লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকায় পুজোর প্রস্তুতি ধুর্পা গ্রামের প্রমীলাদের

মেঠোপথ ধরে এক সময় এ গ্রাম থেকে ও গ্রামে ছুটে যেতে হত দশভুজার চরণে অঞ্জলি নিবেদনের উদ্দেশ্যে।

Must read

তুহিনশুভ্র আগুয়ান, তমলুক: মেঠোপথ ধরে এক সময় এ গ্রাম থেকে ও গ্রামে ছুটে যেতে হত দশভুজার চরণে অঞ্জলি নিবেদনের উদ্দেশ্যে। নিজেদের গ্রামে মাতৃশক্তির আরাধনা যেন স্বপ্নই ছিল শম্পা, পিংকি, নমিতাদের কাছে। আজ সেই স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত। রাজ্য সরকারের লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকায় নিজেদের গ্রামেই দুর্গাপুজো করছেন ধুর্পা গ্রামের প্রমিলারা। ফলে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক থানার শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের এই গ্রামের প্রমিলাদের মনে। এখন তাঁদের গ্রামেও জ্বলে রংবাহারি আলো, ঢাকের বাদ্যিতে ভোরে ওঠে গোটা গ্রাম। ধুপ-ধূনোর গন্ধে ম ম করে চারপাশ। সন্ধিপুজোর মহামন্ত্রে জাগ্রত হয় আধ্যাত্মিক শক্তি। তাই রাতদিন এক করে পুজোর প্রস্তুতিতে মেতেছেন গ্রামের মেয়েরা।

আরও পড়ুন-বিল না মেটালেও দেহ আটকে রাখা যাবে না, সাফ নির্দেশ স্বাস্থ্য কমিশনের

রাজ্য সরকার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প চালু করায় বুকে সাহস পেয়েছেন তাঁরা। ২০২৩ থেকেই শুরু তাঁদের এই মাতৃশক্তি আরাধনা। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা জমিয়ে পুজোর যাবতীয় আয়োজন হয় মাতৃশক্তি পুজো কমিটির নামে। গোড়ার দিকে ৬০-৭০ জন সদস্যা থাকলেও বর্তমানে তা ১০০ ছুঁইছুঁই। ঘরসংসার সামলে পুজোর প্রস্তুতিতে নিজেরাই সর্বেসর্বা। প্রত্যেকে যে যার জমানো লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা দেন পুজো ফান্ডে। তা দিয়েই বাঁশের কাঠামোয় রঙিন কাপড়ে তৈরি হয় প্যান্ডেল। তৈরি হয় মহামায়ার মূর্তি। নিজেরাই বিকেলে বেরিয়ে পড়েন চাঁদা তুলতে। তাঁদের কাছে এই উৎসব যেন শক্তি ও জাগরণের এক প্রতীক। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার পূজো নিয়ে মিটিং হয়ে গিয়েছে। প্যান্ডেল তৈরির কাজ শুরু হয়েছে প্রায় এক মাস আগে। প্রতিমা তৈরি চলছে জোরকদমে। লাইট থেকে মাইক সব বুকিং সারা। এখন শুধু দেবীর আগমনের অপেক্ষায় ধুর্পা গ্রামের প্রমীলারা। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার আজ তাঁদের কাছে আনন্দ উৎসবের অন্যতম সম্বল ও শক্তি হয়ে উঠেছে। পুজো কমিটির সম্পাদিকা শম্পা জানা বলেন, আগে ভাবতাম আমাদের গ্রামে কি কোনওদিন পুজো হবে না! এখন সেই ভাবনা বাস্তবে রূপায়িত। আমরা সকলেই যে যার লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা জমিয়ে এই পুজো করি। গ্রামের সকলে মেতে ওঠেন এই পুজোয়।

Latest article