প্রতিবেদন : রাজ্যের সরকারি এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা যাতে কোনওভাবেই প্রাইভেট টিউশন করতে না পারেন তার জন্য শিক্ষা দফতর কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। শিক্ষক- শিক্ষিকারা প্রাইভেট টিউশনের সঙ্গে যুক্ত হলে এবার তাঁদের বিরুদ্ধে চরম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। শিক্ষা দফতর এক নির্দেশিকায় জানিয়েছে, রাজ্যের সব সরকারি স্কুল, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল, মডেল স্কুল এবং এনআইজিএসগুলির শিক্ষক-শিক্ষিকারা এবার থেকে আর কোনওভাবেই প্রাইভেট টিউশন করতে পারবেন না।
আরও পড়ুন-শুরু হোক দিন সূর্য নমস্কারে
এই নিয়মের অন্যথা হলে তাঁর চাকরিও কেড়ে নেওয়া হতে পারে। পেনশনও আটকে যেতে পারে। এই নির্দেশ যাতে অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলা হয় তার জন্য রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে সব স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের কাছে নোটিশ পাঠানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। সম্প্রতি, গৃহশিক্ষকদের একটি সংগঠন স্কুল শিক্ষা দফতরে প্রমাণ সহ ৬১ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায় যে তাঁরা নিয়মলঙ্ঘন করে প্রাইভেট টিউশন করে চলেছেন। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখার পরেই এই পদক্ষেপ। রাজ্যের সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলির শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রাইভেট টিউশনের রোগ দীর্ঘদিনের। আর তা নিয়ে গৃহশিক্ষকদের ক্ষোভও দীর্ঘদিনের। বাম জমানাতেই আইন করে সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলির শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রাইভেট টিউশন নিষিদ্ধ করা হয়।
আরও পড়ুন-জ্বালানি তেল বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি শ্রীলঙ্কায়
কিন্তু তারপরেও দেখা যায় ওই সব স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা চুটিয়ে প্রাইভেট টিউশন করে চলেছেন। কেউ নিজের বাড়িতে, কেউ বা ভাড়া বাড়িতে। অনেকে আবার কোচিংয়ের সঙ্গেও যুক্ত হয়ে গিয়েছেন। সম্প্রতি, গৃহশিক্ষকদের একটি সংগঠন স্কুল শিক্ষা দফতরে প্রমাণ সহ ৬১ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায় যে তাঁরা নিয়মলঙ্ঘন করে প্রাইভেট টিউশন করে চলেছেন। মনে করা হচ্ছে, সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখার পরেই এবার নড়েচড়ে বসেছে রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর। তার জেরেই সোমবার রাতে ওই নোটিশ বার করা হয়েছে। আগে রাজ্যের মডেল স্কুল ও এনআইজিএসগুলির শিক্ষক-শিক্ষিকারা এই আইনের আওতায় ছিলেন না। কিন্তু রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে সোমবার রাতে যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে তাতে এই দুই ধরনের স্কুলগুলিকেও এই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।
আরও পড়ুন-মুম্বইয়ে বাড়ি ভেঙে মৃত ১৯
রাজ্যের তৈরি শিক্ষকদের আচরণ বিধিতে প্রাইভেট টিউশন না করার কথা বলা আছে। শিক্ষার অধিকার আইনেও সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রাইভেট টিউশন পুরোপুরি নিষিদ্ধ। তা সত্ত্বেও প্রাইভেট টিউশন চালিয়ে যাচ্ছেন বেশ কিছু সরকারি এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সোমবারের বিজ্ঞপ্তিতে এটাও বলে দেওয়া হয়েছে এবার থেকে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিজ বাড়িতে, ভাড়া বাড়িতে বা কোচিং সেন্টারে প্রাইভেট টিউশন করছেন কি না তা নিশ্চিত করতে হবে স্কুলেরই প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের। সেই সঙ্গে স্কুল শিক্ষা কমিশনার এই স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষকদের নির্দেশ দিয়েছেন নিয়মের লঙ্ঘন দেখলেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকা ওই দোষী শিক্ষক বা শিক্ষিকার বিরুদ্ধে যেন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।