অনির্বাণ দাস: নওরেম মহেশের শাপমুক্তির ম্যাচটা কি এক বাঙালি ফুটবলারের উত্থানের মঞ্চ হয়ে রইল?
গত নভেম্বরের ঘটনা। এই যুবভারতীতেই মহামেডানের বিরুদ্ধে প্রথম পর্বের ম্যাচে লাল কার্ড দেখে দলকে ডুবিয়েছিলেন মহেশ। রবিবার অবশ্য যুবভারতীর সবুজ ঘাসে ফুল ফোটালেন লাল-হলুদের মণিপুরি মিডফিল্ডার। নিজে দুর্দান্ত একটি গোল করা ছাড়াও ম্যাচের সেরার পুরস্কার আদায় করে নিলেন।
এবং রবি হাঁসদা। সন্তোষ ট্রফিজয়ী বাংলা দলের সেরা স্ট্রাইকারের এদিনই আইএসএলে অভিষেক ঘটল। আর পরিবর্ত হিসাবে দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমে ম্যাচের ভোল প্রায় পাল্টে দিয়েছিলেন রবি। সতীর্থ ফ্রাঙ্কাকে দিয়ে গোল করলেন। আরও একবার নিশ্চিত গোল থেকে রবিকে বঞ্চিত করল পোস্ট!
আরও পড়ুন-গার্ডনারের দাপটে জয় পেল গুজরাট
নামেই বড় ম্যাচ। আদতে রবিবাসরীয় ডার্বি ছিল লিগ টেবিলের ১১ নম্বর বনাম ১৩ নম্বরের সম্মানের লড়াই। আর সেই সম্মানের লড়াইয়ে বাজিমাত করল ইস্টবেঙ্গল। আগের ম্যাচে চেন্নাইয়িনের কাছে লজ্জার হারের ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার শপথ নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন মহেশরা। নজর কাড়লেন লাল-হলুদের নয়া বিদেশি মেসি বাউলি। বিরতির আগেই অন্তত দু’বার দিমিত্রিয়স দিয়ামনতাকোসকে বল সাজিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দু’বারই ব্যর্থ হন গ্রিক স্ট্রাইকার। আরও একবার মেসির জোরালো শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ২৭ মিনিটেই অবশ্য মহেশের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। বিষ্ণুর চমৎকার পাস থেকে বল পেয়ে বাঁ পায়ের জোরালো শটে দলকে এগিয়ে দেন মহেশ। তবে এই পাস ছাড়া গোটা ম্যাচে বিষ্ণুর অবদান শূন্য।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে তেড়েফুঁড়ে খেলা শুরু করে মহামেডান। পরিস্থিতি ক্রমশ হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে ৬১ মিনিটে নন্দকুমারকে তুলে নিয়ে সাউল ক্রেসপোকে মাঠে নামান অস্কার ব্রুজো। আর মাঠে নামার চার মিনিটের মধ্যেই মেসির সাজিয়ে দেওয়া বল জালে জড়িয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার। তবে তিন মিনিটের মধ্যে রবির বাড়ানো বল ধরে নিখুঁত প্লেসিংয়ে গোল করেন মহামেডানের ব্রাজিলীয় স্ট্রাইকার ফ্রাঙ্কো। এরপর ইস্টবেঙ্গলকে দারুণভাবে চেপে ধরেছিল মহামেডান। ৭৬ মিনিটে আলেক্সিসের শট কোনওরকমে বাঁচান প্রভসুখন গিল। ফিরতি বলে রবির শট বারে লাগে। আবার ফিরতি বলে রেমসাঙ্গার শট গোললাইন সেভ করেন আনোয়ার আলি। সেই সময় মনে হচ্ছিল, যেকোনও সময় ম্যাচে সমতা ফেরাবে মহামেডান। কিন্তু ৮৯ মিনিটে ডেভিডের গোলে জয় নিশ্চিত করে ফেলে ইস্টবেঙ্গল।
২০ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট। লিগের ১১ নম্বরেই আটকে রইলেন মহেশরা। অন্যদিকে, সমান ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে লাস্টবয় মহামেডান।