জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দিতে প্রস্তাব সংস্কার কমিশনের

বর্তমানে বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার যে চার মূলনীতি রয়েছে সেগুলি হল জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা।

Must read

প্রতিবেদন: এবার কোপ পড়তে চলেছে বাংলাদেশের সংবিধানে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আত্মস্থ করে যে সংবিধান লেখা হয়েছিল, তার মূলনীতিগুলি বাদ দিতে মরিয়া জামাতপন্থী ইউনুস সরকার। সেকারণে বাংলাদেশের সংবিধানের চার মূলনীতির মধ্যে তিনটিই বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। সেইসঙ্গে গণতন্ত্র বহাল রেখেও রাষ্ট্র পরিচালনার নতুন আরও চারটি মূলনীতির সুপারিশ করেছে তারা।

আরও পড়ুন-তছরূপ মামলা, সুপ্রিম কোর্টের ধমক খেল কেন্দ্র ও ইডি

বর্তমানে বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার যে চার মূলনীতি রয়েছে সেগুলি হল জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাহাত্তরে যে সংবিধান প্রণীত হয়েছিল, তাতে রাষ্ট্র পরিচালনার এই চার মূলনীতি গৃহীত হয়। বর্তমানের চার মূলনীতির মধ্যে শুধু গণতন্ত্র রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত নতুন পাঁচ মূলনীতির মধ্যে। সুপারিশ করা নতুন পাঁচটি মূলনীতি হল সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ ও গণতন্ত্র। কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধের মহান আদর্শ এবং ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের জন–আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলনস্বরূপ সংবিধান ও রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে এই পাঁচটি নীতি প্রস্তাব করা হয়েছে। আর তিন মূলনীতি বাদ দেওয়ার বিষয়ে সংস্কার কমিশনের সাফাই, সংবিধানের মূলনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদ এবং সংশ্লিষ্ট ৮, ৯, ১০ ও ১২ অনুচ্ছেদগুলি অপ্রয়োজনীয়। তাই এগুলি বাদ দেওয়ার সুপারিশ কর হচ্ছে। অধ্যাপক আলি রিয়াজের নেতৃত্বাধীন সংবিধান সংস্কার কমিশন বুধবার প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাদের সংস্কারের সুপারিশসংবলিত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এদিন আরও তিনটি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। বাকি তিনটি কমিশন হল নির্বাচনব্যবস্থা, দুর্নীতিদমন কমিশন ও পুলিশ সংস্কার কমিশন। সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলি রিয়াজ তাঁদের প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন। তিনি জানান, তাঁরা সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোটের সুপারিশ করেছেন। এছাড়া দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ চালুর সুপারিশ করেছেন। কমিশনের সুপারিশ নিয়ে এখন রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনা করবে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই আলোচনার মাধ্যমে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেসব সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হবে। ফেব্রুয়ারিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এই আলোচনা হবে বলে জানানো হয়েছে।

Latest article