গর্ভধারণ : নানা সমস্যা এবং উপায়

এ-যুগে কেরিয়ারমুখী মেয়েরা টাকা রোজগার করতে গিয়ে বিয়ের বয়স পার করে ফেলছেন। যদিও-বা বিয়ে করলেন, সন্তান চাইছেন না। তিরিশের আগে প্রথম সন্তান— এই নীতিকথায় তাঁরা বিশ্বাসী নন। ফলে বেশি বয়সে মা হতে গিয়ে আসছে নানান জটিলতা। যদিও মা হতে এখন বয়স আর কোনও বাধা নয়। রয়েছে অনেক কৃত্রিম উপায়ও। কিন্তু মাতৃত্বের জটিলতা পেরিয়ে সেইসব উপায় অবলম্বন কতটা ফলপ্রসূ? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা? এই নিয়ে লিখলেন কাকলি পাল বিশ্বাস

Must read

কেরিয়ারমুখী নারী বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন তিরিশ পার করে। বিশেষজ্ঞের মতে, প্রথম সন্তান তিরিশের আগে নেওয়া উচিত। না হলে আসতে পারে সমস্যা। কিন্তু সেই কথা কেই বা মানছেন! বিয়ে যদিও বা করলেন দ্রুত সন্তান নিতে তাঁরা নারাজ। ফলে বেশি বয়সে বিয়ে এবং মাতৃত্বে ইদানীং দেখা যাচ্ছে নানা ধরনের জটিলতা। এ-ছাড়াও পরিবেশ দূষণ, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, স্ট্রেস, অ্যাংজাইটির কারণেও মাতৃত্বে আসছে জটিলতা। এই কারণে মাতৃত্বের স্বাদ পেতে কৃত্রিম উপায় অবলম্বন করছেন অনেকেই।
মাতৃত্বে জটিলতা
জটিল মাতৃত্বের অনেক ধরনের কারণ হয়ে থাকতে পারে, যার মধ্যে কিছু সাধারণ কারণ হল, আগে যদি কোনও সিজারিয়ান ডেলিভারি হয়ে থাকে, পরবর্তীতে আবার যদি সে অন্তঃসত্ত্বা হয় তাহলে সেই ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। মায়ের বয়স যদি বেশি থাকে তা হলেও জটিলতা আসে। গর্ভে যদি একাধিক সন্তান বা যদি থাইরয়েড থাকে তাহলেও জটিলতা হতে পারে। ধূমপান গর্ভাবস্থায় জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। এ ছাড়াও গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।

আরও পড়ুন-আমেরিকার দেওয়া যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে রাজি হল না হামাস

