বিধানসভায় ধুন্ধুমার-কাণ্ড, বিজেপির অসভ্যতা, চার বিধায়ক সাসপেন্ড,১০ নিরাপত্তাকর্মী জখম

বিধানসভার অন্দরে বিরোধী দল বিজেপির অসভ্যতা-অভব্যতার ট্র্যাডিশন চলছেই। যত দিন গড়াচ্ছে, বিজেপি বিধায়কদের উচ্ছৃঙ্খলতা বাড়ছেই।

Must read

প্রতিবেদন : বিধানসভার অন্দরে বিরোধী দল বিজেপির অসভ্যতা-অভব্যতার ট্র্যাডিশন চলছেই। যত দিন গড়াচ্ছে, বিজেপি বিধায়কদের উচ্ছৃঙ্খলতা বাড়ছেই। সোমবার সবকিছুকে ছাপিয়ে গিয়ে বিধানসভার মার্শাল ও নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে রীতিমতো মারামারিতে জড়ালেন বিজেপি বিধায়করা। এই ঘটনা যখন ঘটছে তখন বিরোধী দলনেতা দলবদলু গদ্দার অধিকারী বিধানসভায় ছিল না। খবর পেয়ে ভিতরে এসে দেখে ততক্ষণে বাকি বিজেপি বিধায়করা খবরের শিরোনামে চলে গিয়েছেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তখন নিজেই অভব্যতা শুরু করে। অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের টেবিলের সামনে গিয়ে প্রবল চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকে। গোটা ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে বিধানসভার অধিবেশন। আহত হলেন মার্শাল দেবব্রত মুখোপাধ্যায়-সহ ১০ জন নিরাপত্তাকর্মী। যার মধ্যে মহিলারাও রয়েছেন।

আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রী-বাংলাদেশ দূতের বৈঠক

অনেকের হাতেই ব্যাপক চোট লেগেছে। ব্যান্ডেজও করতে হয়েছে। গোটা ঘটনায় ব্যাপক ক্ষুব্ধ অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বারবার করে বিজেপি বিধায়কদের শান্ত হতে অনুরোধ করা সত্ত্বেও কেউই তাঁর কথা কানে তোলেননি।
শুধু তাই নয়, চূড়ান্ত অভব্য আচরণ করার কারণে চার বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষ, অগ্নিমিত্রা পাল, মনোজ ওরাওঁ এবং দীপক বর্মনকে এই সেশনের জন্য সাসপেন্ড করেন অধ্যক্ষ। কিন্তু তারপরে ওঁরা অধিবেশন কক্ষের ভিতর দাঁড়িয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন মার্শাল দিয়ে এই চারজনকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। মার্শালরা নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে অধ্যক্ষের নির্দেশ পালন করতে গেলে শুরু হয় ধুন্ধুমার কাণ্ড। যা গড়ায় মারামারিতে। মনোজ ওরাওঁকে পাঁজাকোলা করে বিধানসভায় থেকে বের করেন মার্শাল। গত সোমবারও অধিবেশন চলাকালীন সাসপেন্ড হয়েছিলেন বিজেপি বিধায়ক মনোজ ওরাওঁ।

আরও পড়ুন-বিধ্বংসী আগুন থেকে বাঁচাল দমকলবাহিনী

সেসময় প্রচণ্ড অভব্য আচরণ শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। চলে স্লোগান ও কাগজ ছেঁড়া। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিধানসভার মর্যাদা কীভাবে রক্ষা করতে হয় তা প্রতিদিনই আমি বিরোধী এবং শাসকদলের বিধায়কদের বলি। কিন্তু বিরোধী দলের বিধায়করা যে কাজ করেছেন তাতে বিধানসভার মর্যাদাহানি হয়েছে। আমি বলা সত্ত্বেও আমার কথা ওঁরা না শুনে হইচই করতে থাকেন। যেভাবে ওঁরা কাগজ ছিঁড়ছিলেন আমার তা অত্যন্ত খারাপ লেগেছে। আমার চেয়ার থেকে বলা সত্ত্বেও ওঁরা কথা শোনেননি। সরকারি দলের মুখ্যসচেতক চারজনের নাম দিয়ে সাসপেন্ড করার কথা বললে, আমি চার বিধায়ককে সাসপেন্ড করে বাইরে যেতে বললেও তাঁরা যাননি তখন মার্শাল ডেকে এঁদের বার করার নির্দেশ দিই। বিজেপি বিধায়করা বিধানসভার মার্শাল-সহ নিরাপত্তাকর্মীদের মারধর করেছেন। মেডিক্যাল পেপার আমার কাছে জমা দিয়েছেন ওঁরা। ১০ জন আহত হয়েছেন। বিরোধী দলনেতা আমার সামনে দাঁড়িয়ে চিৎকার করছেন। চশমা ভাঙার অভিযোগ করেছেন। আমি গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখব।
বিজেপি বিধায়করা দুটি মাইক, একটি টেবিল ভেঙেছেন। ঘটনার নিন্দা করেছেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও। অধিবেশন কক্ষের ভেতরেই মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস অধ্যক্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুরোধ করেন এই ঘটনার যথাযথ ব্যবস্থা নিতে। মন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্রের মন্দির এই বিধানসভাকে বিরোধীরা কুস্তির আখড়ায় পরিণত করেছে। বিধানসভার মর্যাদাহানি হচ্ছে।

Latest article