দলে প্রত্যাবর্তন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের। আজ তৃণমূল ভবন থেকে সুব্রত বক্সীর হাত থেকে পতাকা তুলে নেন তাঁরা। এরপরই এই নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Abhishek Banerjee)। পাশাপাশি, এসআইআর ইস্যুতেও এদিন মুখ খুললেন তিনি। বলেন, ”এসআইআর এবং সিএএ-র নাম করে কেন্দ্র এবং কমিশন যা করছে তাতে বিজেপির ঘরেই বিদ্রোহ শুরু হয়ে গেছে ”
আরও পড়ুন-একসাথে লড়াই হবে: শোভন-বৈশাখীকে দলে স্বাগত জানিয়ে মন্তব্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের
তিনি বলেন, ”কালকে কুলপি তে ২০০২ এর ভোটার লিস্ট নেই। আপলোড হয়েছে ২০০৩ এর খসড়া। এর জবাব কে দেবে? এখনও SIR শুরু হয়নি। তার আগে ছজন মারা গেছেন। যেভাবে বাংলার মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এসআইআর হওয়ার পর থেকে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা সামনে এসেছে। ৬টা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। আমরা প্রথম থেকে বলেছি যোগ্য ভোটারের নাম বাদ গেলে দিল্লিতে নিয়ে যাবে। ওদের বিরুদ্ধে লড়াই তীব্রতর হবে। ইতিমধ্যেই যে পাঁচ ছজন মারা গেছে তাঁরা যোগ্য নাকি অযোগ্য? এই কারণেই আমরা বাংলা বিরোধী বলি। আমি অনুরোধ করব, এরা যে CAA ক্যাম্প করছেন আপনাদের মাধ্যমে সেই ফাঁদে পা দেবেন না। যদি এই ফাঁদে পা দেন অসমে ১২ লক্ষ হিন্দু বাঙালির মতো অবস্থা হবে। সবাইকে ডিটেনশন ক্যাম্পে ফেলবে। তৃণমূল থাকতে কাউকে ডিটেনশন ক্য়াম্পে যেতে হবে না। কেউ ভয় পাবেন না। আতঙ্কে থাকবেন না। আমাদের কর্মীরা রাস্তায় নেমেছে। প্রতিটি অঞ্চলে প্রতিটি ওয়ার্ডে হেল্প ডেস্ক তৈরি করা হচ্ছে। এমপি-এমএলএ-রা দায়িত্বে থাকবে।”
আরও পড়ুন-যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নিলেন চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য
অমিত শাহর মন্তব্যের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ”গতকাল এক সাক্ষাৎকারে অমিত শাহ বলেছেন, যারা ভারতে জন্মায়নি তাঁদের ভারতে ভোট দেওয়ার কোনও অধিকার নেই। তার যুক্তির নীরিক্ষেই দেখি তাহলে বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবানির ভোটাধিকার প্রয়োগের অধিকার নেই। লালকৃষ্ণ আডবানির জন্য কোথায়? তাহলে শান্তনু ঠাকুরের ভোটের অধিকার নেই। মতুয়া ভাইবোনদের কারও ভোট দেওয়ার অধিকার নেই। এটা আমি বলছি না, এটা অমিত শাহ বলেছেন। আমার প্রথম প্রশ্ন ২০০২ এর ভোটার তালিকায় নাম ছিল তাঁদের নাম বাদ যাবে না। সোনালী খাতুন যাঁকে বাংলাদেশি বলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁর মায়ের নাম ২০০২ এর তালিকায়। মুরারই বিধানসভার খসড়া তালিকায় সোনালী মা-বাবার নাম রয়েছে। তারপরও বাংলাদেশি বলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
আরও পড়ুন-তৃণমূল কংগ্রেসে রাজনীতির সেকেন্ড ইনিংস শুরু শোভন চট্টোপাধ্যায়ের, সঙ্গে বৈশাখী
রাজ্যবাসীকে সতর্কবার্তা দিয়ে অভিষেক বলেন, “এই ক্যাম্প তো আসামেও হয়েছিল, যাঁরা নাম লিখেয়েছে, তাঁদের নাগরিকত্ব গেছে। তাই সকলকে বলব, কানে না শুনে চোখে দেখুন, বিজেপির সিএএ ক্যাম্পে নাম লেখানো মানে ক্যাম্পে যেতে হবে, তারপর আসামের মতো অবস্থা হবে। ওরা আসামের মতো এখানেও সিএএ এবং এসআইআর নিয়ে বড় চক্রান্তের চেষ্টা করছে। বিজেপি যতই ষড়যন্ত্র করুক, ভীতি তৈরির চেষ্টা করুক না কেন, তৃণমূল থাকতে বাংলা থেকে একজনও যোগ্য ভোটারকে ওরা তাড়াতে পারবে না।”
প্রসঙ্গত, এসআইআরের নামে কেন্দ্রের চক্রান্তের বিরুদ্ধে আগামিকাল ৪ নভেম্বর কলকাতায় মিছিলের ডাক দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই মর্মে অভিষেক জানান, দূরের জেলা থেকে সমর্থকদের আসতে বারণ করা হয়েছে। দুই ২৪ পরগনা, হাওড়়া ও কলকাতার ১৪৪ টা ওয়ার্ড থাকবে।

