প্রতিবেদন: নিউদিল্লি রেল স্টেশনের দুর্ঘটনা নিয়ে রেল মন্ত্রক যে মিথ্যাচার করছে, তার হাতে গরম প্রমাণ উঠে এসেছে রেলেরই অধীনস্থ নিরাপত্তা বাহিনী আরপিএফ-এর (RPF) রিপোর্টে৷ রেল মন্ত্রকের তরফে আগে দাবি জানানো হয়েছিল শনিবার রাতে নিউদিল্লি রেল স্টেশনে কোনও ভুল ঘোষণা করা হয়নি৷ নির্ধারিত প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেন ধরতে গিয়ে হুড়োহুড়ি করে পা পিছলে পড়ে আহত হয়েছেন অগণিত লোক৷ প্রাণ হারান ১৮ জন পুণ্যার্থী৷ এই দাবি নস্যাৎ করে আরপিএফের দাবি, শনিবার রাতের পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনার মূলে আছে রেলের ভুল ঘোষণা৷ পুরো ঘটনার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আরপিএফের রিপোর্টে দাবি, ঘটনার দিন শনিবার রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে রেলের মাইকে ঘোষণা করা হয়, নিউদিল্লি স্টেশনের ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে প্রয়াগরাজমুখী স্পেশাল ট্রেন আসছে। কিছু সময় পরে বলা হয় ট্রেনটি ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসছে। একই সময়ে নিউদিল্লি স্টেশনের ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে ছিল মগধ এক্সপ্রেস। আর ১৫ নম্বরে ছিল উত্তর সম্পর্কক্রান্তি এক্সপ্রেস।
আরও পড়ুন-বিজেপি রাজ্যে নেপালি ছাত্রীর রহস্যমৃত্যু, ভুবনেশ্বরে দিল্লির দূতাবাসের কর্তারা
অন্যদিকে, পূর্ব নির্ধারিত প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস ধরার জন্য ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়েছিলেন প্রচুর মানুষ। প্রয়াগের কুম্ভ স্পেশাল ট্রেন আসার ঘোষণা হওয়ার পরেই ১২-১৩ এবং ১৪-১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ওভারব্রিজে ওঠার চেষ্টা করেন যাত্রীদের একটা বড় অংশ। একই সময়ে দু’টি ওভারব্রিজের সিঁড়ি ধরে নামছিলেন মগধ এক্সপ্রেস, উত্তর সম্পর্কক্রান্তি এক্সপ্রেস এবং প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেসের অগণিত যাত্রী। সবার হুড়োহুড়ির মধ্যে অনেকেই সিঁড়িতে পড়ে যান। চোটও পান। আহত যাত্রীদের পায়ে মাড়িয়ে দিয়ে নিজেদের অজান্তে প্রাণ বাঁচাতে দৌড়োদৌড়ি শুরু করে দেন অন্য যাত্রীরা। আরপিএফের দেওয়া রিপোর্টের সাফ জানানো হয়েছে, প্ল্যাটফর্ম সংক্রান্ত ভুল ঘোষণার জেরে যাত্রীদের মধ্যে প্রবল বিভ্রান্তি তৈরি হয়। যার জেরে হয়েছে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। এর পাশাপাশি অন্য তথ্যও আসছে সামনে। রেলের দাবি ছিল দুর্ঘটনা হয়েছে শনিবার রাত ৯-১৫-য়। দমকল বিভাগের দাবি, ৯-৫৫ মিনিটে হয় দুর্ঘটনা। আবার আরপিএফের দাবি, দুর্ঘটনা ঘটেছে ৮-৪৮ মিনিটে। এই আবহে রেলের তদন্তে প্রকৃত সত্য সামনে আসবে কি না, তা নিয়েই ঘোর সন্দেহ।