মহানগরীতে দূষণের দাপট প্রতিরোধে বৈদ্যুতিক যানের চাহিদা বেড়ে চলেছে দ্রুতহারে। শুধু বৃহত্তর কলকাতা বা তার লাগোয়া অঞ্চলই নয়,গোটা রাজ্যেই জনপ্রিয়তা বেড়ে চলেছে ইলেক্ট্রিক গাড়ির। দূষণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের হাতিয়ার হিসেবে বিদ্যুৎ-চালিত যানকে মানুষের আরও কাছাকাছি পৌঁছে দিতে নেওয়া হচ্ছে বিশেষ উদ্যোগ।
আরও পড়ুন- ত্রিপুরায় এমন তৃণমূল আগে দেখিনি! বিজেপির সুদীপ রায় বর্মনের মন্তব্য ঘিরে তরজা
রাজ্যে প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে এরজন্য বেছে নেওয়া হয়েছে নিউটাউনকে। অত্যাধুনিক এই স্মার্ট সিটিকে বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎকর্ষ কেন্দ্র হিসেবে তুলে ধরার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে সরকারিস্তরে। এরই অঙ্গ হিসেবে সেপ্টেম্বরেই আয়োজন করা হয়েছে এক অভিনব কার্নিভালের। ইকোপার্কে এই কার্নিভাল শুরু হবে ২৪ সেপ্টেম্বর। চলবে ২৬ তারিখ পর্যন্ত। এখানেই শেষ নয়, বৈদ্যুতিক গাড়ির এক রোড-শো ডিসেম্বরে পরিক্রমা করতে পারে শহরের পথ।
সংখ্যায় কম হলেও, মহানগরীর রাজপথে এখন প্রায়ই চোখে পড়ছে নীল রঙের বৈদ্যুতিক বাস। বিশেষ করে নবান্ন-সেক্টর ফাইভ-নিউটাউনের মধ্যে চলাচল করা এই বাসগুলি ভালোই যাত্রী টানছে। ঝাঁকুনি কম, শীততাপ নিয়ন্ত্রিত এই বাসে জার্নিও বেশ আরামদায়ক। অন্যান্য রুটেও এই বাসের চাহিদা বাড়ছে। যাত্রীস্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখেই তাই এ ব্যাপারে বিশেষভাবে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে নিউটাউন-কলকাতা উন্নয়ন কর্ত্তৃপক্ষ। সম্প্রতি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এনকেডিএ-র বৈঠকে। এরমধ্যে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ, নিউটাউনকে বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎকর্ষ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে। হিডকো সূত্রে জানা গেছে, এব্যাপারে সরকারি সংস্থা এবং পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার মধ্যে কাজের সমন্বয়ের জন্য একটি সাব-কমিটি গঠনের চিন্তাভাবনাও হচ্ছে। এই ধরনের গাড়িতে চার্জ দেওয়ার জন্য নয়া শহরে যে ৮টি চার্জিং স্টেশন রয়েছে, সেগুলি খুঁজে নেওয়ার সুবিধের জন্য গুগল ম্যাপের অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন-রাজ্যের উপনির্বাচন নিয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ বৈঠক আজ
রাজ্য সরকারের লক্ষ্য, ২০২২এর মধ্যেই কয়েক লক্ষ বৈদ্যুতিক গাড়ি রাস্তায় নামানো। পরিবেশ-বান্ধব এই গাড়ি কিনতে মানুষকে উৎসাহিত করতে সহজশর্তে ঋণদানের জন্যও বিভিন্ন ব্যাঙ্ককে অনুরোধ জানানো হবে। গাড়ির অনলাইন অর্ডার এবং ডেলিভারির সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সাধারণ গাড়িকে বৈদ্যুতিক গাড়িতে রূপান্তরিত করার নির্দেশিকা তৈরি হবে কিছুদিনের মধ্যেই। গুরুত্ব বাড়ছে ই-ট্যাক্সিরও। নতুন আবাসনগুলিতে চার্জের ব্যবস্থা রাখা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এ ছাড়া, চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে সরকারি ডিপোতেও। বাড়িতেও এই পরিকাঠামো প্রস্তুত রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। জাতীয় সড়কে ২৫ কিমি অন্তর চার্জিং স্টেশন গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে বিদ্যুৎ দফতর। সব মিলিয়ে দূষণের বিরুদ্ধে লড়াইতে এক শক্তিশালী হাতিয়ার হতে চলেছে ইলেক্ট্রিক কার।