ও নদী রে

নদী আর নারী এক। তাঁদের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। নদী ভাঙে, গড়ে। প্রবহমানতার শেষ নেই তার। নারীও তাই। চঞ্চল, সৃষ্টিতে সক্ষম, জীবনের চালিকাশক্তি। স্বাধীনতা, উচ্ছলতা উর্বরতা, আনন্দ, গতিময়তার প্রতীক নদী তো আসলে নারীই। তেমন কয়েকটি সুন্দরী নদীর কথা লিখলেন শর্মিষ্ঠা ঘোষ চক্রবর্তী

Must read

‘একটি পাখি ঠিক পেয়েছে নদীর দেখা।
নদী, কিন্তু, আছেই পড়ে বনের ধারে
পাথরগুলা সেই নদীটি দিচ্ছে চাপা
যাতে মানুষ সহজে যায় নদীর পাড়ে’
—শক্তি চট্টোপাধ্যায়
আমার মনে আর মগজে প্রায়ই নদীর চলাচল টের পাই। আমি পাখি হয়েই নদীর দেখা পাই। আমি ভাঙি, আমি গড়ি, আমি লড়ি, এগিয়ে চলি। নদী আমার আত্মা, আমিই নদী। নদী আর নারী সমার্থক। নদী যেমন নারীর উপমা তেমন নদীর উপমাও নারী। কবি কালিদাস মেঘদূত কাব্যের নদীর রূপ-ধর্ম-বর্ণনা করেছেন তার সবটাই নারীসুলভ। সেই নারীরূপ নদীর বর্ণনাটির খুব সুন্দর যার অনুবাদ করলে অর্থ দাঁড়ায়—
কোনো নদীর ঢেউ রূপসীর ভঙ্গির মতো,
কোনো নদী তার ঘূর্ণিরূপে নাভি দেখাচ্ছে,
কেউ বিরহে কৃশ, কারো বায়ু মিলনোৎসুক প্রিয়ের মতো চাটুকার
কারও বায়ুতে যুবতীর জলকেলির সৌরভ ভেসে আসছে।    (অনুবাদ বুদ্ধদেব বসু)
আমরা বলি নদীমাতৃক দেশ। নদী নারীর মিল মাতৃত্বেও। কারণ নদী তার মায়ায়, মমতায়, আদরে, সোহাগে, শাসনে  জড়িয়ে রেখেছে তার ঘর, তার দেশটিকে, তার পাশে চলতে থাকা জনপদসমূহকে। ঠিক যেমনটা নারী জড়িয়ে রাখে তার গোটা সংসারকে। আবেগ আর ভালবাসা দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যায় তার সম্পর্ককে। পুরুষ যদি হয় শক্তি তাহলে নারী হল শান্তির আশ্রয়।
‘ভালবাসলে নারীরা হয়ে যায় নরম নদী
পুরুষেরা জ্বলন্ত কাঠ’
(পূর্ণেন্দু পত্রী)
বৈপরীত্য এমনই। তাই নদী তাঁর পাড় ধরে জেগে থাকা জনমানসের পরম শান্তির আশ্রয়স্থল হয়ে ওঠে। তাকে কেন্দ্র করেই গড়ে ওঠে সভ্যতা। এপার ভাঙে ওপার গড়ে নদী। পুরনো পাড় ছেড়ে নতুন পাড় খোঁজে। তবু পুরনোকে নদী কখনও ভোলে না। বারবার পুরনো পাড়েই ফিরে আসে। এই যে নদীর ধারাবদল আর ভাঙাগড়ায় এটাই চলে নারীর জীবন জুড়েও। নারীর জীবনে সৃষ্টি বা গড়ার আনন্দ নদীর শান্ত জলোচ্ছ্বাসের মতোই। জীবনের প্রাথমিক পর্যায়ে নিজের পরিবারের সঙ্গে থাকার পর পুরনো, সংসার, সম্পর্ক, একাত্মতা ত্যাগ করে সে যায় নতুন সংসারে। তবুও সে পুরনো পরিবারের টান ভুলতে পারে না। দুই পরিবার ঘিরেই আবর্তিত হতে থাকে তার জীবন। নদীর মতোই সে উদ্ভীন্নযৌবনা। নদীর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে নারীর যৌবনকেও। নদীর যেমন প্লাবন আসে দুই কূল ভাসিয়ে নিয়ে যায় ঠিক একইভাবে নারীর দেহেও যৌবন আসে। যার তোড়ে অনেক হিসেবনিকেশ উল্টে যায়। আর তাই নদীর বাঁকের সঙ্গে নারীর যৌবনের বাঁক মিলেমিশে এক হয়ে যায়।