সাধারণত পিরিয়ডস বন্ধ হয়ে গেলে প্রেগনেন্সি টেস্ট করা হয়। গর্ভাবস্থা নিশ্চিত করার পর যদি কোনও কারণে যোনি থেকে রক্তপাত হয় তাহলে সেটা স্বাভাবিক নয় বলেই ধরা হয়। এই যোনি থেকে রক্তপাতকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়। একটা হচ্ছে শুরু থেকে চার মাস অবধি আর অন্যটা হচ্ছে সাত-আট মাস থেকে বাচ্চার জন্ম হওয়া অবধি।
যোনি থেকে রক্তপাত
অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরে যদি শুরুর দিকে রক্তপাত হয় তাহলে প্রথমেই গর্ভপাতের আশঙ্কা করা হয়। অনেক সময় যদি ভ্রূণ নষ্ট হয়ে যায় তাহলে এ ধরনের রক্তপাত হয়ে থাকে। এছাড়াও কিছু কিছু সময় এমন আসে যে ভেতরে ভেতরে গর্ভপাত শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সময় থাকতেই যদি সঠিক চিকিৎসা করা হয়, তাহলে এর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
এক্টোপিক প্রেগনেন্সি
গর্ভাবস্থার নিশ্চিত হওয়ার পরেও হঠাৎ করে পেটে প্রবল ব্যথা এবং তার সঙ্গে অল্প রক্তপাত হলে সেটা এক্টোপিক প্রেগনেন্সির লক্ষণ বলে ধরে নেওয়া হয়। একটি নিষিক্ত ডিম্বাণু যখন জরায়ুর বাইরে ফ্যালোপিয়ান টিউবে প্রতিস্থাপন হয় তখন একটি এক্টোপিক গর্ভাবস্থা ঘটে। ফ্যালোপিয়ান টিউবটি ক্রমবর্ধমান ভ্রূণ ধরে রাখার জন্য তৈরি করা হয় না। এই অবস্থার ফলে জন্মদাতা মায়ের রক্তপাত হতে পারে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে মায়ের মৃত্যু অবধি ঘটতে পারে।
মোলার প্রেগনেন্সি
মোলার প্রেগন্যান্সি তখন ঘটে যখন একটি ডিম্বাণু এবং শুক্রাণু নিষেকের সময় ভুলভাবে মিলিত হয় এবং একটি ক্যানসারবিহীন টিউমার তৈরি করে। টিউমারটি দেখতে আঙুরের গুচ্ছের মতো ছোট জলভরা থলির মতো। এক্ষেত্রে ভ্রূণ তৈরি হয় না। এক্ষেত্রে টিউমারটি অপসারণের জন্য অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়। যদি চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে মোলার প্রেগন্যান্সি গুরুতর জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
প্লাসেন্টা প্রিভিয়া
গর্ভাবস্থা নিশ্চিন্ত হওয়ার পর শেষের দিক অর্থাৎ সাত আট মাস থেকে বাচ্চার জন্ম অবধি যোনি থেকে যদি রক্তপাত হয় সেটাকে বলা হয় লেট ট্রাইমেস্টার ব্লিডিং। এই সময় রক্তপাত হলে কোনও ব্যথা অনুভব হয় না। প্লাসেন্টা প্রিভিয়ার কারণে এই সময় রক্তপাত হয়। প্লাসেন্টা প্রিভিয়া হল এমন একটি অবস্থা যখন গর্ভাবস্থার শেষ মাসগুলিতে প্লাসেন্টা জরায়ুর সম্পূর্ণ বা আংশিক অংশ ব্লক করে দেয়। গর্ভাবস্থায় জরায়ুতে প্লাসেন্টা বিকশিত হয়। এটি একটি থলির মতো অঙ্গ যা নাভির মাধ্যমে ভ্রূণকে অক্সিজেন এবং পুষ্টি সরবরাহ করে। এই সময় রক্তপাত হলে সঙ্গে সঙ্গেই সিজার করতে হয়। তবে কম রক্তপাত হলে ওষুধ বা ইঞ্জেকশন দিয়ে গর্ভাবস্থাকে আরও কিছুদিন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। তবে প্লাসেন্টা প্রিভিয়ার ক্ষেত্রে সিজারিয়ান ডেলিভারি করতেই হয়।
অ্যাব্রাপশিয়ো প্লাসেন্টা
এই সময় আরও একটি কারণে যোনি থেকে রক্তপাত হওয়া সম্ভব। সেটা হচ্ছে অ্যাব্রাপশিয়ো প্লাসেন্টা। এক্ষেত্রে হবু মা যদি কোনও কারণে পেটে আঘাত পান বা উচ্চরক্তচাপের সমস্যা থাকে, তাহলে প্লাসেন্টার পেছনদিকে রক্ত জমাট বেঁধে যায়। তখন সঙ্গে সঙ্গে প্রসব করাতে হয়।
গর্ভধারণের পর উচ্চরক্তচাপ, থাইরয়েড, ডায়াবেটিস, রক্তাল্পতা দেখতে পাওয়া যায়। যেগুলো বিপজ্জনক। আর সেই কারণে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকাই উচিত।
কৃত্রিম উপায়ে মাতৃত্ব
কৃত্রিম উপায়ে মাতৃত্বের দুটো মূল পদ্ধতি এক ইনভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (IVF) এবং দুই ইন্ট্রাইউটেরাইন ইনসেমিনেশন (IUI)।

