প্রতিবেদন : সোমবারও দিল্লি কাঁপাল তৃণমূল। সকালে বিজেপির ভাষাসন্ত্রাস এবং বাঙালিদের উপরে নির্যাতনের প্রতিবাদে সংসদ ভবন চত্বরে লোকসভার দলনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ধরনা দিলেন তৃণমূল সাংসদরা। বিকেলে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় জলশক্তিমন্ত্রকের কাছে দরবার করে বকেয়া টাকার দাবি জানালেন তৃণমূল সাংসদরা৷ তার আগে সংসদে দাঁড়িয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, হর ঘর জল প্রকল্পে জোর করে বাংলার ন্যায্য বকেয়া ২৫০০ কোটি টাকা আটকে রেখে রাজ্যের সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ করছে মোদি সরকার৷ আমরা চুপ করে থাকব না৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রকে দরবার করে জানতে চাইব, কেন আটকে রাখা হয়েছে এই টাকা? সোমবার বিকেলে বকেয়া টাকার দাবিতে কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন তৃণমূলের ১৬ সাংসদের প্রতিনিধি দল। এই প্রতিনিধি দলে আছেন খলিলুর রহমান, শর্মিলা সরকার, অসিত মাল, শতাব্দী রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া, মিতালি বাগ, কালিপদ সোরেন, বাপি হালদার, মহুয়া মৈত্র, সায়নী ঘোষ, ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রকাশ চিক বরাইক, মৌসম নুর, প্রতিমা মণ্ডল, মমতাবালা ঠাকুর। কিন্তু কোনও সুস্পষ্ট আশ্বাসই মিলল না কেন্দ্রের কাছ থেকে। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, জল জীবন মিশনের বকেয়া টাকা নিয়ে কোনও আশ্বাস দেননি কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী সি আর পাতিল। শুধুমাত্র এই খাতেই নয়, মনরেগা, আবাস যোজনা-সহ কোনও প্রকল্পেই বকেয়া মেটানোর আশ্বাস পাওয়া যায়নি। অথচ গুজরাত, অসম, ত্রিপুরা, মহারাষ্ট্রের মতো বিজেপি রাজ্যগুলো টাকা পাচ্ছে। কেন্দ্রের ভূমিকায় রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন-মাছ চোর! মাছের গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়তেই রাস্তা থেকে মাছ তুলে দৌড় বিজেপির বিরোধী দলনেতার
বাংলা ভাষার অসম্মান ও বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালিদের উপরে অত্যাচারের প্রতিবাদে এদিন সংসদ চত্বরে তৃণমূল কংগ্রেসের ধরনায় নেতৃত্ব দিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক, লোকসভায় দলের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাঁরই নির্দেশে এদিন সংসদের মকরদ্বারের সামনে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল সাংসদরা৷ তাঁদের হাতে ছিল পোস্টার—বাংলার অপমান মানছি না, মানব না৷ এর পরে ভোট চুরির ইস্যুতে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে পুরোভাগে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ পাশে ছিলেন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব। স্লোগান তোলেন, ভোট চোরি বন্ধ কর। গলা মেলান অন্যান্য বিরোধী সাংসদরাও৷ অধিকাংশ সাংসদের হাতে ছিল প্রতীকী হলফনামা৷
এই কর্মসূচির পাশাপাশি এদিন সংসদের বাদল অধিবেশনেও এসআইআর ইস্যুতে সোচ্চার হলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সরাসরি অভিযোগ তোলেন, নির্বাচন কমিশন পালাতে চাইছে বিরোধীদের তোলা প্রশ্নের কোনও জবাব না দিয়েই। কমিশন বিরোধীদের কাছে কেন হলফনামা চাইছে, কারণ বিরোধীরা ভোটার তালিকার ত্রুটি ধরছে৷ নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে হলফনামা দিক নির্বাচন কমিশন, সংসদে দাঁড়িয়েই দাবি জানান অভিষেক নিজে৷
আরও পড়ুন-স্বাস্থ্যসমীক্ষার নামে এনআরসি, কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী
সোমবার সংসদ ভবনে দলের পার্টি অফিসে বসে তৃণমূল সাংসদদের সঙ্গে একান্তে মিনিট ১৫ বৈঠক করেন অভিষেক৷ প্রত্যেককে বুঝিয়ে দেন বিকেলে কেন্দ্রীয় জলশক্তিমন্ত্রকে দরবার করার সময়ে কীভাবে বকেয়া টাকার দাবি জানাতে হবে৷ তৃণমূল প্রতিনিধি দলের তরফে এদিন কেন্দ্রীয় জলশক্তিমন্ত্রকে যে স্মারকলিপি দেওয়া হয় তার খসড়াও তৈরি করেন অভিষেক নিজেই৷