প্রতিবেদন : বৃহস্পতিবার কাঠের রথের নেত্রদান বা চক্ষুদান করে শুরু হয় মহিষাদলের শতাব্দীপ্রাচীন রথযাত্রা (Rath Yatra)। ‘নেত’ নামে পরিচিত এই উৎসব লোকের মুখে মুখে অপভ্রংশ হয়ে ‘লেত’ হয়ে গিয়েছে বহুকাল। মহিষাদলের মানুষ রথের একদিন আগেই এই লেত উৎসবে মেতে ওঠেন রথ উপলক্ষে। মহিষাদল রাজবাড়ি থেকে শালগ্রাম শিলা শ্রীধরজিউকে রথে রেখে পুজো করা হয়। রাজবাড়ির সদস্যরা ছাড়াও থাকেন এলাকার বিশিষ্টজনেরা। পুজোর পর ৩০ কেজির পিতলের কলসি এবং ১২ কেজির চক্র রথের চূড়ায় স্থাপন করা হয়। রথের সর্বোচ্চ চূড়া থেকে রথের পিছন দিকে একটি কাপড় মাটি স্পর্শ করে থাকে। রাজবাড়ির আরাধ্য দেবতা গোপালজিউ, জগন্নাথ এবং রাজরাজেশ্বর জিউকে শোভাযাত্রা সহকারে এনে রথে বসানো হয়। কথিত, পুরীর রথ টানা শুরু হলেই মহিষাদলের রথ (Rath Yatra) টানা শুরু হয়। মহিষাদলের এই কাঠের রথ ২০০ বছরেরও বেশি পুরনো। মহিষাদলের এই রথ চালু রাখার পাশাপাশি সংরক্ষণে বিধানসভায় হেরিটেজ ঘোষণার দাবি তোলেন বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী। গত বছর ২১ আগস্ট রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে মহিষাদলের রথকে হেরিটেজ ঘোষণার আবেদনও করেন তিনি। কমিশনের প্রতিনিধিরা এই রথ পর্যবেক্ষণও করে যান। বিধায়ক বলেন, মহিষাদলের ১৩ চূড়ার রথকে হেরিটেজ ঘোষণার বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনা হয়েছে। এই রথে অন্যতম আকর্ষণ লোকসংস্কৃতি উৎসব। আজ থেকে ৫ জুলাই টানা চলবে উৎসব, মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির পরিচালনায়। সমিতির সভাপতি শিউলি দাসের কথায়, সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সিসি ক্যামেরা বসিয়েছে পুলিশ-প্রশাসন। মেলা প্রাঙ্গণে দুটি জায়ান্ট স্ক্রিন লাগানো হয়েছে। আগুন থেকে সতর্কতা হিসাবে মেলার প্রত্যেক দোকানিকে ২ বালতি করে জল মজুত রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রথ ও উল্টোরথের দিন বেলা ১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলিতে সব রকম যান চলাচলও নিষিদ্ধ। রথের কদিন গুণ্ডিচাবাটিতে লোকসংস্কৃতি উৎসবে যাত্রা ও ছৌনাচের দল-সহ স্থানীয় ও নামী শিল্পীদের অনুষ্ঠান থাকছে।
আরও পড়ুন: অমরনাথ যাত্রা শুরুর আগেই উধমপুরে নিকেশ জঙ্গি