ভারতীয় নাট্যগুরু রতন থিয়াম প্রয়াত, শোকপ্রকাশ শিক্ষামন্ত্রীর

Must read

৭৭ বছর বয়সে প্রয়াত পদ্মভূষণ নাট্য ব্যক্তিত্ব রতন থিয়াম (Ratan Thiyam)। বুধবার সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে প্রবাদপ্রতিম ভারতীয় নাট্যগুরুর মৃত্যুর খবর জানান বিখ্যাত নাট্যকার ও রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ১৯৭০-র দশকে শুরু হওয়া ভারতীয় নাট্যক্ষেত্রে ‘থিয়েটার অফ রুটস’ আন্দোলনের অন্যতম প্রধান পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন থিয়াম। তাঁকে নিজের সময়ের দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নাট্যকার ও নাট্য নির্দেশক বলে মনে করা হয়। নিজের সৃজনশীল সত্তার মধ্যে দিয়ে উত্তরপূর্বের রাজ্য মনিপুরের কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে গোটা ভারতের ছড়িয়ে দিয়েছিলেন বর্ষীয়ান এই নাট্য নির্দেশক। তাঁর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করে শিল্পীর পরিবার ও গুণগ্রাহীদের সমবেদনা জানিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী।

আরও পড়ুন- ফের বিদেশের মাটিতে বর্ণবিদ্বেষের শিকার ভারতীয় পড়ুয়া! হামলাকারীরা পলাতক

রতন থিয়ামের (Ratan Thiyam) চলে যাওয়া নিঃসন্দেহে ভারতীয় নাট্য জগতে নক্ষত্রপতন। প্রাচীন ভারতীয় ঐতিহ্যকে নাটকের মাধ্যমে জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন। প্রবাদপ্রতিম এই শিল্পীর জন্ম ১৯৪৮ সালের ২০ জানুয়ারি।১৯৮৭ সালে সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি ও ১৯৮৯ সালে তাঁকে পদ্মভূষণ সম্মান পান। এদিন ব্রাত্য বসু তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লেখেন, ‘একজন প্রাক্তন চিত্রশিল্পী এবং নির্দেশনা, নকশা, চিত্রনাট্য এবং সঙ্গীতে দক্ষ, রতন থিয়ামকে প্রায়শই সমসাময়িক ভারতীয় নাট্যগুরুদের একজন শ্রেষ্ঠ রূপকার হিসেবে বিবেচনা করা হত। তাঁর নাট্যকর্মসমুদয় খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীতে ভরত কর্তৃক প্রবর্তিত ভারতীয় নাট্যশৈলী নাট্যশাস্ত্র , প্রাচীন গ্রীক নাটক এবং জাপানের নোহ থিয়েটার দ্বারা দৃঢ়ভাবে প্রভাবিত। অথচ এই প্রতিটি রূপকর্ম আধুনিকতার বাস্তবতার বেদীতে শিকড়সমেত প্রোথিত। ঐতিহ্যবাহী মনিপুরী মেতেই অভিনয় শিল্পের বেশ কয়েকজন প্রধান প্রবক্তাদের তত্ত্বাবধানে বছরের পর বছর ধরে অধ্যয়নের মাধ্যমে থিয়েটারের প্রতি তাঁর এক আশ্চর্য অব্যর্থ রসসন্ধানী নন্দনতাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে উঠেছিল। থিয়াম তাঁর থিয়েটারে ঐতিহ্যবাহী মার্শাল আর্ট, থাং-তা ব্যবহারের জন্যও প্রবলভাবে পরিচিত ছিলেন। যেমন উরুভঙ্গম, সংস্কৃত নাটককার ভাসরচনা অবলম্বনে নিজেই নির্মাণ করেছিলেন নিজস্ব নাট্যমহাকাব্য। মহাভারতের একটি পর্বের উপর ভিত্তি করে তৈরি, এই চক্রব্যূহ (সেনা গঠন) সহ তাঁর সেরা নাট্যকর্মগুলির মধ্যে একটি বলে বিবেচিত হয়। থিয়ামকৃত আরও উল্লেখযোগ্য কিছু নাটক ও নাট্যকর্ম হল Lengshonnei, ঋতুসংহারম , ম্যাকবেথ প্রমুখ। রাষ্ট্রীয় নাট্যবিদ্যালয়ের প্রশাসক হিসাবেও এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ তিনি নিয়েছিলেন, যা ভারতীয় থিয়েটারের এই মন্দা সময়েও এখনও উজ্জীবিত ও ভাস্বর হয়ে আছে।’

নাট্যকার অভিনেতা ব্রাত্য বসু নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথাও শেয়ার করেছেন এদিন। নিজের পোস্টে লিখেছেন, ‘তাঁর সঙ্গে প্রতিটি রুদ্ধশ্বাস আশ্চর্য কথোপকথনের মাঝে খুলে যেত নাট্যভুবনের এক অজানিত এবং অকল্পনীয় দিগন্তরেখা। ব্যক্তিগত জীবনে যদিও তিনি ছিলেন লাজুক ,অন্তর্মুখী ও নিভৃতচারী। একইসঙ্গে প্রবল রসবোধে টইটম্বুর।’ ভারতীয় সংস্কৃতির বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্বরাও রতন থিয়ামের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন।

Latest article