ব্যুরো রিপোর্ট : প্রায় দু’বছরের গৃহবন্দি দশা থেকে মুক্তি! স্বাভাবিকভাবেই পড়ুয়াদের মধ্যে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস চোখে পড়ল পাহাড় থেকে সমতলের সমস্ত স্কুলে। অনেকে তো বন্ধুদের টানে আগেভাগেই চলে এসেছে। কোথাও ফুল-মিষ্টি ও আবিরে বরণ করা হল তাদের। প্রতিক্ষেত্রেই প্রাঙ্গণ ও শ্রেণিকক্ষ জীবাণুমুক্ত করে কোভিড বিধি মেনে চালু হল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রায় সব স্কুলেই পাশাপাশি অনলাইন ক্লাসও হয়েছে। রামপুরহাট মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ বুদ্ধদেব মুখোপাধ্যায় জানান, বিএসসি ও কমার্সের সব সেমিস্টার খুলছে। বিএ-র তৃতীয় সেমিস্টার। ২৫-৩০ জনে সীমিত থাকায় স্নাতকোত্তর ক্লাসে বাংলা, ইংরেজি ও সংস্কৃতের ক্লাস খুলেছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ইউনিটের পিঙ্কি নায়েক ও ঋতুপর্ণা সিংহ জানান, তাঁরাও মাস্ক ও স্যানিটাইজার দিয়েছেন।
রামপুরহাট বালিকা বিদ্য্যালয়ে ছাত্রীদের মাথায় ফুল ছিটিয়ে স্বাগত জানানো হয়। আসানসোল ও দুর্গাপুর মহকুমার সমস্ত সরকারি স্কুলে সকাল আটটা থেকে নবম ও একাদশ শ্রেণি ও সকাল ন’টা থেকে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু করা হয়েছে। দুর্গাপুরের ডাঃ বি সি রায় ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে প্রথম দিন শুধু প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস হয়েছে।
আরও পড়ুন : চৈতন্যভূমি নবদ্বীপে শুরু রাসের প্রস্তুতি
কাঁকসা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উজ্জ্বল নন্দী জানান, পড়ুয়াদের উপস্থিতি ছিল প্রায় ৪০ শতাংশ। জেমুয়া ভাদুবালা বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক জইনুল হক এবং বিজরা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক কাজি নিজামুদ্দিন জানান, পড়ুয়াদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা গেছে।
জঙ্গলমহলের ঢেঙাআম স্কুলের ইতিহাস শিক্ষক দিলীপকুমার ঘোষ বললেন, ‘‘ফের বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ পড়ুয়াদের কলকাকলিতে ভরে উঠেছে, ভীষণ আনন্দ হচ্ছে।’’ পড়ুয়াদের ফুল আর কলমে বরণ করা হয়। বাঁকুড়া জেলা স্কুল এবং জেলা মিশন গার্লস স্কুলে পড়ুয়াবরণ দৃশ্য ছিল নয়নাভিরাম।
স্কুল-কলেজ খুলতেই ছাত্রছাত্রীদের সচেতন করতে পথে রঘুনাথপুরের প্রাক্তন বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউড়ি। ছাত্রছাত্রীদের মাস্কও দিলেন। ঝাড়গ্রাম শহরের নামী স্কুল কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউট, আরবিএম রাষ্ট্রীয় বালিকা বিদ্যালয়, সাঁকরাইলের রোহিণী সিআরডি উচ্চ বিদ্যালয়-সহ ঝাড়গ্রামের সমস্ত বিদ্যালয়ে ক্লাস চালু হয়ে গেল। কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউটের প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত জানান, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের নিয়েই শুরু হয়েছে পঠনপাঠন। রোহিণী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান গৌরাঙ্গ ঘোষ জানিয়েছেন, প্রথমদিন উপস্থিতি ছিল ৫০ শতাংশ। রায়গঞ্জ-সহ উত্তর দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন প্রান্তে সকাল থেকেই পড়ুয়ারা ভিড় করেছে। আপাতত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি এবং কলেজে পঠনপাঠন শুরু হয়েছে। রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়েও শুরু হল ক্লাস। প্রায় সব কলেজপড়ুয়ারই ভ্যাকসিনেশন হয়েছে। আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাটের উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নারায়ণ সরকার জানালেন, প্রথম দিন উপস্থিতি ছিল মাত্র ৩৫ শতাংশ। যারা আসেনি তাদের জন্য পঠনপাঠনের লাইভ স্ট্রিমিং হল সরাসরি ক্লাস থেকে।