নদীর সঙ্গে প্রিয়ার সাদৃশ্য খুঁজে পেয়েছিলেন কবি জীবনানন্দ দাশ। প্রিয়ার তিনি উদ্দেশ্যে বলেছিলেন…
পৃথিবীতে ম্রিয়মাণ গোধূলি নামিলে / নদীর নরম মুখ দেখা যাবে-মুখে তার দেহে তার কতো মৃদু রেখা তোমারি মুখের মতো (ঘাসের ভিতরে যেই)
জীবনানন্দ দাশের কাব্যে নদী নারী এমনভাবে সম্পৃক্ত যে এদের ছাড়া পৃথিবীর রূপ বর্ণনা করাই যেন সম্ভব নয়। নদী এবং নারী ছাড়া কবিরা অচল। নদী গানের জন্ম দেয়, নদী কবিতার জন্ম দেয় আবার নারীও। আনন্দ-বিরহের-ভালবাসার সাক্ষী নদী আবার নারীও। শিল্পের অনুপ্রেরণা নদী আর নারী। কবি জসীমউদ্দদীন তাঁর ভগ্ন প্রেম কবিতায় লিখেছেন—
প্রেমের তটিনী বড় বাঁকা সখি, বাঁকা এর পথ-ঘাট/এ দেশেতে সখি,
জলের ডিঙ্গা ফেরে ডাঙ্গার বাঁট।
নদী ও নারী নানাভাবে সৃষ্টির প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। আবহমান কাল ধরে নদী আর নারীকে নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য কাব্য, কথা, গান। এভাবেই নদীর সঙ্গে নারীর আর নারীর সঙ্গে নদীর সম্পর্কের ভিন্ন মাত্রা তৈরি হয়েছে। দুই কূল প্লাবিত নদীর মধ্যে যেমন নারীকে দেখেন কবি ঠিক তেমনি নদীর শীর্ণ শরীর, শুকিয়ে যাওয়া স্রোতে  বিগত যৌবনা নারীর অবয়ব ফুটে ওঠে। যৌবনবতী নারী বা বিগতযৌবনা বৃদ্ধা যেন নদীরই নানা সময়ের প্রতিরূপ। নদীর সঙ্গে নারীর যেন প্রতি পদে পদে মিল। মিল নানা বয়সের। তাই নদী কখনও যৌবনবতী নারী, কখনও চঞ্চলা, কখনও কিশোরী, বেগবতী। নদী আর নারীর সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। প্রবহমানতার শেষ নেই তার।
নারী আর নদীকে আধুনিক কবি এতটাই মিলিয়ে ফেলেন যে তাদের আর আলাদা করে চিহ্নিত করা যায় না। প্রিয় নারীর জন্য যে তৃষ্ণা, প্রিয় নদীর জলেরও ঠিক সেই তৃষ্ণার অনূভূতি থাকে। দুটোকে এক করে নদী আর নারী চলে আসে একই সরলরেখায়। সৌন্দর্য, অস্তিত্ব আর শরীরী সত্তায়, আধ্যাত্মিকতায় দুই পরস্পর পরস্পরের প্রতীক।  স্বাধীনতা, উচ্ছলতা, জীবন, উর্বরতার প্রতীক নদী। আর নারী! সেও তো জীবন। চঞ্চল, সৃষ্টিতে সক্ষম চালিকা শক্তি।
নদী এক নেটওয়ার্ক দেশ, গ্রাম, মাঠ মরু-প্রান্তরকে জুড়ে রাখে। ভারতের মতো নদীমাতৃক দেশে পুরুষ এবং নারীর মতোই নদ এবং নদীর সহাবস্থান। নদের গুরুত্ব যেমন এখানে আলাদা নদীর স্থানও আলাদা। নদীর বাঁকে বাঁকে লুকিয়ে রয়েছে অনাবিল সৌন্দর্যের যাত্রপথ। যে যাত্রাপথ আমাদের মন্ত্রমুগ্ধ করে। উত্তরাখণ্ডের কুমায়ন অঞ্চলে হিমালয় পাদদেশের নৈসর্গিক পাহাড়ি শৈলশহর নৈনিতাল ও তার আশপাশের বিস্তীর্ণ সবুজ শ্যামলিমার মাঝে রয়েছে ছটি শান্ত স্নিগ্ধ মায়াময় নদী। নৈনিতাল ভারতের ‘লেক ডিস্ট্রিক্ট’ নামে পরিচিত। এটি উত্তর ভারতের অন্যতম সুন্দর হিল স্টেশন। তিনদিকে পাহাড়ে ঘেরা নৈনিতালের চারপাশে সুন্দর লেক ‘নয়না তাল’ অবস্থিত। তাই এর এমন নাম। সেই ছয় নদী ঘিরে আবর্তিত নৈনিতাল তথা উত্তরাখণ্ডে সুন্দর প্রকৃতি। যে নদীগুলোকে আবিষ্কার এবং আত্মস্থ করতে করতেই ঘোরা হয়ে যাবে সম্পূর্ণ নৈনিতাল তথা উত্তরাখণ্ড ও কুমায়নের একটা অংশ।
