নয়াদিল্লি, ১১ নভেম্বর : নিউজিল্যান্ড যেভাবে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে গেল তার ভূয়সী প্রশংসা করলেন শচীন তেন্ডুলকর ও বীরেন্দ্র শেহবাগ। ড্যারিল মিচেল ও জিমি নিশামের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের উপর ভর করে ফাইনালে পা রেখেছে কিউয়িরা।
শচীন এই ম্যাচের পর বলেছেন, নিউজিল্যান্ড শুধু ম্যাচ জেতেনি, সঙ্গে হৃদয়ও জিতে নিয়েছে। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘‘কী অসাধারণ খেলা হল! নিউজিল্যান্ড আবার ম্যাচ জেতার সঙ্গে হৃদয়ও জিতে নিল। মিচেল দারুণ খেলল। আর ওকে সাহায্য করল কনওয়ে এবং নিশাম। বেয়ারস্টোর ঘটনা আমায় ২০১৯-এর ফাইনালে বোল্টের সেই ঘটনাকে মনে পড়িয়ে দিল।”
আরও পড়ুন :দক্ষিণেশ্বরের পরে এবার স্কাইওয়াক রুবির মোড়ে
বুধবারের ম্যাচে ইংল্যান্ডের ১৬৭ রান তাড়া করতে গিয়ে প্রথম তিন ওভারে ওপেনার গাপ্টিল ও অধিনায়ক উইলিয়ামসনকে হারিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। উইকেট দুটি তুলে নিয়েছিলেন ক্রিস ওকস। কিন্তু এরপর তৃতীয় উইকেটে মিচেল ও কনওয়ে ৮২ রান যোগ করে পরিস্থিতি সামলে নেন। তবে শেষদিকে ম্যাচের রঙ বদলে দেন নিশাম। শচীনের মতোই কিউয়িদের প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন শেহবাগও। ম্যাচের পর তিনি লিখেছেন, ‘‘এটাই বিশ্বকাপের সেরা ম্যাচ। ড্যারিল মিচেল কী খেলল! জিমি নিশাম হল গেমচেঞ্জার। অসাধারণ খেলেছে নিউজিল্যান্ড। ফাইনালে ওঠার জন্য তাদের অভিনন্দন।” প্রসঙ্গত, ২০১৯-এ ৫০ ওভারের বিশ্বকাপের ফাইনালে বেশি বাউন্ডারি মারার সুবাদে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইংল্যান্ড। আবুধাবিতে বুধবার সেই হারেরই জবাব দিলেন কিউয়িরা।
এদিকে ম্যাচ জিতিয়ে খুশি মিচেল এতদিন সবাই তাঁকে চিনতেন বিখ্যাত বাবার ছেলে হিসেবে। কিন্তু বুধবার রাতের ম্যাচের পর ড্যারিল মিচেলকে নিজের পরিচয়েই চিনবে লোকে। কিউয়ি ওপেনারের বাবা জন নিজে বিখ্যাত রাগবি খেলোয়াড় ছিলেন। রাগবি বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডকে কোচিংও করিয়েছেন। বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল দেখবেন বলে দেশে থেকে মরুদেশে উড়ে এসেছিলেন জন। গ্যালারিতে বসেই তিনি দেখলেন কীভাবে প্রবল চাপের মুখেও ছেলে অনড় থেকে দেশকে বিশ্বকাপ ফাইনালে তুলল। ম্যাচের সেরার পুরস্কার হাতে আবেগে ভেসে গেলেন ছেলেও। ড্যারিলের বক্তব্য, ‘‘অর্ধেক পৃথিবী পাড়ি দিয়ে বাবা এই ম্যাচটা দেখতে এসেছিলেন। তাঁর সামনে দেশকে জেতানোর মুহূর্তটা সত্যিই মধুর।’’ নিউজিল্যান্ডের জয়ের নায়ক আরও যোগ করেন, ‘‘এই পিচে বল পড়ে মন্থর গতিতে ব্যাটে আসছিল। তাই রান তাড়া করা খুব কঠিন ছিল। তবে জিমি নিশামের ঝোড়ো ইনিংস আমাদের সুবিধে করে দেয়। জানতাম একটা বা দুটো ওভারে বড় রান উঠলেই ম্যাচ ঘুরে যাবে। তাই শেষ পর্যন্ত ব্যাট করতে চেয়েছিলাম।’’
সতীর্থের প্রশংসায় পঞ্চমুখ কেন উইলিয়ামসনও। নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কোনও রাখঢাক না করেই বলেন, ‘‘চাপের মুখে নিজের চারিত্রিক এবং মানসিক দৃঢ়তার পরিচয় দিল মিচেল। অসাধারণ একটা ইনিংস খেলে দলকে ফাইনালে তুলল। তবে শুধু এই ম্যাচেই নয়, বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচেই ব্যাট হাতে ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।’’