লিডস, ২৩ জুন : রুদ্ধশ্বাস সমাপ্তির দিকে গড়াচ্ছে হেডিংলে টেস্ট। সোমবার জোড়া সেঞ্চুরিতে বেন স্টোকসদের রক্তচাপ বাড়িয়েছিলেন কে এল রাহুল ও ঋষভ পন্থ। ১৪০ বলে ১১৮ রানের আগ্রাসী ইনিংস খেলে প্যাভিলিয়নে ফিরলেন পন্থ। আর রাহুলের ব্যাট থেকে এল ২৪৭ বলে ১৩৭ রানের ধ্রুপদী ইনিংস। যদিও শেষবেলায় বোলারদের সৌজন্যে লড়াইয়ে ফিরল ইংল্যান্ড। ভারতের শেষ ছয় উইকেট পড়ল মাত্র ৩১ রানে! করুণ নায়ার (২০) ও রবীন্দ্র জাদেজা (অপরাজিত ২৫) কিছুটা লড়াই করলেন। ফলে ভারতের দ্বিতীয় ইনিংস গুটিয়ে গেল ৩৬৪ রানেই। জেতার জন্য ৩৭১ রান তাড়া করতে নেমে, চতুর্থ দিনের শেষে বিনা উইকেটে ২১ রান তুলেছে ইংল্যান্ড। মঙ্গলবার, শেষ দিনে স্টোকসদের চাই আরও ৩৫০ রান। ভারতের চাই ১০ উইকেট। লড়াইটা জসপ্রীত বুমরা বনাম বাজবলের!
আরও পড়ুন-ইংল্যান্ডে প্রয়াত বাংলার দোশি
দিনের শুরুটা ভাল হয়নি ভারতের। আগের দিনের রানের সঙ্গে মাত্র দু’রান যোগ হতে না হতেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন অধিনায়ক শুভমন গিল। ব্রাইডন কার্সের অফস্টাম্পের বল কাট করতে গিয়ে প্লে ডাউন হন মাত্র ৮ রান করে। ৯২ রানে ৩ উইকেট। লিড মাত্র ৯৮ রানের। আর একটা বা দুটো উইকেট পড়া মানেই, ঘাড়ে চেপে বসবে ইংল্যান্ড। ওই পরিস্থিতিতে হাল ধরলেন রাহুল ও পন্থ। ২৮৩ বলে ১৯৫ রানের একটা অনবদ্য পার্টনারশিপ! যা পাল্টা চাপে ফেলে দিল ইংল্যান্ডকে। শুরুতে সতর্ক থাকলেও, সেট হওয়ার পরেই হাত খুললেন পন্থ। নটরাজের ভঙ্গিমায় উইকেটে চারদিকে স্ট্রোক খেলে গেলেন। রাহুল আবার পুরোপুরি ধ্রপদী টেস্ট ঘরানার ব্যাটিং করলেন। অফস্টাম্পের বাইরের একের পর এক বল ছেড়ে বোলারদের ধৈর্যের পরীক্ষা নিয়ে গেলেন। খারাপ বল বাউন্ডারির বাইরে পাঠালেন। রাহুল ও পন্থের যুগলবন্দি দেখতে দেখতে কমেন্ট্রি বক্সে বসা দীনেশ কার্তিক তো বলেই ফেললেন, ‘‘উইকেটের একদিকে ধ্রুপদী সঙ্গীত হচ্ছে তো অন্যপ্রান্তে হিপহপ!’’
রাহুলের নবম টেস্ট সেঞ্চুরি এল ২০২ বলে। অন্যদিকে, পন্থের সেঞ্চুরি এল ১৩০ বলে। টেস্টে আট নম্বর সেঞ্চুরি করে একাধিক নজির গড়লেন পন্থ। তিনিই প্রথম ভারতীয় উইকেটকিপার, যিনি এক টেস্টের দু’ইনিংসে সেঞ্চুরি হাঁকালেন! প্রথম ভারতীয় ব্যাটার, যিনি ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্টের দু’ইনিংসেই একশো করলেন। এখানেই শেষ নয়, জিম্বাবোয়ের অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের পর, পন্থ টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্বিতীয় উইকেটকিপার হিসাবে দু’ইনিংসেই সেঞ্চুরি করলেন। নজির গড়লেন রাহুলও। প্রথম ভারতীয় ওপেনার হিসাবে ইংল্যান্ডের মাটিতে তিনটি টেস্ট সেঞ্চুরি করলেন তিনি। এর আগে সুনীল গাভাসকর, বিজয় মার্চেন্ট, রবি শাস্ত্রী ও রাহুল দ্রাবিড়ের দুটি করে সেঞ্চুরি ছিল।