কোসি নদী
নৈনিতালের মনোরম উপত্যকায় স্থিত, কোসি নদীকে কোশি, কৌশিকী নদীও বলে। আবার স্থানীয়রা এই নদীকে ভালবেসে বলে কোশিলা। কুমায়ন অঞ্চলের খুব গুরুত্বপূর্ণ নদী এই কোসি। রামগঙ্গা নদীরই একটি উপনদী। কোসি নদীর উৎপত্তি ধারাপানি থেকে। সেখান থেকে প্রবাহিত হয়ে সোমেশ্বর এবং আলমোড়া শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে। আবার এই নদীটাই বয়ে গেছে নেপাল আর চিনের মধ্যে দিয়েও। কোসির স্ফটিকস্বচ্ছ জলে রয়েছে এক মন্ত্রমুগ্ধতা। এই নদীতট ধরে অনেকটা অংশ জুড়ে নৈসর্গিক প্রকৃতির মায়া। সেই মায়ার জগতে হাঁটতে বা পিকনিক করতে এক অন্য অনুভূতি আসে মনে। অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীরা রিভার রাফটিং করে দিনের অনেকটা সময় কাটিয়ে ফেলতে পারে এখানেই। আর দেখতে যেতে পারে করবেট ন্যাশনাল পার্ক, গর্জিয়া দেবীর মন্দির, বেতাল ঘাট।
গৌলা নদী
নৈনিতালকে আরও রূপসী করে তুলেছে এই গৌলা নদী। উত্তরাখণ্ডের নৈনিতালের অন্যতম শহর হলদোয়ানি। কুমায়নের সবচেয়ে বড় শহর এটি। এখানকার সর্ববৃহৎ আর্থিক, বাণিজ্যিক কেন্দ্র। বহু মানুষের বসবাস। তাই এই নগরকে কুমায়ুনের প্রবেশদ্বারও বলে। এই হলদোয়ানির নৈসর্গিক প্রকৃতির, নির্জন মনোরম স্থানটি হল গৌলা নদীতট। বর্ষার দিনে গৌলা নদীর ভয়ঙ্কর সুন্দর রূপ দেখে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে যান সকলে। এই নদী আবার সোনার নদী নামেও পরিচিত। সাত্তাল এলাকা থেকে প্রবাহিত হওয়া এই নদীর জলে জানুয়ারিতে একটু ভাটা পড়ে। পাহাড়পানি উপত্যকা হীরাপানি থেকে সৃষ্টি  হয়ে কাঠগুদাম, হলদোয়ানি, ইচ্ছা পেরিয়ে দক্ষিণদিক দিয়ে আবার, রামগঙ্গা নদীতেই মিলেছে গৌলা বা গোলা নদী। এই নদীর তটবর্তী শান্ত সুন্দর নির্জন পরিবেশে মন আত্মস্থ হবেই আধ্যাত্মিক চিন্তায়।
রামগঙ্গা নদী
গঙ্গা নদীর এক উপনদী এই রামগঙ্গা। নৈনিতালের অভয়ারণ্য এলাকা জিম করবেট জাতীয় উদ্যানের মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে এই রামগঙ্গা নদীটি। নেমেছে সমতলে। হিমালয়ের শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্যের সাক্ষী এই রামগঙ্গার তটবর্তী অঞ্চল। অদূরবর্তী রানিখেত,  জিম করবেট জলপ্রপাত আরও সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে স্থানটির। আর পর্যটকদের মুগ্ধ করবে রামগঙ্গার জল আর জঙ্গলের বাসিন্দারা। জলে প্রচুর রংবেরঙের মাছ, ঘড়িয়াল, কুমির, কচ্ছপ আর জঙ্গলে বাঘ, হাতি, হরিণ প্রকৃতি অনন্য সম্পদ। জলের চারপাশ ঘিরে ইউরোপ আর মধ্য এশিয়া থেকে উড়ে আসা পরিযায়ী পাখিদের মেলা এক অপরূপ দৃশ্যসুন্দর অভিজ্ঞতা। বোট নিয়ে রামগঙ্গা সফরে এক বিচিত্র অভিজ্ঞতা হয় পর্যটকদের। গোটা জাতীয় উদ্যানের সৌন্দর্য অনুভব করা যায়।
