নাটোরে মন্দিরে ঢুকে খুন করা হল সেবায়েতকে!

বিদেশ সচিবের ঢাকা সফর বা ভারতের তরফে ইউনুস প্রশাসনকে সতর্ক হওয়ার বার্তা সত্ত্বেও আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে বাংলাদেশে।

Must read

প্রতিবেদন: বিদেশ সচিবের ঢাকা সফর বা ভারতের তরফে ইউনুস প্রশাসনকে সতর্ক হওয়ার বার্তা সত্ত্বেও আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে বাংলাদেশে। সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর বেলাগাম আক্রমণ, খুন, মিথ্যা মামলা, হেনস্থা, সম্পত্তি লুঠপাটের পাশাপাশি সমান তালে চলছে ভারতবিরোধী জিগির ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার। দেখা যাচ্ছে, হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশ সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনায় টপকে গিয়েছে পাকিস্তানকেও। হামলার ক্ষেত্রে সংখ্যালঘুদের উপাসনাস্থলকে বিশেষভাবে বেছে নেওয়া হয়েছে গত চার মাসে।

আরও পড়ুন-আদিবাসী এলাকায় গিয়ে অভিযোগ শুনছেন ৪ মন্ত্রী

এবার শুধুমাত্র হিন্দুদের উপাসনাস্থলে হামলাই নয়, খুন করা হল মন্দিরের এক সেবায়েতকে। ঘটনায় বাংলাদেশ পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও স্থানীয় ক্ষোভের মুখে পড়েছে ইউনুস প্রশাসন। ভারতের পক্ষ থেকে প্রতিবেশী দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা হলেও সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার বাড়বাড়ন্ত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হচ্ছে। ভারতের বিদেশ সচিবের বাংলাদেশ সফরে পেশ করা তথ্য-পরিসংখ্যান ও চাপের মুখে ইউনুস সরকার নামকাওয়াস্তে কিছু তথ্য তুলে ধরেই দায়িত্ব সেরেছিল। তবে আদতে যে অরাজক পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি তা বারবার সংখ্যালঘুদের দেশ ছাড়ার ঘটনা ও মন্দির, উপাসনাস্থলে হামলা ও খুনের ঘটনায় প্রমাণিত হচ্ছে। এবার বাংলাদেশের নাটোর জেলার বড়হরিশপুরের কাশিমপুর শ্মশানকালীর মন্দিরে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। মন্দিরের ভিতরেই হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে ২৩ বছরের পুরোনো সেবাইতের মৃতদেহ। সেইসঙ্গে লুঠ হয়েছে মন্দিরের প্রণামীবাক্স। ভাঁড়ার ঘরের তালাও ভাঙা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, শুক্রবার রাতে খুন ও লুঠের ঘটনা ঘটিয়েছে দুষ্কৃতীরা। নৃশংস এই খুনে ডাকাতিই ছিল মূল উদ্দেশ্য, দাবি পুলিশের। যদিও স্থানীয় মানুষের মতে, সংখ্যালঘুদের উপর আক্রোশ থেকেই মন্দিরে ভয়াবহ খুন। মূল মন্দিরের বাইরে সেবাইতের ঘরের কাছে দেহ উদ্ধার হয়। অথচ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে মূল মন্দিরে, যা থেকে ঘটনাটি পরিকল্পিত বলে সন্দেহ স্থানীয়দের।
এদিকে শুক্রবারই রাজ্যসভায় পেশ করা এক বিবৃতিতে বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, বাংলাদেশে চলতি বছর হিন্দুদের উপর হিংসার ২,২০০টি ঘটনা হয়েছে। এর সিংহভাগই ঘটেছে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর। পাশাপাশি হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশের নতুন বন্ধু পাকিস্তানে হিন্দুদের উপর হিংসার ঘটনা হয়েছে ১১২টি। রাজ্যসভায় এই সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় পরিসংখ্যান দিয়ে বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য দুই দেশের সরকারের কাছেই দাবি জানিয়েছে নয়াদিল্লি।

আরও পড়ুন-হোয়াটসঅ্যাপে আড়িপাতায় মার্কিন আদালতে দোষী পেগাসাসের নির্মাতা

শুক্রবার রাজ্যসভায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিং জানান, সংখ্যালঘু নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে বিদেশ মন্ত্রক। বাংলাদেশ সরকারের কাছে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সংসদে বিদেশ মন্ত্রকের পেশ করা তথ্য বলছে, ২০২২ সালে বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর ৪৭টি অত্যাচারের ঘটনা নথিবদ্ধ হয়েছিল। ২০২৩ সালে সেই সংখ্যাটা ছিল ৩০২। ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত সেই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ২,২০০। বিদেশ মন্ত্রকের বয়ান অনুযায়ী, বাংলাদেশ বা পাকিস্তান ছাড়া ভারতের অন্য কোনও প্রতিবেশী দেশে হিন্দু বা সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের ঘটনা হয়নি। এর পাশাপাশি ইউনুস প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা যেভাবে ক্রমান্বয়ে ভারতবিরোধী উসকানি দিচ্ছেন তা থেকে বিরত হওয়ার কড়া বার্তা
দিয়েছে নয়াদিল্লি।

Latest article