ডিভিসি (DVC) থেকে রাজ্যের প্রতিনিধি বিদ্যুৎ সচিব শান্তনু বসু পদত্যাগ করলেন। বেলাগাম জল ছাড়ার প্রতিবাদে রাজ্যের প্রতিনিধির পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন তিনি। আজ ডিভিসির অনিয়ন্ত্রিত জল ছাড়ার জন্য প্লাবিত রাজ্যের বহু অংশ। এরই প্রতিবাদ জানিয়ে ডিভিসি-র চেয়ারম্যানকে পদত্যাগপত্র দিলেন রাজ্যের প্রতিনিধি। মুখ্যমন্ত্রী ডিভিসি-র সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করার বার্তা দেওয়ার পরেই পদত্যাগ করলেন তিনি। ডিভিসি পরিচালিত মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে ৫ লক্ষ কিউসেকের বেশি জল ছাড়ার ফলে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এর ফলে রীতিমত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও বীরভূম জেলার মানুষ। জানা গিয়েছে, রাজ্যের সেচ ও জলপথ দফতরের মুখ্য ইঞ্জিনিয়ারও কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বিতীয় চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন যে প্রতিবাদস্বরূপ তিনি রাজ্যের প্রতিনিধি সরিয়ে নেবেন। সেই পথ অনুসরণ করেই পরপর পদত্যাগ করলেন রাজ্যের প্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন-”আমি ডিভিসির কমিটি থেকে আমার প্রতিনিধি তুলে নিচ্ছি” প্রধানমন্ত্রীকে ফের চিঠি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
কয়েকদিন ধরেই ডিভিসির আচরণের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডিভিসির সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করার হুঁশিয়ারি দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফের চিঠি দিলেন। গত ২০শে সেপ্টেম্বর রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ডিভিসির উপর ক্ষোভ উগরে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় জল শক্তি মন্ত্রকের তরফে চিঠির জবাব এসেছিল। জল শক্তি মন্ত্রী সিআর পাতিল জানান রাজ্যের সম্মতি নিয়ে ডিভিসি জল ছাড়ে মাইথন এবং পাঞ্চেত থেকে। কিন্তু কেন্দ্রের বক্তব্য যে সঠিক নয় সেই কথাই জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। অনেক সময়ে রাজ্যের সম্মতি ছাড়া জল ছাড়া হয় বলেই তিনি লেখেন।
আরও পড়ুন-দিল্লি-কাণ্ডের পুনরাবৃত্তি বেঙ্গালুরুতে, ৩০ খণ্ড তরুণীর দেহ উদ্ধার
মুখ্যমন্ত্রী এদিন চিঠিতে বলেন, ‘‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি আড়াই লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ার কোন প্রয়োজন ছিল না। এটা না ছাড়লে দক্ষিণবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ হত না। তাই আমি মনে করি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যে বলেছেন বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য সবরকম চেষ্টা করা হয়েছিল, সেটা পুরোপুরি সঠিক নয়। জলাধার নিয়ন্ত্রণকারীরা ঠিক মতো কাজ করতে পারেননি। এই মুহূর্তে মাইথন এবং পাঞ্চেতে সংস্কারের কাজ চলছে। শেষ হয়নি এখনও। আমি ডিভিসির কমিটি থেকে আমার প্রতিনিধি তুলে নিচ্ছি।’’