প্রতিবেদন : নিরপেক্ষ তদন্তের নামে দ্বিচারিতার জঘন্যতম উদাহরণ হল নারদ মামলা। নারদ কাণ্ডে বারবার উঠেছে প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগ। শুধুমাত্র বিজেপি যোগের কারণে নারদ মামলায় সিবিআই ও ইডি দেখতেই পাচ্ছে না রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। বুধবার আদালতে চার্জশিট জমা পড়ার পরই এই অভিযোগে সরব তৃণমূল কংগ্রেস। তাঁদের দাবি, চার্জশিটে যদি তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের নাম থাকে তাহলে শুভেন্দু অধিকারীর নামও থাকতে হবে। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এই নিয়ে জোরালো দাবি তোলেন। তিনি বলেন, নারদ মামলার চার্জশিটে তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের নাম থাকলে শুভেন্দু অধিকারীর নামও থাকতে হবে। এই মামলায় শুভেন্দু অধিকারীও অন্যতম অভিযুক্ত। নারদ নিউজের ফুটেজে তাঁকেও হাত পেতে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে। তাহলে কোন মন্ত্রে তাঁর নাম বাদ গেল। শুভেন্দু অধিকারীর নামও চার্জশিটে রাখতে হবে। এছাড়াও সারদা মামলায় শুভেন্দুকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিও তোলেন কুণাল। তিনি বলেন, জেলে বসে সারদা কর্তা যে অভিযোগ করেছেন তাতে শুভেন্দুর নাম রয়েছে। সেই অভিযোগের কপি আদালতে জমা রয়েছে।
আরও পড়ুন- ভোট পরবর্তী হিংসা” নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য
সেই চিঠিতে শুভেন্দু ছাড়াও তাঁর পরিবারের আরও অনেকের নামেই অভিযোগ করেছেন সারদা কর্তা। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেলিং, তোলাবাজি সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তাই ওই মামলায় শুভেন্দুকে গ্রেফতার করে হেপাজতে নিয়ে বিচার প্রক্রিয়া চালানোর দাবি তোলেন তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র। এই ইস্যুতে তৃণমূল কংগ্রেস শিবির যে কোনও ভাবেই পিছু হঠবে না এদিন তাও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কুণাল। সিবিআই ও ইডির মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি বেছে বেছে রাজ্যের শাসক দলের নেতাদের টার্গেট করছে বলে অভিযোগ তুলেছে। তাদের সাফ কথা, বিজেপিতে নাম লিখিয়ে তদন্তের হাত থেকে বেঁচে যাওয়ার কৌশল সফল হতে দেবে না তৃণমূল কংগ্রেস শিবির। এই প্রতিহিংসামূলক তদন্তের বিরুদ্ধে মানুষের দরবারে যাবেন তারা।
আরও পড়ুন- পেট্রোপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বিজেপি সরকারকে ধিক্কার জানিয়ে ট্যুইট মুখ্যমন্ত্রীর
বুধবার নারদ মামলায় রাজ্যের চার মন্ত্রী-নেতা সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছে ইডি। চার্জশিটে রাজ্যের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের নাম রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক মদন মিত্র ও প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের নামও। এছাড়াও আইপিএস এসএমএইচ মির্জার নামও রয়েছে। কিন্তু এই পাঁচজনের নাম থাকলেও নারদ কাণ্ডে অভিযুক্ত একাধিক নেতার নাম ইডির চার্জশিটে নেই। আর তাতেই অনেকে তদন্তের মধ্যে ‘অন্য’ উদ্দেশ্য খুঁজে পাচ্ছেন। বিশেষ করে রাজ্যের বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারীর নাম না থাকায় উঠছে প্রশ্ন। ফলে গোটা তদন্ত প্রক্রিয়া কতটা নিরপেক্ষ ছিল তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।