নকীব উদ্দিন গাজী, বারুইপুর: দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের রামনগর ঘোষবাড়ির দুর্গাপুজো আজও তার নিজস্ব বনেদিয়ানায় বাকিদের থেকে আলাদা। এক সময় এখানেই তাঁর জমিদারি শুরু করেছিলেন কৈলাসচন্দ্র ঘোষ। তাঁর ছেলে নরেন ঘোষ জমিদারির জৌলুস ধরে রাখতে শুরু করেন দুর্গাপুজো। বিশাল ঠাকুর দালান তৈরি করে মা দুর্গার আরাধনা শুরু হয় ১৮৮২ সালে। সেই থেকেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার রামনগর ঘোষ বাড়ির পুজো আজও চলে আসছে কৈলাস ভবনের পুজো নামে।
আরও পড়ুন-সবুজসাথী প্রকল্প : পুজোর পরেই ১২ লক্ষেরও বেশি সাইকেল দেবে রাজ্য
জৌলুস কমলেও এই পুজোয় এখনও পর্যন্ত এতটুকু বনেদিয়ানা কমেনি। জমিদারির সেই পুরাতন রীতি মেনেই এখনও আজও দুর্গাপুজো চলছে ঘোষ বাড়িতে। সেই সময় এই পরিবারের সদস্য সুধাংশু ঘোষই ছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার একমাত্র ব্যারিস্টার। বর্তমানে সেই সুধাংশু ঘোষের চার ছেলের মধ্যে একমাত্র দেবব্রত ঘোষই জীবিত রয়েছেন। তাঁর হাত ধরেই চলছে পুজো। সুধাংশু ঘোষ সনাতন ধর্ম রক্ষার জন্য মহাভারত সুধা নামক গ্রন্থও রচনা করেছিলেন
শোনা যায়, তৎকালীন বড়লাট লর্ড ক্যানিং নরেন ঘোষের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। একবার দুর্গা পুজোর সময় ক্যানিং যাওয়ার পথে এই বাড়িতে আসেন লর্ড ক্যানিং। সকলের সঙ্গে সময় কাটান। পশুবলি প্রথা বন্ধ হয়ে গেলেও নিয়ম করে এখনও এই পুজোয় আখ, চালকুমড়ো বলি হয়। অষ্টমীর দিন ঘোষ বাড়ির পুজোয় নিরামিশ খাবার খেতে ভিড় জমান গ্রামবাসীরা।
আরও পড়ুন-কৈলাশ মিশ্রর নেতৃত্বে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ রুখলেন যুব তৃণমূলের কর্মীরা
এখন বাড়ির দুর্গা দালানেই জোরকদমে চলছে প্রতিমা তৈরির প্রস্তুতি। সারা বছর এই পরিবারের সদস্যরা যে যেখানে থাকুন না কেন সকলেই পুজোয় উপস্থিত হন। বাড়ির পুজো ছেড়ে বাইরে ঠাকুর দেখতে প্রায়ই কেউই যান না। নতুন প্রজন্মের সদস্যরাও বাড়ির পুজো নিয়েই মেতে থাকেন। পুজোর খরচ সামলাতে একটি বিশালাকার পুকুরে মাছ চাষ ও ৭২ বিঘা জমিতে চাষ করা হয়। সেখান থেকে পাওয়া টাকা দিয়েই মেটানো হয় পুজোর খরচ। বাড়ির মহিলারাই মূলত পুজোর কাজ করেন। সবমিলিয়ে পুজোর দিনগুলি সকলে মিলে মেতে থাকেন।