আরও পড়ুন-বীর সেনাদের অপমান, তীব্র প্রতিবাদ তৃণমূলের

আইভিএফ হচ্ছে একটি পদ্ধতি যেখানে ডিম্বাণু এবং শুক্রাণুকে পরীক্ষাগারে নিষিক্ত করা হয় এবং এর পরে সেই নিষিক্ত ডিম্বাণুটিকে যিনি মা হবেন তাঁর জরায়ুতে স্থাপন করা হয়। এই পদ্ধতিটি বন্ধ্যাত্বের সমস্যা সমাধান করতে পারে এবং সন্তান লাভের সুযোগ তৈরি করে দিতে পারে। আবার আরেকটি কৃত্রিম প্রজনন হচ্ছে ইন্ট্রাইউটেরাইন ইনসেমিনেশন। এই পদ্ধতিতে শুক্রাণুকে নারীর জরায়ুতে স্থাপন করা হয়। কিন্তু সেটা যৌনমিলনের মাধ্যমে হয় না।
আইভিএফ-এর প্রয়োজন
আজকাল বন্ধ্যাত্বের হার প্রবল ভাবে বেড়েছে। আর এই বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রথমেই ওষুধ ব্যবহার করা হয়। ওষুধের সাহায্যে ওভিউলেশন স্টিমুলেট করে ডিম্বাণুর সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়। সেক্ষেত্রে যদি ডিম্বাণু বাড়ে তাহলে দম্পতিকে শারীরিক সম্পর্কের পরামর্শ দেওয়া হয়। এই পদ্ধতিটিকে বলা হয় ওভিউলেশন ইনডাকশন টাইমড ইন্টারকোর্স। তবে এই পদ্ধতিতে সাফল্যের হার অনেক কম হয়। আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে ইন্ট্রাইউটেরাইন ইনসেমিনেশন অর্থাৎ আইইউআই (IUI)। এক্ষেত্রে শুক্রাণুকে ক্যাথিটারের মাধ্যমে সরাসরি জরায়ুতে স্থাপন করা হয়। যদি এই দুটো পদ্ধতি কাজে না দেয় সেক্ষেত্রে তখন আইভিএফ পদ্ধতির প্রয়োজন পড়ে।
আইভিএফ-এর প্রথম ধাপ
কোনও দম্পতি চিকিৎসকের কাছে গেলে প্রথমেই তাদের বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। মহিলাদের ইউটেরাস, ফ্যালোপিয়ান টিউব ও ডিম্বাণুর পরীক্ষা করে দেখা হয়। এছাড়াও আল্ট্রাসাউন্ড, এইচএসজি এবং কিছু রক্ত পরীক্ষা করা হয়। এই পরীক্ষাগুলোর মাধ্যমে উন্নত গুণমানের এবং পরিমাণ মতো ডিম্বাণু তৈরি হচ্ছে কি না, জরায়ুতে কোনও সমস্যা আছে কি না, ফাইব্রয়েড আছে কি না— সমস্ত কিছুই দেখে নেওয়া হয়। অনেক সময় ফ্যালোপিয়ান টিউব কোনও ধরনের সংক্রমণের জন্য বন্ধ থাকতে পারে, এক্ষেত্রে সার্জারির মাধ্যমে সেটা খোলা যায়। আর যখন ফ্যালোপিয়ান টিউব খোলা যায় না তখন এই ইনভিট্রো ফার্টিলাইজেশন অর্থাৎ আইভিএফের মাধ্যমে শরীরের বাইরে ভ্রূণ তৈরি করে সেটিকে জরায়ুতে প্রতিস্থাপন করা হয়। আইভিএফ-এর ক্ষেত্রে শরীরে যদি নিজস্ব ডিম্বাণু ঠিকমতো তৈরি না হয় সেক্ষেত্রে ডোনারের ডিম্বাণু নেওয়া হয়। একজন পুরুষের ক্ষেত্রেও তার শুক্রাণুর যদি গুণমান ভাল না থাকে অথবা স্পার্ম কাউন্ট কম থাকে তাহলে ডোনারের সাহায্য নেওয়া হয়।
আইভিএফ, কঠিন ট্রান্সপ্ল্যান্ট
আইভিএফ হচ্ছে একটি কঠিন ট্রান্সপ্ল্যান্ট। ডাক্তাররা শরীরের বাইরে ভ্রূণ গঠন করে জরায়ুতে ঢুকিয়ে দেন ঠিকই, কিন্তু সেই ভ্রূণ যে সবসময় জরায়ুতে ঠিকঠাক থাকবে তা কিন্তু নয়। ভ্রূণ ট্রান্সপ্ল্যান্টের পরে জরায়ুতে কিছু সমস্যা দেখা দেয়। এবং এর ফলে জরায়ুতে নতুন কোষের সৃষ্টি হয়। সেই কোষগুলোর মধ্যে কিছু কোষ ভ্রূণের ক্ষতি করে আর কিছু কোষ ভ্রূণের উপকার করে। কিন্তু এই উপকারী কোষগুলো ঠিক মতন তৈরি হচ্ছে কি না সেটা জানা সম্ভব নয়। আর সেই কারণেই সব আইভিএফ সফল হয় না। আইভিএফ পদ্ধতিতে মা হতে গেলে শরীর ঠিক থাকা সবথেকে জরুরি। না হলে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরেও যদি মায়ের উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ইত্যাদি থাকে তা হলে মিসক্যারেজ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আরও পড়ুন-বেহাল স্বাস্থ্যপরিষেবা যোগীরাজ্যে প্রসব মোবাইলের আলোয়

