প্রতিবেদন: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অসম্মানজনক ভাবে ভারতীয়দের দেশে ফেরানোর ঘটনা নিয়ে অসত্য তথ্য পরিবেশন করে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বিভ্রান্ত করেছেন রাজ্যসভাকে, এই অভিযোগ তুলে তাঁর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস দিলেন রাজ্যসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের ডেপুটি লিডার সাগরিকা ঘোষ৷ গত ২০ ফেব্রুয়ারি তৃণমূল সাংসদ সাগরিকা ঘোষ রাজ্যসভার চেয়ারপার্সনকে চিঠি লিখে এই নোটিসের কথা জানিয়েছেন৷ এই চিঠিতেই সাগরিকা ঘোষ অভিযোগ করেছেন, রাজ্যসভায় বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতীয় নাগরিকদের অসম্মানজনকভাবে দেশে ফেরানোর প্রসঙ্গে অসত্য কথা বলেছেন বিদেশমন্ত্রী৷ সাগরিকার কথায়, ৬ ফেব্রুয়ারি রাজ্যসভায় বিদেশ মন্ত্রী দাবি করেছিলেন ভারত সরকার লাগাতার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সুনিশ্চিত করছে যাতে মার্কিন মুলুকে অবৈধভাবে বসবাসকারী ভারতীয়দের অসম্মানজনকভাবে দেশে ফেরানো না হয়৷ বিদেশমন্ত্রীর এই দাবি পুরোপুরি অসত্য, অভিযোগ করেছেন সাগরিকা ঘোষ৷ লক্ষণীয়, তৃণমূল সুপ্রিমো বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ইস্যুতে মোদি সরকারের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেছেন।
আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে স্বনির্ভর বাংলা, রেকর্ড উৎপাদন, রাজ্যে প্রথম পেঁয়াজ সংরক্ষণ
অভিযোগের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সাগরিকা ঘোষের দাবি, ৬ ফেব্রুয়ারি রাজ্যসভায় দাঁড়িয়ে ভারতীয় নাগরিকদের দেশে ফেরানোর সময়ে সম্মান প্রদর্শন নিয়ে আশ্বাস দিয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী৷ তারপরেও ১৫ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় নাগরিকদের মার্কিন মুলুক থেকে ফেরানো হয়েছে অত্যন্ত অমানবিকতার সঙ্গে৷ ১১৬ জন ভারতীয় নাগরিক দেশে ফেরার পরে নিজেরাই জানিয়েছেন গোটা যাত্রাপথে কীভাবে তাঁদের হাতে পায়ে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে৷ এমনকি জনৈক পাঞ্জাবি ভদ্রলোক জানিয়েছেন যে তাঁর পাগড়ি জোর করে খুলে নেওয়া হয়েছে৷ মার্কিন মুলুকের ডিটেনশন ক্যাম্পে থাকাকালীন ভারতীয় নাগরিকদের উপরে অকথ্য অত্যাচার করা হয়েছে, তাঁদের পেট ভরে খাবার দেওয়া হয়নি৷ দিনের মধ্যে তাঁদের পাঁচবার চিপস আর জুস দেওয়া হত৷ এমনকি অনেককে তাঁদের ধর্মীয় আচারের বিরুদ্ধে আমিষ খাবারও পরিবেশন করা হয়েছে৷ মার্কিন মুলুকে থাকা অনেক ভারতীয় নাগরিক নিজেদের অজান্তেই ভিসা জালিয়াতিরও শিকার হয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন সাগরিকা ঘোষ৷ বিদেশমন্ত্রী সংসদের উচ্চকক্ষে দাঁড়িয়ে ভারতীয় নাগরিকদের সসম্মানে দেশে ফেরানোর কথা বললেও কেন ১১৫ জন ভারতীয়ের উপরে অকথ্য অত্যাচার করা হয়েছে ? প্রশ্ন তুলেছেন সাগরিকা ঘোষ৷ এই প্রসঙ্গেই তাঁর দাবি, গোটা বিষয়টিকে প্রিভিলেজ কমিটির কাছে পাঠিয়ে তদন্ত করে দেখা হোক বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর রাজ্যসভা কক্ষে দাঁড়িয়ে অসত্য বক্তব্য রেখেছেন কি না৷