মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক বা উচ্চতর যোগ্যতার কোর্স পড়া মানে কি শুধু সেই কোর্স পাশ করাই লক্ষ্য? নাকি ভবিষ্যৎ কমর্জীবন সুনিশ্চিত করাই একমাত্র লক্ষ্য? আসলে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক হওয়া উচিত কমর্জীবনে সফল হওয়ার প্রস্তুতি।
ভবিষ্যতে কোন কাজের মধ্যে থাকলে সবচেয়ে ভাল লাগবে, সবচেয়ে দক্ষতা দেখানো যাবে, নিজেকে সবচেয়ে বিকশিত করা যাবে, জীবন তার মানে খুঁজে পাবে এসব বুঝে নিতে হবে নিজের ভেতরে ও পরিপার্শ্ব বিবেচনা করে, এবং সেইভাবেই ব্যবহার করতে হবে স্কুলজীবনের শিক্ষাকেও।
আরও পড়ুন-ঋতু পরিবর্তনে
ভবিষ্যতের জন্য রসদ জোগাড় করতে হবে এখান থেকেই, এখন থেকেই। জীবনের লক্ষ্যে এগোনোর জন্য মনস্থির করা খুবই প্রয়োজন। সেটা যত দ্রুত সম্ভব ততই ভাল। যত তাড়াতাড়ি সে ভাবনা শুরু, তত তাড়াতাড়ি ফলপ্রসূ হবে। একেকজন যেমন একেকরকম কাজে সবচেয়ে ফুটে উঠতে পারে তেমনই কাজেরও অভাব নেই সেরাদের জন্য। এখানে তেমনই কিছ দিকের ইঙ্গিত দেওয়া যেতে পারে উদাহরণ হিসাবে।
আরও পড়ুন-আন্দোলনের আ-জানে না এই বিজেপি
সাধারণ পড়াশোনার মতোই ভোকেশনাল শিক্ষায় কাজের সুযোগও কম নয়, নিয়োগ-স্বনিয়োগ দু’ভাবেই। শিক্ষকতা বা গবেষণা জাতীয় পেশার দিকে যদি কেউ যেতে চান একমাত্র তাঁদের জন্যই সঠিক হল স্নাতক স্তর শেষ করে মাস্টার ডিগ্রি বা তারপর এমফিল বা পিএইচডি।
কিন্তু এছাড়া অন্যান্য পেশার স্বপ্ন থাকলে গোড়া থেকেই মনস্থির করে নেওয়া প্রয়োজন যাতে উচ্চমাধ্যমিকের পরই সময় না নষ্ট করে নির্দিষ্ট দিকে চলে যেতে পারেন। মাধ্যমিকের পর থেকেই সেই ভাবনা চালু করে দেওয়া প্রয়োজন কারণ সেটা বুঝে উচ্চমাধ্যমিকে তারা এমন বিষয় বাছাই করবে যা ভবিষ্যতে কাজে লাগে।
আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রীর হাতেই অর্থ দফতর
দ্বাদশ শ্রেণির পর অন্যধরনের নানা দিকও খোলা রয়েছে। যেমন ট্রাভেল ট্যুরিজম, মাস কমিউনিকেশন, ম্যানেজমেন্ট, আতিথেয়তা শিল্পের বিভিন্ন বিভাগ, ডিজাইনিংয়ের নানা দিক, চলচ্চিত্র নির্মাণ এবং আরও অন্যান্য কোর্স যেমন বিদেশি ভাষা, সোশ্যাল ওয়ার্ক, আইন, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, ফাইন আর্টস, কমার্শিয়াল আর্টস মস্ত তালিকা হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন-নন্দীগ্রাম দিবস উপলক্ষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রদ্ধাঞ্জলি
ইঞ্জিনিয়ারিং বা ডাক্তারি পেশায় যারা যেতে চায় মাধ্যমিকের পরই তাদের উচ্চমাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞান শাখা নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে এবং উচ্চমাধ্যমিকের পর বিভিন্ন জয়েন্ট এন্ট্রান্সগুলিতে বসতে হবে। আবার, আর্কিটেকচার ইজ্ঞিনিয়ারিং পড়ে পেশা গড়ার ভাবনা থাকলে বিজ্ঞান শাখা তো আবশ্যিক এবং তার সঙ্গে নাটা পরীক্ষা দিতে হয়। যার প্রস্তুতি উচ্চমাধ্যমিক স্তর থেকেই নিতে হবে। সঙ্গে বিভিন্ন বিল্ডিংয়ের নির্মাণকাজ, ডিজাইনের দিকে নজর রাখা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন-নন্দীগ্রাম দিবস উপলক্ষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রদ্ধাঞ্জলি
বর্তমানে হোটেল ম্যানেজমেন্ট পেশায়ও ঝোঁক বাড়ছে। এই পেশায় বিভাগও রয়েছে অনেক। কিন্তু ভাল হোটেলের চাকরির জন্য ভাল ইনস্টিটিউট প্রয়োজন এবং তার জন্য জাতীয় স্তরের পরীক্ষায় ভাল প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষায় বসা উচিত। চল বাড়ছে বিদেশি ভাষা শেখারও, যেখানে বহুজাতিক কোম্পানিতে কাজের সুযোগ বাড়ছে। চিনা, জাপানি, কোরিয়ান, ফরাসি, রুশ ইত্যাদি বিদেশি ভাষার কদর বাড়ছে। চারুকলা, গান, নাচ, অভিনয় নিয়েও আগ্রহী অনেকে।
এই ধরনের পেশার জন্যও ওই একইভাবে দ্বাদশ শ্রেণির পরই বি মিউজ বা বি ফাইন করতে পারেন। তবে এই ধরনের পড়াশোনার নিয়মিত অভ্যাসের উপর খুবই জোর দিতে হয়। ব্যাপক চর্চাও চালিয়ে যেতে হবে। এরকম ভাবে ভবিষ্যৎ পেশা বুঝে নিয়ে তার পরিকল্পনা এখন থেকেই করে নেওয়া প্রয়োজন। হাজার ব্যস্ত সময়ের মধ্যেও সেই বিষয়ের সর্বাঙ্গীণ চর্চা বজায় রাখা খুবই দরকার।