প্রতিবেদন : পূর্ব বর্ধমানে দক্ষিণ দামোদর লাগোয়া গ্রামগুলিতে সুগন্ধি ধান অর্থাৎ গোবিন্দভোগ ধানের চাষ বেশি হয়। গোবিন্দভোগ চাল রফতানিও হয় ভাল। কিন্তু এবার টানা প্রায় দেড় মাসের বৃষ্টিতে ধান চাষে সমস্যা দেখা দেয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের দক্ষিণ দামোদর লাগোয়া খণ্ডঘোষ ও রায়না ব্লকে। এই দুই ব্লকে এক দশকের বেশি সময় ধরে সুগন্ধি গোবিন্দভোগ ধানের চাষ বেশি হওয়ায় সেই ধানের চাল বিদেশেও রফতানি হচ্ছে। এবছর চাষিরা সুগন্ধি ধানের রেকর্ড দাম পাচ্ছেন। এক কুইন্টাল ধান ১৩ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। কেজি-প্রতি চালের দাম পড়ছে প্রায় ২০০ টাকা।
আরও পড়ুন-বিজেপির চক্রান্ত: গণমঞ্চে প্রতিবাদে বিশিষ্টরা বারবার বাংলা ও বাঙালির বিরুদ্ধে
দক্ষিণ দামোদর থেকে সুগন্ধি চাল বেশি রফতানি হয় দুবাই, কুয়েতের মতো মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলিতে। সেসব দেশে এই চালেই বিরিয়ানি তৈরি হয়। কেরল বা অন্য রাজ্যে গোবিন্দভোগ চালে পায়েস তৈরি হয়। এ রাজ্যেও পায়েসের জন্যে এই চাল ব্যবহার হয়। কিন্তু এবারের অতিবৃষ্টিতে জেলার দুই ব্লকেই বিঘের পর বিঘে ধানিজমি জলের তলায়। বৃষ্টি কমলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। ওই সব এলাকার হাল সরেজমিনে ঘুরে দেখেন জেলাশাসক আয়েষা রানি এ, রাজ্যের কৃষিসচিব ও জনপ্রতিনিধিরা। এর পরেই জেলা প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের বিনামূল্যে ‘গাছবীজ’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রশাসনের তরফে যাঁদের গাছবীজ বা রোপণের আগে বাড়তি চারা আছে, তা কিনে নেওয়া হচ্ছে। সেই চারা বা ধানের গাছবীজ চাষিদের বিনামূল্যে দেওয়া হবে। ফলে চাষিরা সরাসরি জমিতে রোয়ার কাজ করতে পারবেন। কারণ বীজ ফেলে চারা তৈরির সময় পেরিয়ে গিয়েছে। বীজ ফেলে তৈরি চারাও পচে গিয়েছে। ফলে গাছবীজ পেলে চাষিদের আর্থিক দিক থেকে উপকার হবে। এরই মধ্যে সুগন্ধি ধানের বীজ সংগ্রহ এবং চাষিদের বিনামূল্যে তা দেওয়া নিয়ে জেলাশাসক জরুরি বৈঠক করেন ব্লকের আধিকারিক, পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধানদের নিয়ে। জেলা প্রশাসনের তরফে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ দামোদর এলাকায় প্রায় ৪৬ হাজার হেক্টর জমিতে সুগন্ধি ধানের চাষ হয়। তবে এবার বেশিরভাগ চাষির হাতে নতুন করে চাষের মতো বীজ না থাকায় যাঁদের কাছে গাছ-চারা আছে, সেগুলি সংগ্রহের নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। প্রয়োজনে চারা কিনে নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।