শক্তিরূপেণ

শাক্তদেবী কালী বা কালিকা দশমহাবিদ্যার প্রথম মহাবিদ্যা৷ বিশ্বসৃষ্টির আদি কারণ তিনি৷ আবার তিনিই আদ্যাশক্তি মহামায়া৷ বেদ, পুরাণ অনুযায়ী তিনিই দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতীও। প্রাচীনকাল থেকে এই বঙ্গে নানা রূপে হয়ে আসছে মা মহামায়া তথা শক্তির আরাধনা। লিখছেন শর্মিষ্ঠা ঘোষ চক্রবর্তী

Must read

কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধক্ষেত্রে কৃষ্ণ এবং অর্জুন দু’জনে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেছিলেন, ‘‘হ্রীং নমস্তে সিদ্ধসেনানী আর্য্যেমন্দরবাসিনী/ কুমারী কালী কাপালী কপিলে কৃষ্ণ পিঙ্গলে…।’’ ঈশ্বরবিশ্বাসী মানুষ মাত্রেই স্বীকার করেন— যে দুর্গা, সেই কালী।
প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকেই ভারতে শক্তিপুজোর প্রচলন ছিল। ১৬০০ বছরেরও আগে ভারতবর্ষে প্রথম শক্তিপুজোর প্রমাণ মেলে। পরবর্তীকালে সিন্ধু সভ্যতার যুগেও শক্তি আরাধনার উল্লেখ রয়েছে। ঋগবেদের দেবীসূক্ত এবং রাত্রিসুক্ত থেকে প্রমাণিত হয় যে বৈদিক যুগেও শক্তিপূজা প্রচলন ছিল। ঋগবেদে বিশ্বদুর্গা, সিন্ধুদুর্গা, অগ্নিদুর্গা এবং অন্যান্য দেবীর উল্লেখ আছে। সংখ্যায়ন গৃহ্যসূত্রে ‘ভদ্রকালী’ নামটি আছে।
শাক্তধর্ম হল পরম নারী চেতনার উপাসনা। এটি হিন্দুধর্মের তৃতীয় বৃহত্তম সম্প্রদায়। আদি পরাশক্তি বা আদ্যাশক্তি বা অভয়া শক্তি বা মহাদেবী হিন্দুধর্মের শাক্ত সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ দেবী। সমস্ত হিন্দু দেবদেবীকেই এই মহাদেবীরই প্রকাশ বলে মনে করা হয়, যিনি স্বয়ং পরমব্রহ্ম। শাক্ত বিশ্বাস অনুযায়ী দেবীই সর্বোচ্চ ও পরম দৈবসত্তা। তিনিই সমগ্র সৃষ্টির উৎস ও স্বরূপ এবং সর্বজীবের শক্তি ও চালিকা।
বৈষ্ণবরা মহাদেবীকে লক্ষ্মী। শৈবরা পার্বতী, দুর্গা ও মহাকালী। শাক্তরা দুর্গা, ত্রিপুরসুন্দরী, ভুবনেশ্বরী, চামুণ্ডা, মহাশক্তি, পরমাপ্রকৃতি, রাধা, মহাগৌরীসীতা, মহাদেবী, মহালক্ষ্মী, কালী, তারা, জগদম্বা, মহাসরস্বতী রূপে দেখেন।

আরও পড়ুন-তিনি সাধকের মা

গড়ুর পুরাণ, ভাগবত পুরাণে এবং লক্ষ্মীতন্ত্রে লক্ষ্মীকেই মহাদেবী রূপে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে তাঁকে মায়া হিসেবে পূজা করা হয়। তিনি সত্য শক্তি, অসীম।
দেবীভাগবত পুরাণে তাঁকে ভুবনেশ্বরী রূপে বর্ণনা করা হয়েছে। এতে উল্লেখিত রয়েছে শিব হাজার হাজার বছর ধরে আদি পরাশক্তির উপাসনা ও ধ্যান করেছেন।
ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের নবমী তিথিতে দুর্গাপুজোর বোধন থেকে কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের নবমী অর্থাৎ জগদ্ধাত্রী পুজো পর্যন্ত এই তিন পক্ষ কাল বা দেড় মাস ধরে আয়োজিত সমস্ত পুজোই শক্তির আরাধনা৷ এরমধ্যে দুর্গাপুজো এবং কালীপুজোই প্রধান। দুর্গাপুজো ভারতবর্ষ জুড়ে হলেও কালীপুজো বঙ্গদেশেই সীমাবদ্ধ।
দেবী কালিকা
মুণ্ডক উপনিষদে শক্তিকে সাতটি অগ্নিশিখা বা অগ্নিজিহ্বা রূপে বর্ণনা করা হয়েছে৷ এই সাতটি অগ্নিজিহ্বার প্রধান হলেন কালী৷ অন্যভাবে বলা হয়ে থাকে, যিনি কালকে ধারণ করেন তিনিই কালী৷ আবার মহানির্বাণতন্ত্রে বলা হয়েছে, মহাকাল সর্বজীবকে গ্রাস করেন৷ সেই মহাকালকেই যিনি নিজ অঙ্গে ধারণ করেন, তিনিই কালী৷
মহাভারতে কালরাত্রি বা কালী নামে এক দেবীর উল্লেখ পাওয়া যায়। যিনি মৃত যোদ্ধা ও পশুদের আত্মাকে বহন করেন৷ হিন্দু শাক্ত বিশ্বাস অনুসারে, দেবী কালী বা কালিকা দশমহাবিদ্যার প্রথম মহাবিদ্যা। কালীই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টি করেছেন। কালী সেই আদি শক্তিরই মূর্ত রূপ। কিন্তু আজকের এই কালী বা শ্যামা মূর্তি কিন্তু খুব প্রাচীন নয়। কথিত আছে, ষোড়শ শতকের তন্ত্র সাধক কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশই প্রথম কালীর রূপ কল্পনা করেছিলেন। তার আগে দেবী পূজিতা হতেন ‘যন্ত্রে’। অন্য মতে, ইনিই আদ্যাশক্তি মহামায়া৷ ভারতীয় পুরাণ ও তন্ত্রগুলিতে কালীর বিভিন্ন রূপভেদ দেখা যায়৷ তবে সাধারণভাবে তিনি নগ্না, চতুর্ভুজা, কৃষ্ণবর্ণা, লোলজিহ্বা, মুক্তকেশী, নরমুণ্ডমালাবিভূষিতা ও নরমুণ্ডধারী, বরাভয়দাত্রী এবং শিবের বুকের উপর দণ্ডায়মানা৷ দক্ষিণাকালী, সিদ্ধকালী, গুহ্যকালী, মহাকালী, ভদ্রকালী, চামুণ্ডাকালী, শ্মশানকালী ও শ্রীকালী ইত্যাদি নানা রূপে এই বঙ্গে আরাধনা হয় শক্তির। এছাড়াও জ্যৈষ্ঠ মাসে ফলহারিণী কালীপূজা ও মাঘ মাসে রটন্তী কালীপূজাও বিশেষ জনপ্রিয় বাঙালি সমাজে৷

