প্রতিবেদন : মা, কাকিমা ও বোনের সঙ্গে তাঁকেও খাওয়ানো হয়েছিল বিষ-পায়েস। কিন্তু নিয়মিত যোগব্যায়াম ও শরীরচর্চার জেরে তাঁর শরীরে বিষক্রিয়ার বিশেষ প্রভাব পড়েনি। তাই দেখে বাবার সামনেই কাকা প্রসূন মুখে বালিশ চাপা দিয়েও খুনের চেষ্টা করে। কিন্তু তাতেও কৌশলে নিঃশ্বাস চেপে রেখে সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখ নিজেকে রক্ষা করে সে। বৃহস্পতিবার ট্যাংরা-কাণ্ডে এমনই বিস্ফোরক বয়ান দিয়েছে নাবালক প্রতীপ দে। এদিন এনআরএস হাসপাতালে প্রতীপের সঙ্গে দেখা করেন শিশু সুরক্ষা কমিশনের দুই সদস্যের প্রতিনিধি দল। তদন্তকারী আধিকারিকদের উপস্থিতিতে প্রতীপের সঙ্গে কথা বলেন কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী। সেখানেই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছে প্রতীপ।
আরও পড়ুন-দ্বারোদ্ঘাটনের আগের দিন হবে যজ্ঞ
পুলিশ ও শিশু সুরক্ষা কমিশনের কাছে প্রতীপের দাবি, নিয়মিত শরীরচর্চা ও যোগব্যায়াম করত সে। তাই বিষ মেশানো পায়েস খেয়েও শরীরে খুব বেশি ঝিমুনির ভাব আসেনি। স্রেফ মরার ভান করেছিল! তাও মৃত্যু নিশ্চিত করতে কাকা প্রসূন তাঁর মুখে বালিশ চেপে ধরেছিল। তখনও শ্বাস-প্রশ্বাস চেপে রেখেছিল প্রতীপ। শেষপর্যন্ত তাঁর মৃত্যু হয়েছে ভেবে সেখান থেকে চলে যায় প্রসূন। পরে তিনতলায় গিয়ে সে দেখে মা, কাকিমা ও বোনকে খুন করেছে কাকা। এদিকে, সে এখনও বেঁচে আছে দেখতে পেয়ে বাবা ও কাকা তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবে বলে গাড়িতে করে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। এবং একাধিক জায়গা ঘুরে শেষপর্যন্ত বাইপাসে মেট্রোর পিলারে ধাক্কা মারে।
আরও পড়ুন-অপুষ্টি, দারিদ্র্য ও জনশিক্ষায় বিহারের সমতুল্য, মোদি-শাহের ‘মডেল’ গুজরাত : সমীক্ষার রিপোর্ট
ট্যাংরা-কাণ্ডে মা-কাকিমা-বোনের মৃত্যুর পর গ্রেফতারির মুখে বাবা-কাকা প্রণয় ও প্রসূন। ইতিমধ্যেই দোষ স্বীকার করেছে প্রণয় দে। পুলিশি জেরার মুখে প্রণয়ের স্বীকারোক্তি, সেই-ই সমস্ত নির্দেশ দিয়েছিল ভাই প্রসূনকে। এই পরিস্থিতিতে নাবালক প্রতীপকে রাখতে চাইছেন না আত্মীয়রা। কিন্তু বছর ১৫-র প্রতীপকে হোমে পাঠানোর বিরুদ্ধে শিশু সুরক্ষা কমিশন। পুলিশ সূত্রে খবর, কমিশনের ইচ্ছে সাবালক হওয়া পর্যন্ত দাদু-দিদার কাছেই থাকুক প্রতীপ। ততদিন সরকারি স্কিমে মাসোহারা পাবেন তাঁরা। কিন্তু দাদু-দিদাও যদি প্রতীপকে রাখতে রাজি না হন, সেক্ষেত্রে একটি পরিবারের কাছে রাখা হবে তাঁকে। ইতিমধ্যেই একটি পরিবার তাঁর ভরণপোষণে রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী।