ভারতে ভোজ্যতেলের সঙ্কট বাড়ছে, দর্শক মোদি সরকার

Must read

নয়াদিল্লি : কোভিড-১৯ সংক্রমণের কারণে ভারতের (India) মানুষের আর্থিক পরিস্থিতি খুবই খারাপ হয়েছে। বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন। অনেকেরই রোজগার কমেছে। বহু পরিবার কোভিড সংক্রমণে একমাত্র রোজগেরে মানুষকে হারিয়ে অথৈ জলে পড়েছে। এসব জেনেও নীরব দর্শক হয়ে থেকেছে মোদি সরকার (Modi Government)। বরং একের পর এক জনবিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়ে মানুষের সমস্যা আরও বাড়িয়েছে কেন্দ্র। বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম বাড়ায় পেট্রোল, ডিজেল, রান্নার গ্যাস, খাদ্যপণ্য-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি জিনিসের দাম আগুন। খুচরো পণ্যে মুদ্রাস্ফীতি গত কয়েক মাস ধরেই ঊর্ধ্বমুখী। মুদ্রাস্ফীতি ৬.৯৫ শতাংশে পৌঁছেছে। খুচরো পণ্যে মুদ্রাস্ফীতির অন্যতম একটি কারণ ভোজ্যতেলের (Edible oil) মূল্যবৃদ্ধি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে ভোজ্যতেল (Edible Oil)-সহ বিভিন্ন পণ্যের আমদানিও ধাক্কা খেয়েছে। যার আঁচ এসে পড়েছে খুচরো বাজারে। পাম ও সোয়াবিন তেলের দাম নজিরবিহীন উচ্চতায় উঠেছে। ভারত ভোজ্যতেলের চাহিদার ৬০ শতাংশ আমদানি করে। এরই মধ্যে ইন্দোনেশিয়া ২৮ এপ্রিল থেকে পাম তেলের রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ইন্দোনেশিয়া থেকেই সব থেকে বেশি পাম তেল কেনে ভারত। ইন্দোনেশিয়ার এই সিদ্ধান্তে দেশের বাজারে পাম তেলের দাম নতুন করে ১০-১৫ শতাংশ চড়তে পারে বলে আশঙ্কা। কিন্তু বিষয়টি আগে থেকে জানার পরেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি মোদি সরকার।

আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রী কাছের মানুষ : সৌরভ

এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের প্রধান অর্থনীতিবিদ অভীক বড়ুয়া বলেছেন, পাম তেলের অপ্রতুলতা বা মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাজারে প্রত্যক্ষ প্রভাব খুব কম হতে পারে। কিন্তু বিস্কুট, কেক, মার্জারিন, চকোলেটের মতো বেশ কিছু পণ্য তৈরির কাঁচামাল পাম তেল। তাছাড়া শ্যাম্পু, সাবানের মতো বিভিন্ন প্রসাধনী দ্রব্য তৈরিতে লাগে পাম তেল। সেকারণে খুচরো বাজারে সার্বিক প্রভাব অনেক বেশি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। স্বাভাবিকভাবেই ভোগ্যপণ্য সংস্থাগুলির উৎপাদন খরচ বাড়বে। সেক্ষেত্রে বিক্রি ধাক্কা খেলেও পণ্যের দাম বাড়ানো ছাড়া কোনও পথ খোলা থাকবে না। জেমিনি ইডিবেলস অ্যান্ড ফ্যাটস ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের কর্তা প্রদীপ চৌধুরী বলেছেন, প্রতি মাসে আমরা ইন্দোনেশিয়া থেকে প্রায় ৩০,০০০ টন পাম তেল কিনি। যা দেশের মোট চাহিদার প্রায় অর্ধেক। ভারত বিশ্বের সবচেয়ে বড় পাম তেল আমদানিকারক। ভারত বছরে প্রায় ১৩-১৩.৫ মিলিয়ন টন ভোজ্য তেল আমদানি করে। যার মধ্যে প্রায় ৮-৮.৫ মিলিয়ন টন (প্রায় ৬৩ শতাংশ) পাম তেল। সলভেন্ট এক্সট্র্যাক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বি ভি মেহতা এই সঙ্কট নিরসনে ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে অবিলম্বে আলোচনা শুরুর আর্জি জানিয়েছেন। মেহতা বলেছেন, গত কয়েকদিনে, মুম্বইয়ে অপরিশোধিত পাম তেলের দাম টন প্রতি ১০০ ডলার বেড়ে ১৯০০ ডলারে পৌঁছেছে। তবে অনেকেই মনে করছেন, ইন্দোনেশিয়ার পক্ষেও বেশিদিন রফতানি বন্ধ রাখা কঠিন। কারণ সেদেশে বিপুল তেল মজুত রাখার পরিকঠামো নেই। বিকল্প হিসাবে মালয়েশিয়া থেকে তেল আমদানির প্রস্তাব এলেও তাতে ঘাটতি মিটবে না।

Latest article