প্রতিবেদন : বঙ্গ রঙ্গমঞ্চের তিনি ট্র্যাজিক নায়িকা। নাট্যজগতের তথাকথিত কুলীনরা তাঁকে ধর্তব্যের মধ্যেই রাখতে চাননি। আসলে তাঁর নামের সঙ্গে নিজেদের নাম জড়াতে চাননি। অথচ অদৃষ্টের কী পরিহাস! মৃত্যুর প্রায় ৮৪ বছর পর আজ তাঁর নামে ছবি। তাঁর নামে গোটা একটা সিনেমা হল। নটী বিনোদিনীকে উদযাপন করছেন সকলে। মর্যাদা পাচ্ছে তাঁর কাজ। আর বিনোদিনীর ভূমিকায় রুক্মিণী মৈত্র মাতিয়ে দিচ্ছেন পর্দা। আজকের প্রজন্ম নতুন করে জানছে বাংলা নাট্যমঞ্চের সেই মহীয়সীকে, যিনি কার্যত একার চেষ্টায় স্টার থিয়েটার নামে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন, কিন্তু নিজের প্রাপ্য স্বীকৃতিটুকু পাননি। রামকমল মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ও দেব প্রযোজিত বিনোদিনী, একটি নটীর উপাখ্যান ছবিটির প্রথম দিনের প্রথম শো হাউসফুল। তাও আবার সেই বিনোদিনী (Binodini Review) থিয়েটারেই। একসময় বিনোদিনীর সাহায্যে তৈরি স্টারে তাঁরই নাম বাদ দেওয়া হয়েছিল। তাঁকে ঠকানো হয়েছিল। অপমানে-অভিমানে থিয়েটার থেকে সরে গিয়েছিলেন বিনোদিনী দাসী। শোনা যায়, শেষ বয়সে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন স্টার থিয়েটারের দরজা দিয়ে। দারোয়ান চিনতে না পেরে তাঁকে বের করে দেয়। ১৯৪১-এর ১২ ফেব্রুয়ারি এক বুক দুঃখ নিয়ে বিদায় নেন বিনোদিনী। বৃহস্পতিবার বিনোদিনী (Binodini Review) প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি দেখে আপ্লুত গোটা হল। মহিলারা এগিয়ে এসে রুক্মিণীকে অভিনন্দনে, ভালবাসায় ভরিয়ে দিলেন। বললেন, আসল বিনোদিনীকেই চোখের সামনে দেখছি। এক প্রৌঢ়া থিয়েটার কর্মী বললেন, তুমিই আমার বিনোদিনী। রুক্মিণী বললেন, এভাবেই আমার পাশে থাকবেন। আমার একটা লড়াই ছিল। প্রথম দিন প্রথম শো হাউসফুল দেখে ভাল লাগছে। মহাশ্বেতা মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে এসেছিলেন সোনাগাছির যৌনকর্মীরাও। যেখান থেকে উঠে এসেছিলেন বিনোদিনী। শুরুটা হয়েছিল টিব্যাকের (টাকি বয়েজ অ্যালুমনি অ্যাসোসিয়েশন) বার্ষিক অনুষ্ঠানে। রুক্মিণী টিব্যাকের কার্নিভ্যালে সকলকে ছবিটি দেখতে অনুরোধ করেন। টিব্যাক সিদ্ধান্ত নেয় প্রথম দিনের প্রথম শোয়ের সব টিকিট কেনা হবে। বাকিটা ইতিহাস। শনিবারও থাকছে হাউসফুল।
আরও পড়ুন- হেলে পড়া বাড়ি মানেই বিপজ্জনক নয় : মেয়র