আইভিএফ সম্বন্ধে ভুল ধারণা
আইভিএফ পদ্ধতিতে অন্তঃসত্ত্বা হলে অনেকে মনে করেন হাঁটাচলা, খাওয়াদাওয়া সবকিছুতেই বিধিনিষেধ থাকে। এছাড়াও সারাদিন বিশ্রাম করতে হয়। এই ধারণাগুলো কিন্তু একদম ভ্রান্ত। আইভিএফ পদ্ধতিতে অন্তঃসত্ত্বাদের কোনওরকমই বিধিনিষেধ নেই। আসলে জরায়ু যদি বাচ্চা ধারণ করতে সক্ষম হয় তাহলে আইভিএফ পদ্ধতিতে অন্তঃসত্ত্বা হলে সেটা সফল হবে। অনেকে মনে করেন আইভিএফ পদ্ধতিতে বাচ্চা নিলে মায়ের ওজন বেড়ে যায়। কিন্তু সেটাও একটা ভুল ধারণা। আসলে ভ্রূণ প্রতিস্থাপনের সময় হরমোন দেওয়া হয় যেটা জল ধরে রাখতে পারে, আর এর ফলে ওজন বেড়ে যাওয়ার একটা প্রবণতা থাকে, কিন্তু পাঁচ সপ্তাহ পরে হরমোন দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। আজ সেই কারণে আইভিএফ পদ্ধতিতে মাতৃত্বের সময় মোটা হয়ে যাওয়া কথাটা ভুল। অনেকে মনে করেন এই পদ্ধতিতে অন্তঃসত্ত্বা হলে পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। এই কথাটাও একদম ভুল। কারণ আইভিএফ পদ্ধতিতে অন্তঃসত্ত্বা হলে যমজ বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। অনেকে মনে করেন যে আইভিএফের বিভিন্ন পর্যায়ে সাইকিয়াট্রিক মেডিসিন দিলে সেটা গর্ভস্থ সন্তান অথবা মায়ের ক্ষতি করবে, এটাও কিন্তু একদম ভুল একটা ধারণা।

