সভ্যতা আজ কোথা থেকে কোথায় পৌঁছেছে; সাধারণ মুখের কথা আজ মুহূর্তের মধ্যে আন্তর্জালের দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে। সমগ্র ভৌগোলিক সীমাবদ্ধতা কাটিয়েই আন্তর্জালের মাধ্যমেই কুয়ালালামপুরের একটি বেতার সম্প্রচার ক্যানসাসে বসে সরাসরি শোনা যাচ্ছে। শুধু কি শোনা— এই অভিনব আন্তর্জালিক বেতার বা ইন্টারনেট রেডিও-র মাধ্যমে কথার পাশাপাশি ছবি, গ্রাফিক্স, টেক্সট, লিংক, কথপোকথন, পারস্পরিক মত বিনিময় সবই সম্প্রচারের সময় সরাসরি সম্ভব হচ্ছে। শ্রোতা ও বক্তা তথা সম্প্রচারক এবং ক্রেতা ও বিক্রেতা বা বিজ্ঞাপন দাতার মধ্যে একটি নতুন প্রাণবন্ত ও ফলপ্রসূ সম্পর্ক গড়ে উঠছে দিন দিন।
আরও পড়ুন-ম্যান ইউতে ফিরে আসাটাই বিপর্যয়, বিস্ফোরক রোনাল্ডো
আন্তর্জালিক বেতার বা ইন্টারনেট রেডিও বিরাট কোন যান্ত্রিক বোঝাপড়া নয়; সামান্য একটি কম্পিউটার, ইন্টারনেট সংযোগ, শব্দ বা অডিও কপি করার জন্য একটি সিডি প্লেয়ার, মাইক্রোফোন, অডিও মিক্সার, ডিজিটাল সাউন্ড কার্ড এবং বেশকিছু প্রয়োজনীয় নির্দেশক সফটওয়্যার দরকার— তাহলেই ইন্টারনেট রেডিও রমরমিয়ে চলবে। সাউন্ড কার্ডের মধ্য দিয়ে ওই নির্দিষ্ট কম্পিউটারের মধ্যে অডিও-কে প্রবেশ করানো হলে ‘এনকোডার’ নামে একটি সফটওয়্যার ওই অডিও-টিকে সম্প্রচারণযোগ্য করে তোলে অর্থাৎ এটিকে সংযোজন, বিয়োজন ও সংকোচনের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ে নিয়ে আসে যাতে সহজেই সম্প্রচার করা যায়। তারপর ওই অডিও-টিকে সার্ভারের মধ্য দিয়ে শ্রোতারা ‘প্লাগ-ইন’ সফটওয়্যারে পাঠানো হয় এবং তারপরেই শ্রোতা তাঁর ব্যক্তিগত কম্পিউটার, ল্যাপটপ, পামটপ, গাড়ির মধ্যেকার রেডিও, অন্যান্য ব্যবহৃত পরিবহণযোগ্য বৈদ্যুতিন যন্ত্র কিংবা মুঠোফোনে শুনতে পায়।
আরও পড়ুন-সামনে হিমাচল, সতর্ক অভিমন্যুরা
সেই চিরাচরিত ট্রানজিস্টর রেডিওর বাইরে বিংশ শতাব্দীর এ এক যুগান্তকারী আবিষ্কার। তখনকার দিনে সম্প্রচার নির্দিষ্ট একটি সীমানার মধ্যে আটকে থাকত; দেখা যেত একটি নির্দিষ্ট এলাকায় হয়তো আলাদা আলাদা একাধিক রেডিও স্টেশন আছে, তা সত্ত্বেও কোনও বৈচিত্র্য নেই। ঠিক এই সময় ১৯৯৩ সালে কার্ল ম্যালমুড এই ইন্টারনেট রেডিওর অগ্রগামী দিশা দেখিয়েছিলেন; যা অভিনব ভাবে মানুষের মধ্যে বিনোদন, ব্যবসা, বিনিময় ও বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে ব্যাপক রূপান্তরকারী ভূমিকা পালন করছে। পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তে বসে যে কোনও অপর প্রান্তের রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, ধর্মনীতি, সৃষ্টি ও কৃষ্টির কথা মন চাইলেই শুনতে পারি।