ডবল ইঞ্জিনের নমুনা! মোদির গুজরাতে স্বেচ্ছামৃত্যুর আর্জি ৬০০ মৎস্যজীবীর

প্রচারসর্বস্ব প্রধানমন্ত্রীর সবকা সাথ সবকা বিকাশ যে আদতে মিথ্যাচার তা প্রমাণ করে দিল তাঁর নিজের রাজ্য গুজরাতই৷

Must read

প্রতিবেদন : প্রচারসর্বস্ব প্রধানমন্ত্রীর সবকা সাথ সবকা বিকাশ যে আদতে মিথ্যাচার তা প্রমাণ করে দিল তাঁর নিজের রাজ্য গুজরাতই৷ মোদির গুজরাতে বিজেপির ডবল ইঞ্জিন সরকারের এমনই নমুনা যে রাজ্যের কয়েকশো মৎস্যজীবী হাইকোর্টের কাছে আত্মহননের আর্জি জানিয়েছেন৷ বেনজির এই ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে৷ স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদনকারীরা আদালতে অভিযোগ জানিয়েছেন, সংখ্যালঘু হওয়ার কারণে বিজেপি শাসিত গুজরাতে তাঁদের এতটাই লাঞ্ছিত হতে হচ্ছে যে বেঁচে থাকাই অর্থহীন৷

আরও পড়ুন-এবার পাল্টি খেল কেন্দ্র

অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী মোদির দল বিজেপি বরাবরই একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব পোষণ করে। রাজ্যের বিজেপি সরকারের বিদ্বেষ ও বিভাজনের কারণে চরম লাঞ্ছনার শিকার হয়ে গুজরাতের পোরবন্দরে গোসাবারা জলাভূমির ৬০০ জন সংখ্যালঘু মৎস্যজীবী গুজরাত হাইকোর্টের কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানিয়েছেন। মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতিবিজড়িত পোরবন্দরের মৎস্যজীবীদের এই আবেদনের প্রেক্ষিতে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, বিজেপি শাসিত গুজরাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর কী নিদারুণ অবিচার ও বৈষম্য চলছে। মোদি-শাহর গুজরাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কার্যত কোনও অধিকারই নেই। তাঁরা যেন দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক। বিজেপির এই বৈষম্য ও বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে বরাবরই সরব হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করে গোটা দেশের কাছে পশ্চিমবঙ্গকে মডেল হিসেবে তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন-উলটপুরাণ! নাগরিকত্ব না পেয়ে ফিরতে হল পাকিস্তানেই

মৎস্যজীবীদের নেতা আল্লারাখা ইসমাইল গত সপ্তাহে গুজরাত হাইকোর্টের কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন পেশ করেন। তিনি জানিয়েছেন, মোদি-শাহদের চরম বৈষম্যের কারণে তাঁদের আর্থিক অবস্থা ক্রমশ খারাপ হয়েছে। বিজেপি সরকারের পরিকল্পিত বিদ্বেষমূলক ব্যবহারের কারণে তাঁদের বেঁচে থাকাই কঠিন। সে কারণেই স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন। গোসাবারা মুসলিম ফিশারমেনস সোসাইটির তরফেও হাইকোর্টে একই আবেদন জানানো হয়েছে। সংগঠনের অভিযোগ, গুজরাতে বিজেপি সরকারের শাসনে বেছে বেছে সংখ্যালঘু মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের মানুষজনকে বঞ্চনা ও লাঞ্ছনা করা হচ্ছে। শুধুমাত্র সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের হওয়ার কারণেই কয়েকশো মৎস্যজীবী কোনওরকম সরকারি সহায়তা পান না। উল্টে পদে পদে তাঁদের নানাভাবে বিপাকে ফেলার চেষ্টা করা হয়। মাছ ধরার জন্য মৎস্য দফতরের বিশেষ অনুমতিপত্র তাঁদের আছে।

আরও পড়ুন-শাহিনবাগে বুলডোজার

কিন্তু তারপরেও গোসাবারা এবং নভি বন্দরে তাঁদের নোঙর করতে দেওয়া হয় না। বিজেপি গুজরাতের ক্ষমতা দখল করার পর থেকেই তাঁদের প্রতি এ ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ শুরু হয়েছে। ২০১৬ সালের পর এই বৈষম্য আরও বেড়েছে। আবেদনকারী মৎস্যজীবীদের আইনজীবী জানিয়েছেন, ২০১৬ সাল থেকে গোসাবারা বন্দরে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের মৎস্যজীবীদের নৌকা চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যদিও হিন্দু মৎস্যজীবীদের সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করছে। বঞ্চিত মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, তাঁদের উপর বিজেপি সরকার কার্যত বুলডোজার চালাচ্ছে৷ সরকারি বৈষম্যের কারণে তাঁদের জীবন–জীবিকা ভয়াবহ সঙ্কটের মধ্যে৷ তাই তাঁরা স্বেচ্ছামৃত্যুই চান৷ এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিরোধীদের অভিযোগ, এটাই হল মোদি-শাহর উন্নয়নের গুজরাত মডেল। এই হল বিজেপি রাজ্যের ডবল ইঞ্জিন সরকারের নমুনা৷

Latest article