প্রতিবেদন : তৃণমূলই বিপুল ভাবে জিতছে। নির্বাচনী সমীক্ষায় কান দেবেন না। এসবই দর্শক ধরার খেলা। এর সঙ্গে জনমতের কোনও সম্পর্ক নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াই, কেন্দ্রের বঞ্চনা দেখে নিজেদের অভিজ্ঞতায় সিদ্ধান্ত নিন। এই ভাষাতেই এদিন তথাকথিত নির্বাচনী সমীক্ষাকে তোপ দাগল তৃণমূল। শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ নির্বাচনী সমীক্ষাগুলিকে একহাত নিয়ে বলেন, ভোট আসার সঙ্গে সঙ্গে কিছু সমীক্ষা দেখা যাচ্ছে। আমরা খুব স্পষ্ট ভাবে বলছি, যে সমস্ত সমীক্ষা প্রকাশিত হচ্ছে, তা দেখার পর আমরা জনগণের ওপর পূ্র্ণ আস্থা রাখছি। একুশের নির্বাচনের আগে গেল গেল রব উঠেছিল। তৃণমূলকে দুর্বল দেখিয়ে অন্য দলকে এগিয়ে রাখা হয়েছিল সমীক্ষায়। তার নিট রেজাল্ট তৃণমূল দুশোর বেশি আসন পেয়ে ক্ষমতায় এসেছে। সমীক্ষার ইতিহাসে বারবার দেখা গিয়েছে তা জনমতের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়নি। অর্থাৎ সমীক্ষা ভুল বলে প্রমাণিত হয়েছে। ফলে আমরা মানুষকে বলব নিজেদের অভিজ্ঞতা দেখে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াই, কেন্দ্রের বৈষম্য, কেন্দ্রের বাংলা-বিরোধী চক্রান্ত, আপনাদের জীবনের ভাল থাকা, শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারই ভরসা। এই অনুভূতির ওপর দাঁড়িয়ে কোনও সমীক্ষায় প্রভাবিত হবেন না। তৃণমূল বিপুলভাবে জিততে চলেছে। এবার ৩০ থেকে ৩৫টি সিট তৃণমূল পাবে। ওটা ৩৬, ৩৭ অথবা ৩৮-এ চলে যায় যাতে নেতৃত্ব সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করছেন। মানুষের বিপুল সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। ফলে এইসব সমীক্ষার দিকে তাকাবেন না, নিজেদের সিদ্ধান্তে থাকুন। এমনই সব সমীক্ষা, একবার বলছে এ এগিয়ে, ও পিছিয়ে। অত শতাংশ ভোট সুইং হলে ফলাফল উল্টে যেতে পারে। ফলে এসব দর্শক ধরার খেলার মধ্যে ঢুকবেন না। বাংলার মানুষ তৃণমূলের সঙ্গে আছে। তৃণমূল বাংলার মানুষের সঙ্গে আছে। তৃণমূল জিতছে, এসবে প্রভাবিত হবেন না।
আরও পড়ুন-বিজেপি প্রার্থীকে ঘিরে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন দলের সক্রিয় কর্মীরাই
সমীক্ষার পাশাপাশি এদিন এক তৃণমূল কর্মীকে নিগ্রহ করার জন্য প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছে তৃণমূল। কুণাল বলেন, বিজেপির পোষ্যপুত্র প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি যেভাবে প্রকাশ্যে এক তৃণমূল কর্মীর গায়ে হাত তুলেছেন আমরা তার তীব্র নিন্দা করছি। রাজ্য কংগ্রেস সভাপতির এই আচরণ প্রমাণ করে দিচ্ছে তাঁরা কোন সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করেন। তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছেন, দিশাহীন জায়গায় আছেন। সাধারণ তৃণমূল কর্মীদের ওপর যে আক্রোশ তিনি দেখিয়েছেন, এর জন্য তাঁর উচিত ক্ষমা চাওয়া ও দুঃখপ্রকাশ করা।
এদিন কমিশনকেও তোপ দাগেন কুণাল। প্রশ্ন তোলেন, নির্বাচন কমিশন কি বিজেপির কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে? তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগের পরও কেন এনআইএ-র ডিরেক্টরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হল না? কোথায় বিজেপি নেতাদের মানহানি মামলার নোটিশ? প্রশ্ন তোলেন তিনি। কিছুদিন আগে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তথ্য দিয়ে অভিযোগ করেছিলেন, এনআইএ-র সুপারের বাড়িতে রাতের অন্ধকারে বিজেপি নেতারা যাচ্ছেন। গোপন মিটিং হচ্ছে। তাঁদের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী ধরপাকড় চলছে। এনআইএ কর্তা ধনরাম সিংয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি। অভিযোগের পর শোনা গিয়েছিল বিজেপি নেতারা মানহানির মামলা করবেন। তিনি বলেন, অভিষেকের অভিযোগ যদি মিথ্যে হয় তাহলে মানহানির নোটিশ দিন বিজেপি নেতা। আর অভিযোগ যদি সত্যি হয় তাহলে ব্যবস্থা নিক কমিশন। কিন্তু এতদিন কেটে গেলেও কোনওটাই হল না।