প্রতিবেদন : দীর্ঘ ৪৬ বছর পর এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ঘড়িতে তখন দুপুর ১টা বেজে ২৮ মিনিট। খোলা হল পুরীর রত্নভাণ্ডার। এই রত্নভাণ্ডারেই দ্বাদশ শতকের মণিমানিক্য সঞ্চিত আছে বলে বিশ্বাস। গর্ভগৃহের ভিতরে মোট দু’টি রত্নভাণ্ডার রয়েছে। একটি বহির্ভাণ্ডার ও একটি ভিতর ভাণ্ডার। বহির্ভাণ্ডারে রয়েছে জগন্নাথদেবের আভূষণ। পুরীর মহারাজা দিব্যসিংহ দেব জানিয়েছেন, রত্নভাণ্ডারের মধ্যে বহু প্রাচীন কিছু রত্ন-সহ জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূল্যবান গয়না রয়েছে। ওই দুটি রত্নভাণ্ডারের মধ্যেই জগন্নাথদেবের বৈদূর্য মণি ও নীলকান্ত মণি এবং নানান অলঙ্কার-সহ যাবতীয় মূল্যবান জিনিস। প্রায় ছয় বছর আগে এই রত্নভাণ্ডারের চাবি হারিয়ে যায়। এরপর বহু তর্ক-বিতর্ক কাটিয়ে রবিবার ভারতের পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগের পরামর্শে খোলা হল রত্নভাণ্ডারের দরজা। তবে এখনই রত্নভাণ্ডারের ঐশ্বর্য চাক্ষুষ করা যাবে না। রত্নভাণ্ডারের সম্পদ সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বিশেষ ‘ভল্টে’। তাই এদিন ভাণ্ডার খোলার আগেই ৬টি বড় সিন্দুক নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে। সূত্রের খবর, প্রথমে রত্নভাণ্ডারের থাকা ধনরাশির অডিট করা হবে। তার পরে তা পাঠানো হবে সুরক্ষিত ভল্টে। রত্নভাণ্ডার খোলার জন্য স্বর্ণকারদেরও ডেকে আনা হয়।
আরও পড়ুন-হোর্ডিং নিয়ে একগুচ্ছ বিধিনিষেধ রাজ্যের
ওড়িশার নতুন মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, হে জগন্নাথ, তোমার ইচ্ছেতেই এই মন্দিরের চারটি দরজা খুলেছিল। আবার তোমারই ইচ্ছেতে ৪৬ বছর পরে মন্দিরের রত্নভাণ্ডারের দরজাও অবারিত হল। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এই মহৎ কাজ সফল হবে।
জানা গিয়েছে, রত্নভাণ্ডারে দরজা খোলা এবং তা সংরক্ষণের প্রক্রিয়ার জন্য তৈরি উচ্চস্তরীয় কমিটি একটি ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর’ তৈরি করেছে। তাতে অনুমোদন দিয়েছে ওড়িশা সরকার। সেই নিয়ম মেনেই এই রত্ন ভাণ্ডারের সংস্কারের কাজ হবে।
রত্নভাণ্ডার নিয়ে গঠিত এই বিশেষ কমিটির সভাপতি বিচারপতি বিশ্বনাথ রথ এবং কমিটির সদস্য সি বি কে মোহান্তিকে নিয়ে ১১ সদস্যের একটি দল তৈরি করা হয়েছে। এদিন রত্নভাণ্ডারের ভিতরের অংশটি ঘুরে দেখে ১১ সদস্যের ওই দল। এছাড়াও কথিত আছে, অন্ধকার প্রকোষ্ঠে জগন্নাথ মন্দিরের বিপুল ধনরাশি পাহারা দেয় নাগরাজরা। সেই বিশ্বাস থেকে মন্দিরের ভিতরে এবং বাইরে উপস্থিত ছিল স্নেক হেল্পলাইনের দু’টি বিশেষজ্ঞ দল।