গোমতী নদী
গোমতী নদীর তীরবর্তী নৈনিতাল যেন এক মন্ত্রমুগ্ধ প্রাকৃতিক চমক। ভারতের পবিত্র নদীগুলোর অন্যতম এই গোমতী। অনেক পুরাণগাথা রয়েছে এই নদী ঘিরে। গঙ্গার শাখা এই গোমতী নদী উত্তরপ্রদেশের পিলভিটের গোমতী তাল থেকে উৎপন্ন হয়ে বারাণসীর অদূরে কেথিতে আবার গঙ্গাতেই মিশে গেছে। পুরাণ অনুসারে ঋষি বশিষ্ঠের কন্যা হলেন গোমতী। শ্রীমদ্ভাগবতে বলা হয় এই নদীতে স্নান করলে নাকি সব পাপ ধুয়ে যায়, মোক্ষ মেলে। কথিত আছে, রাবণকে মারার পর রামচন্দ্র ব্রাহ্মহত্যার পাপ থেকে মুক্তি পেতে গুরু বশিষ্ঠের নির্দেশে গোমতীতে স্নান করেছিলেন।
এই গোমতী নদী নৈনিতাল আশপাশ জুড়ে বয়ে চলে সেখানকার গ্রামজীবন, উপত্যকার এক শান্ত নিরিবিলি কলতানহীন জীবনকে উপলব্ধি করায়। বিভিন্ন শহর দিয়ে বয়ে চলা এই নদীর তীরে রয়েছে অসংখ্য মন্দির এবং ঘাট। গোমতীতে নৌকাবিহার নতুন অন্বেষণে হারিয়ে যেতে মুহূর্ত লাগবে না।
সুয়াল নদী
হিমালয়ের কুমায়ুন পর্বতের দক্ষিণপ্রান্তের শৈলশহর আলমোড়ার মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে এই সুয়াল নদীটি। সুয়ালের আর এক নাম শাল্মলী নদী। এখান দিয়ে বয়ে গেছে কোসি নদীও। নৈনিতালের অদূরবর্তী ঘোড়ার নালের আকৃতির শহর আলমোড়া সুয়াল নদী, কোসি নদী, ফার আর পাইন গাছের শান্ত নির্জনতা দিয়ে ঘেরা। সেই নির্জনতা, পর্যটক থেকে স্থানীয়দের শান্তি এবং স্বস্তির আস্তানা। ক্যাম্পিংয়ের আদর্শ জায়গা। প্রবাহিত জল এবং পাখির কিচিরমিচির শব্দ আশপাশের প্রতিটি হৃদয়কে স্পর্শ করে। হিমালয়ের তুষারাবৃত শৃঙ্গগুলোর অনাবিল সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় এই অংশ থেকে। হাইকিংয়ের জন্য আদর্শ এই  সুয়ালনদী তটবর্তী বিস্তীর্ণ পথ।
কালসা নদী
নৈনিতালের মনোরম নীরব উপত্যকা অর্থাৎ সাইলেন্ট ভ্যালিটি  রয়েছে কালসা নদীর ধারেই। যেন একটি লুকানো রত্ন। হিমালয়ের কোলে ঘন শ্যামলিমার মাঝে গভীর, গহীন আদিম অরণ্যভূমে মনমুগ্ধকর গ্রামের বিস্তীর্ণ ল্যান্ডস্কেপ এই কালসা নদীর ধার বেয়েই। শান্ত, নিবিড় জনপদ। আদিম জাঁকজমকের সাক্ষ্য এই কালসা নদী। তুষার-ঢাকা পাহাড় থেকে জন্ম নেওয়ার পরে ঘন বন এবং মনোমুগ্ধকর গ্রামগুলির মধ্যে প্রবাহিত কালসা নদী হিমালয়ের স্নিগ্ধ, সবুজ জীবনের এক অনন্য নিদর্শন। এই নদীর জল এতটাই স্বচ্ছ যে জলের তলার প্রতিটা ছবি চোখে ধরা পড়ে। এখনও আধুনিকতা স্পর্শ করেনি এই অঞ্চলে। নদীর চারপাশ পাখপাখালির কলতান পাখিপ্রেমীরা পেয়ে যাবেন তাঁদের ক্যামেরাবন্দির করার অনবদ্য বিষয়। ফিশিং, ট্রেকিং, প্যারাগালাইডিং ক্যাম্পেনিং-এর আদর্শ স্থান। পর্যটকদের অ্যাডভেঞ্চারের নেশা পূরণ করবে শান্ত পাহাড়ী নদী কালসা। আবার অ্যাডভেঞ্চারকে দূরে রাখা মানুষদের জন্য এই শান্ত নদীর ধার হয়ে উঠতে পারে এক নির্ঝঞ্ঝাট সান্ত্বনা।

Latest article