রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু (Draupadi Murmu) দু’দিনের রাজ্য সফরে এসেছেন। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তিনি রাজ্যে এলেন এই প্রথম। সোমবার, বিকেলে নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে (Drupadi Murmu) নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয় রাজ্যের পক্ষ থেকে।
এদিনের এই অনুষ্ঠানে বাংলায় ভূয়সী প্রশংসা করলেন রাষ্ট্রপতি। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) ধন্যবাদ জানালেন। একের পরে এক বাংলার কবিতা উদ্ধৃত করে রাজ্য এবং মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ দেশের প্রথম আদিবাসী মহিলা রাষ্ট্রপতি।
আরও পড়ুন-জাতীয় শিক্ষানীতির প্রয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের কমিটি গঠন করল রাজ্যের শিক্ষা দফতর
মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রপতি এদিন বলেন, ‘‘সবাইকে সমান ভাবা, সবাইকে সম্মান দেওয়া, সবাইকে আপন করার গুণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আছে। তাঁকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি আজ অভিভূত।’’ বাংলায় বললেন, ‘‘বাংলার ভাইবোনদের শুভেচ্ছা। জয় জহর।’’ ভাষণে বাংলার প্রশংসায় পঞ্চমুখ দ্রৌপদী মুর্মু। “বাংলা ভাষা মিষ্টি ভাষা”- বলে উল্লেখ করে মাতঙ্গিনী হাজরা থেকে বিনয়-বাদল-দীনেশ-সহ স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মরণ করেন দ্রৌপদী মুর্মু। বলেন, “বাংলা থেকেই সৃষ্টি হয়েছে বন্দেমাতরম।” বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম উঠে এলো রাষ্ট্রপতির কথায়। বললেন, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু বাসভবন এবং কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মস্থানে গিয়ে নিজেকে ভাগ্যবতী বলে মনে করেছেন। বলেন, ‘‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি।’’
আরও পড়ুন-এবার বিলকিসের ধর্ষক বিজেপি নেতাদের সঙ্গে একই মঞ্চে! শাস্তির দাবি তৃণমূল সাংসদের
বাংলার ‘ভাইবোনেদের’ শুভেচ্ছা জানান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। বলেন ‘‘বাংলা ভাষা আমার খুব মিষ্টি লাগে। যখন এই ভাষা শুনি মনে হয় গ্রামের আশেপাশেই আছি। এমনই এই ভাষার সুবাস।’’। নাম নেন সত্যজিৎ রায়, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়েরও। মঙ্গলবার, তাঁর বেলুড় মঠ যাওয়ার কথা। বেলুড় মঠে যাওয়ার জন্য তিনি উদগ্রীব। সেই কথা উল্লেখ করে দ্রৌপদী বলেন, ”আগামিকাল আমার সুযোগ হবে বেলুড়মঠ দেখার। মা গঙ্গার একদিকে দক্ষিণেশ্বর অন্যদিকে বেলুড় মঠ’।‘‘
আরও পড়ুন-উত্তপ্ত তিলজলা, শিশুকন্যাকে যৌন নির্যাতনের পর খুন!
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে উঠে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেন, শুধু কলকাতা নয়, রাজ্যের মানুষ রাষ্ট্রপতিকে কাছে পেয়ে সম্মানিত। বাংলার কৃষ্টি এবং সংস্কৃতির কথা তুলে ধরেন রাজ্যপাল।
আরও পড়ুন-প্রয়াত প্রাক্তন সাংসদ ও কিংবদন্তি মালায়ালাম অভিনেতা ইনোসেন্ট
অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীতের পরে সঙ্গীত পরিবেশন করেন স্বাগতলক্ষ্মী দাশগুপ্ত, রূপঙ্কর বাগচী, শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায়, ইন্দ্রনীল সেন, রাঘব চট্টোপাধ্যায়। এরপর মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার নেতৃত্বে আদিবাসী নৃত্য পরিবেশিত হয়। তাতে পা মেলান স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। আপ্লুত রাষ্ট্পতি ও রাজ্যপাল উঠে দাঁড়িয়ে করতালি দেন। রাষ্ট্রপতির হাতে দেবী দুর্গার ডোকরার মুর্তি তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। শাল, শঙ্খ, পটচিত্র, স্মারক থেকে শুরু করে বাংলার বৈশিষ্ট সমন্বিত উপহার দ্রৌপদী মুর্মুর হাতে তুলে দেন বিশিষ্টরা।