প্রতিবেদন : বিজেপির রাজ্যে রাজ্যে বাংলা ও বাঙালিদের হেনস্থা নিয়ে ফের একবার গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নিউ টাউনের বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারে আবাসন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কেন্দ্র ও ডাবল ইঞ্জিন রাজ্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে তিনি বলেন, বাংলায় কথা বললেই ডিপোর্টের চক্রান্ত মানব না। বাংলায় কথা বললেই রোহিঙ্গা! বাংলায় কোথা থেকে এল রোহিঙ্গারা? রোহিঙ্গারা তো বাংলাই জানে না! প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, আমরা মানুষে মানুষে ভেদাভেদ করি না। আমরা সব ভাষাকে সম্মান করি। আজ একটা নোটিফিকেশন করে বলছে, বাংলা ভাষায় কথা বললেই তাদের ডিপোর্ট করে দাও। ওরা জানে না বাংলা ভাষায় কথা বলার সংখ্যাটা সারা এশিয়ায় দ্বিতীয় আর সারা পৃথিবীতে পঞ্চম। বিজেপিকে নিশানায় তিনি বলেন, ভিন রাজ্যের দেড় কোটি মানুষ এখানে কাজ করে। এখানে রোহিঙ্গা কোথা থেকে এল? ওরা তো মায়ানমারের। ওরা বাংলা কীভাবে জানবে? মিথ্যাচার করবেন না। আমরা তো কখনও বলি না, তাহলে আপনারা কেন বলবেন— বাংলায় কথা বললে বাংলাদেশি!
আরও পড়ুন-ফাঁসির ৩ সাজাপ্রাপ্ত ১১ বছর পর বেকসুর, জয়ন্তী দেব হত্যা-মামলা
মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, যারা আগে বাংলায় জন্মেছিল তখন ইউনাইটেড ইন্ডিয়া ছিল। তারা বাংলাদেশি নয়, তারা পুরোপুরি ভারতীয়। তাঁর কথায়, কে তোমরা হরিদাস পাল যে, ১৭ লাখ মানুষের নাম বাদ দিয়ে দেবে? তারা বাংলার ভোটার। তাদের নাম কাটার অধিকার তোমাদের কে দিয়েছে? রাজনীতি করতে হলে প্রথমে আপনার মনটাকে ঠিক করতে হবে। সরকার চালাতে গেলে মাথাটাকে খাটাতে হবে। মগজকে মরুভূমি করলে হবে না। মগজকে মুক্ত আকাশে খুলে দিতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিউ টাউনে দুটি হাউজিং কমপ্লেক্স ‘নিজন্ন’ ও ‘সুজন্ন’, একটি মাল্টিলেভেল কার পার্কিং ‘সুসম্পন্ন’ এবং ওপেন এয়ার থিয়েটার, চিলড্রেন পার্ক, ক্যাফেটেরিয়া ‘তরণ্য’র উদ্বোধন করে মু্খ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা কেন্দ্রের বঞ্চনা সত্ত্বেও গরিবদের জন্য বাড়ি দিয়েছি। দুঃস্থ, সংখ্যালঘু মহিলাদের জন্য প্রায় ২ লক্ষ ৭ হাজার বাড়ি আলাদা করে করে দেওয়া হয়েছে। তার জন্য ২৫০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। চা-সুন্দরী এক্সটেনশন প্রকল্পে বাড়ির টাকা দেওয়া হচ্ছে ২৪ হাজারের বেশি পরিবারকে।
এছাড়াও অন্ডাল-জামুড়িয়া-বারাবনি এলাকায় ২৯ হাজার পরিবারকে পুনর্বাসন দেওয়া হবে। কয়লা খনি কেন্দ্রের বিষয়, তা সত্ত্বেও আমরা এই ব্যবস্থা করেছি, বাড়ি করে দেওয়া হয়েছে। বাড়ি তৈরির জন্য জমি আমরা দিয়েছি। এখানে পার্ক তৈরি হয়েছে, বিশ্ববাংলা কনভেনশন তৈরি হয়েছে। গাড়ি রাখার জায়গা ছিল না, মাল্টিপারপাস কার পার্কিং করা হল। নাম সুসম্পন্ন। আট তলার দু-একর জমির উপর ১৫০০-এর বেশি গাড়ি রাখতে পারবে। এ জন্য খরচ হয়েছে ১১৪১ কোটি টাকা। এছাড়াও রাজ্য জুড়ে একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্প তৈরি হয়েছে।