তাঁদের উপর থেকে করের বোঝা তুলে নিয়ে চাপানো হয়েছে দরিদ্র শ্রেণির উপর। অক্সফ্যামের রিপোর্টে দাবি, দরিদ্র শ্রেণির মানুষ ভারতের কর কাঠামোর কারণে পরোক্ষ কর জিএসটির মাধ্যমে দিতে বাধ্য। ২০২১-২২ সালে জিএসটির মাধ্যমে ভারত সরকার যেখানে ১৪.৭ লক্ষ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল। সেই অনুপাতে ২০২২-২৩ সালে সেই সংগ্রহ ১৮ লক্ষ কোটি টাকা হওয়ার কথা। কিন্তু ধনবান শ্রেণির উপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কর কম থাকায় সেই উপার্জন থেকেও বঞ্চিত হয়েছে দেশ, দাবি সমীক্ষায়।