প্রতিবেদন : নাদনঘাট থানার ঘোলা গ্রামের কৃষক সন্তান রেজাউল শেখ বাবাকে কথা দিয়েছিলেন, হেলিকপ্টার তৈরির স্বপ্ন একদিন পূরণ করবেন। কথা রাখতে দিনরাত পরিশ্রম করে নিজের হাতে বানিয়ে ফেলেছেন প্রায় ৩০ ফুট লম্বা একটি হেলিকপ্টার। সামান্য কাজ বাকি আছে বলে জানান তিনি। তবে এখনই রেজাউলের গড়া নজরকাড়া হেলিকপ্টারটি দেখতে রোজই মানুষের ভিড় বাড়ছে।
আরও পড়ুন-উপন্যাসে নারী
রেজাউলের কথায়, আর কয়েক মাসের মধ্যেই আকাশে উড়বে তাঁর এই কপ্টার। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে মোটর গ্যারেজের মেকানিক হিসেবে কাজ শুরু করার পর নিজের একটি গ্যারেজও খোলেন রেজাউল। এখন সংসার চালান আর্থমুভার ভাড়া খাটিয়ে। বাবা ইয়াসিন শেখ মারা যাওয়ার আগে তাঁকে বলেছিলেন, ‘সকলে মনে রাখবে এমন কিছু কর।’ বছর চারেক আগে হেলিকপ্টার বানাবেন বলে ঠিক করেন রেজাউল। ইউ টিউব ঘেঁটে নিজের ভাবনা অনুযায়ী হেলিকপ্টার তৈরি শুরু করেন। বাড়ির পাশে ফাঁকা জায়গায় লোহার পাত কিনে ওয়েল্ডিং মেশিন দিয়ে প্রায় ৩০ ফুটের হেলিকপ্টারের একটা কাঠামো গড়ে ফেলেন। নানা জায়গা থেকে কেনেন যন্ত্রাংশ। বেঙ্গালুরু থেকে আনান ৩৯৫ হর্স পাওয়ারের ইঞ্জিন। কপ্টারের মাথায় ইস্পাতের ব্লেড বানিয়ে লাগান। নীল-সাদা রং করে কপ্টারের গায়ে দুই মেয়ে রুমা-রিমার নাম লেখেন। ইঞ্জিনের কাজ শেষ হতেই চালু করে ব্লেড ঘোরান হেলিকপ্টারটির। পাইলট-সহ পাঁচজন বসার জায়গা থাকা তাঁর এই হেলিকপ্টার এবার আকাশ-উড়ানের সারথি হবে। তবে রেজাউলের এই স্বপ্নপূরণে তাঁকে নিজের তিন বিঘা জমি বিক্রি ছাড়াও বন্ধক দিতে হয়েছে শখের মোটরবাইক ও চারচাকা গাড়ি। এর মধ্যেই বছরখানেক আগে ট্রেনের ধাক্কায় বড় মেয়ে রুমার মৃত্যু হয়। মানসিকভাবে ভেঙে পড়ায় কাজ যায় থমকে। ফের মাসতিনেক হল কাজ শুরু করেছেন। সম্প্রতি ৬টি চাকায় লাগিয়েছেন টায়ার। ট্রায়াল দিতে গিয়ে বোঝেন, হাতে তৈরি ব্লেড নয়, আসল ব্লেড লাগাতে হবে। তার জন্য দরকার লাখখানেক টাকা। জোগাড় হলেই কাজ শেষ করে সরকারি নিয়ম মেনে পাইলটের আসনে বসে ৫০ মিটার উড়ানের ট্রায়াল দেবেন।