সিডনি, ২ জানুয়ারি : বিষেন সিং বেদিকে দরকার ছিল এইসময়। তিনি সিডনি জয়ের টোটকা দিতে পারতেন মুষড়ে পড়া ভারতীয় দলকে। মনে হতে পারে হঠাৎ বেদি কেন? এইজন্য যে, এসসিজিতে ভারতের একমাত্র টেস্ট জয়ের অধিনায়ক ছিলেন তিনি। সেটা ১৯৭৮-এর ঘটনা।
শুক্রবার সিডনিতে ১৩ নম্বর টেস্ট ম্যাচে নামছে ভারত। বেদিকে যখন আর পাওয়ার উপায় নেই, গম্ভীররা চাইলে চার বছর আগের এক টেস্ট ম্যাচ থেকে জোশ খুঁজতে পারেন। ’২১-এ এই জানুয়ারিতে হয়েছিল সিরিজের তৃতীয় টেস্ট। নাটকীয়ভাবে সেই টেস্ট বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন হনুমা বিহারী (১৬১ বলে ২৩ নট আউট) ও রবিচন্দ্রন আশ্বিন (১২৮ বলে ৩৯ নট আউট)। দুজনে মিলে ৪২ ওভার খেলে ম্যাচ অবিস্মরণীয় ড্র করে দেন।
আরও পড়ুন-জেলাস্তরের একদিনের এমএসএমই শিবিরে উদ্যোগপতিদের ব্যাপক সাড়া মিলল বর্ধমানে
হনুমা জাতীয় দল থেকে হারিয়ে গিয়েছেন। অশ্বিন ব্রিসবেন থেকে ব্যাগ গুছিয়ে বাড়ি চলে গিয়েছেন। আর সেই ম্যাচে ৭৭ রান করা চেতেশ্বর পূজারা সিডনিতেই আছেন আপাতত। তবে কমেন্ট্রি বক্সে। ফলে দায়িত্ব পড়ে থাকল ঋষভ ও শুভমনের উপর। দুজনেই সেই ম্যাচে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে রান করেছিলেন।
সিরিজে ১-২ পিছিয়ে থাকা দলকে সিডনিতে জেতার জন্য যে দুই মহাতারকার উপর ভরসা করতে হত, তাঁরা এখন ফর্ম হারিয়ে বিপজ্জনক জায়গায়। বিরাট কোহলি তাও প্রথম টেস্টে সেঞ্চুরি করেছিলেন বলে তোপ ও সহানুভূতির মাঝামাঝি আছেন। কিন্তু রোহিত শর্মা তিন টেস্টের ছয় ইনিংসে ৩১ রান করে এমন এক জায়গায় অবস্থান করছেন যে, শোনা যাচ্ছে সিডনি টেস্ট থেকে তিনি নিজেই নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন।
বিরাট, রোহিত ও রাহুল রানে না থাকায় টপ অর্ডারের চাপ ফিরে আসছিল মিডল ও লোয়ার অর্ডারে। যশস্বী জয়সওয়াল উপরে একমাত্র ব্যাটার, যিনি বুক চিতিয়ে লড়াই করছেন। কিন্তু ওয়াশিংটন সুন্দর ছাড়া পরের দিকে আর কেউ তাঁকে সাহায্য করতে পারছে না। ঋষভ বারবার বেহিসাবি স্ট্রোক নিয়ে উইকেটে দিয়ে আসছেন। গাভাসকরের বকুনিও তাঁকে দমাতে পারেনি।
ভারত সিরিজে পিছিয়ে পড়লেও বুমরাকে নিয়ে ডনের দেশে ধন্য ধন্য পড়ে গিয়েছে। গ্লেন ম্যাকগ্রা বলেছেন, বুমরা না থাকলে সিরিজ একপেশে হয়ে যেত। গোটা দল যখন গুটিয়ে গিয়েছে, তখন একা লড়ে যাচ্ছেন তিনি। বুমরার হাতে বল উঠলে থরহরি কম্প লেগে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের মধ্যে। ফলে এটা বলে দিতে রকেট সায়েন্স লাগবে না যে, সিরিজ সমান-সমান করতে হলে বুম বুম বোলারই এক ও একমাত্র ভরসা ভারতের।
কিন্তু সিডনিতে আকাশ দীপকে পাওয়া যাচ্ছে না পিঠে টান ধরায়। এটা সমস্যা। তাঁর জায়গায় প্রসিধ কৃষ্ণ খেলেন কিনা সেটাই দেখার। গম্ভীর বলেছেন, খেলার আগে উইকেট দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে শুভমন গিলের প্রথম এগারোয় ফেরা নিশ্চিত। রোহিত অবসর না নিলেও শোনা যাচ্ছে দলকে জানিয়ে দিয়েছেন, সিডনিতে খেলবেন না। তাহলে যশস্বী আর শুভমন ইনিংস শুরু করবেন। তিনে আসবেন রাহুল।
প্যাট কামিন্স জানিয়ে দিয়েছেন, স্টার্কের খেলা নিয়ে কখনও সংশয় ছিল না। তিনি খেলবেন। কিন্তু মিচেল মার্শকে বাইরে যেতে হচ্ছে। তাঁর জায়গায় সিডনিতে অভিষেক হবে বিউ ওয়েবস্টারের। যেভাবে একসঙ্গে কামিন্সের দল জেগে উঠেছে, তাতে সিডনিতে নামার আগে সুবিধাজনক জায়গায় রয়েছে অজিরাই। কিন্তু শেষ দু’দিন বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। একটা রোমহর্ষক সিরিজের উপর যাতে জল না পড়ে, সেটাই এখন প্রার্থনা ভক্তদের।