কী বলছেন বিশেষজ্ঞ
অভিনিবেশ চ্যাটার্জি (গায়নোকলজিস্ট)
আইভিএফ-এর কোনও বয়সসীমা আছে কি?
হ্যাঁ, আইভিএফের ক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য কার্যকর বয়সসীমা সাধারণত ২৩ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে ধরা হয়। তবে ৩৫ বছরের পর প্রাকৃতিক ওষুধে ডিম্বাণুর মান এবং সংখ্যা কমতে থাকে, যা আইভিএফ-এর সফলতায় প্রভাব ফেলে। ৪৫-এর পর সাধারণত ডোনার এগ ব্যবহার করতে হয়।
বয়সটা কি ফ্যাক্টর হয় এবং কেন হয়?
অবশ্যই। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিম্বাণুর মান এবং সংখ্যা কমে যায় ক্রোমোজোমাল অস্বাভাবিকতা বাড়ে গর্ভধারণের পর সন্তান ধরে সম্ভাবনা কমে। মিসক্যারেজের ঝুঁকি বাড়ে। এজন্যই কম বয়সে আইভিএফ-এ সফলতার হার বেশি।
আইভিএফ করানোর আগে কি কাউন্সেলিং দরকার?
মানসিক চাপ কমাতে, প্রক্রিয়া সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা পেতে দু’জনের মধ্যে সমর্থন ও বোঝাপড়া বাড়াতে উভয়েরই কাউন্সেলিং প্রয়োজন।
আইভিএফ কি সবসময় সফল হয়? সফল না হলে কতবার চেষ্টা করা যেতে পারে?
না সবসময় সফল হয় না। তার কারণ খারাপ ডিম্বাণু বা শুক্রাণু, ভুল ইমপ্ল্যান্টেশন, জরায়ুর সমস্যা, ইমিউনোলজিক বা হরমোনাল ইস্যু এছাড়াও কিছু অজানা কারণও দায়ী। সাধারণত ৩-৪ বার পর্যন্ত চেষ্টা করা যায়, তবে প্রতিবার ব্যর্থতার পর ভালভাবে বিশ্লেষণ করে পরবর্তী স্টেপ নেওয়া উচিত।
এটা সাধারণের পক্ষে কতটা সম্ভব?
ভারতে প্রতি আইভিএফ সাইকেল-এর খরচ প্রায় আশি হাজার থেকে আড়াই লক্ষ পর্যন্ত। তবে (সেন্টার এবং ওষুধের ওপর নির্ভর করে) এটি সাধারণ মানুষের জন্য চ্যালেঞ্জিং, বিশেষত যদি একাধিক সাইকেল লাগে।
কম খরচে করা যায় কি?
হ্যাঁ, কিছু সরকার-চালিত বা NGO পরিচালিত প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেমন এসএসকেএম মেডিক্যাল কলেজ, দিল্লি এইমস ইত্যাদি। এছাড়া কিছু প্রাইভেট সেন্টারেও CSR বা ডিসকাউন্ট প্রোগ্রাম থাকে।
প্রেগনেন্সির জটিলতা ধরতে কোন কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা অনিবার্য?
এনটি স্ক্যান, অ্যানোম্যালি স্ক্যান, ডপলার আল্টারসাউন্ড, এনআইপিটি (NIPT) নন ইনভাসিভ পেরেন্টাল টেস্টিং, আমনিওসেনটিস বা CVS (যদি প্রয়োজন হয়), এইচ বিএওয়ান সি, টিএস এইচ, ব্লাড প্রেশার মনিটরিং, গ্রোথ স্ক্যান তৃতীয় ট্রাইমেস্টারে।
জটিলতা কাটিয়ে ওঠা কতদূর সম্ভব?
বেশিরভাগ জটিলতা সঠিক চিকিৎসা ও ফলো-আপে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। যেমন প্রি এক্লেমশিয়া, ডায়াবেটিস, থাইরয়েড ডিজর্ডার। আগে মিসক্যারেজ হয়ে থাকলে বা IUGR এই ধরনের সমস্যা থাকলেও উপযুক্ত চিকিৎসা নিয়ে পরবর্তী সময়ে সফলভাবে গর্ভধারণ সম্ভব।

Latest article