স্বাধীনতার মধ্যরাতে দুষ্কৃতী হামলায় আর জি কর হাসপাতালের (R G Kar) জরুরি বিভাগ তছনছ। তবে চারতলায় ‘সেমিনার রুম’ অক্ষত রয়েছে বলেই জানাল কলকাতা পুলিশ। হামলায় আক্রান্ত পুলিশ। ভেঙে ফেলা হয়েছে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের মঞ্চও। এরপর চারিদিকে ‘গুজব’ ছড়িয়ে পড়ে যে আর জি করে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টাতেই হামলা। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-এর তরফেও কলকাতা পুলিশকে প্রশ্ন করে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতা পুলিশের এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করা হয়। সেখানে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভাঙচুরের দাবি এবং ভিডিও সম্বলিত একটি পোস্ট শেয়ার করে লেখা হয়, ‘অপরাধ সেমিনার রুমে হয়েছিল। আর সেই সেমিনার রুমকে ছোঁয়া পর্যন্ত হয়নি। যাচাই না করা খবর ছড়াবেন না। আমরা গুজব ছড়ানোর জন্য আইনি পদক্ষেপ করছি।’
পাশাপাশি কলকাতা পুলিশ আরও জানিয়েছে, “গত রাতে আর.জি. কর হাসপাতালে (R G Kar) হানা দিয়ে আন্দোলনরত ডাক্তার ও ডাক্তারি ছাত্রছাত্রীদের উপর হামলা চালায় পাঁচ থেকে সাত হাজার জনের একটি বাহিনী, হাসপাতালের একাংশে ভাঙচুর করে তারা। আমরা গর্বিত ডিসি (নর্থ) সহ ঘটনাস্থলে কর্তব্যরত আমাদের সহকর্মীদের জন্য, যাঁরা সংখ্যায় তুলনামূলক ভাবে কম থাকা সত্ত্বেও প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সীমিত ক্ষমতায় হামলাকারীদের মোকাবিলা করার চেষ্টা করে যান আগাগোড়া, যতক্ষণ না অতিরিক্ত ফোর্স ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হামলায় আহত হয়েছেন আমাদের বহু সহকর্মী, এঁদের মধ্যে কারো কারো আঘাত গুরুতর। এই হামলার নেতৃত্বে থাকা দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করেছি আমরা। এদের বিরুদ্ধে দ্রুত কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
বুধবার রাতে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে হাসপাতাল চত্বরে তাণ্ডব চালায় লেঠেলবাহিনী। রক্তাক্ত হতে হয় পুলিশকেও। জরুরি বিভাগের আসবাবপত্রের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় মেডিসিন নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে। পরে ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। হামলার ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে যান সিপি বিনীত গোয়েল। ক্ষুব্ধ পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘ডিসি নর্থ প্রতিবাদকারীদের রক্ষা করতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি অজ্ঞান হয়ে গিয়েছেন। এখানে যা হয়েছে, তা ভুল প্রচারের জন্য।” বুধবার মধ্যরাত থেকেই নেটাগরিকদের একাংশ ভিডিয়ো পোস্ট করে দাবি করতে থাকেন, আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা যেখানে ঘটেছিল, সেই সেমিনার রুমে ভাঙচুর চালানো হচ্ছে।
সকলের সামনে সত্যি তুলে ধরার পাশাপাশি যাঁরা এই ধরনের বিভ্রান্তিকর এবং উস্কানিমূলক ভিডিও/বার্তা ছড়াচ্ছেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে লালবাজারের তরফে।