আরও পড়ুন-এল ক্লাসিকোয় আজ ভিনি বনাম রাফিনহা

দেবী তারা
হিন্দুমতে তারাও কালীর একটি বিশেষ রূপ। দশমহাবিদ্যার দ্বিতীয় মহাবিদ্যা। কালীর মতোই মাতারাও ভীষণা দেবী। উগ্রতারা, নীল সরস্বতী, একজটা তারা, কুরুকুল্লা তারা, মহাশ্রী, বশ্যতারা, বিজয়তারা ইত্যাদি। তারা মায়ের পুজোর প্রচলন অনেক প্রাচীনতর। কেউ কেউ মনে করেন মা তারা হলেন দুর্গা বা মা চণ্ডীর রূপান্তর। পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার তারাপীঠে ব্রহ্মশীলায় তারা মূর্তিটি দুই হাত বিশিষ্ট, বামকোলে পুত্ররূপে শিবশায়িত। তারা মায়ের পরমভক্ত সাধক বামাক্ষ্যাপার পুণ্যভুমি তারাপীঠ শক্তির অন্যতম আরাধ্যস্থল।
দক্ষিণাকালী
এই বঙ্গে সব থেকে প্রসিদ্ধ দক্ষিণাকালী। দক্ষিণাকালী ঘোর কৃষ্ণবর্ণা, দিগম্বরী, চতুর্ভুজা, মুক্তকেশী ও করালবদনা৷ এই কালীর দক্ষিণ ঊর্ধ্ব ও অধঃ করযুগলে বর ও অভয় মুদ্রা, বাম ঊর্ধ্ব করে খড়্গ এবং নিম্ন করে সদ্যছিন্ন নরমুণ্ড৷
গলায় মুণ্ডমালা, দুই কর্ণে শবরূপী কর্ণাবতংস, পরনে নরহস্তের কটিবাস, ত্রিনয়নী, স্বামী শিবের বুকে পা দেবার কারণে লজ্জায় জিভ কাটার ভঙ্গি৷ দক্ষিণপদ শিবের বক্ষে স্থাপিত এবং দক্ষিণমুখী তাঁর অবস্থান বলেই এই কালীর নাম দক্ষিণাকালী৷ দক্ষিণদিকের অধিপতি যম যে কালীর ভয়ে পলায়ন করেন, তিনিই দক্ষিণাকালী৷ এই কালীর পূজা করলে দক্ষিণাস্বরূপ সর্বশ্রেষ্ঠ ফল পাওয়া যায়৷
রক্ষাকালী
দক্ষিণা কালীরই একটি রূপ হল রক্ষাকালী। কথিত, প্রাচীন কালে নগর ও লোকালয়ের রক্ষার জন্য এই দেবীর পুজো করা হত। এই দেবীর পুজোর মন্ত্রও ভিন্ন। দেবী চতুর্ভুজা, কৃষ্ণবর্ণা, মুণ্ডমালাবিভূষিতা। তাঁর ডান হাতে খড়্গ ও নীল পদ্ম এবং বাম হাতে কর্ত্রী ও খর্পর। মায়ের মাথায় গগনস্পর্শী জটা। গলায় মুণ্ডমালার অলঙ্কার। মায়ের বক্ষে নাগহার।
মা রক্ষাকালীর চক্ষু রক্তবর্ণ। কটিদেশে কৃষ্ণবস্ত্র এবং ব্যাঘ্রচর্ম। দেবীর বাহন সিংহ। মায়ের বাম পা শবের বুকের ওপর, ডান পা সিংহের পিঠে স্থিত।
সিদ্ধকালী
সিদ্ধকালী হলেন কালীর অপ্রচলিত বা অখ্যাত রূপ। গৃহস্থের বাডি়তে সিদ্ধকালীর পুজো করা হয় না৷ এই সিদ্ধকালী মূলত সিদ্ধ সাধকদের ধ্যান-আরাধ্যা দেবী হিসেবেই পরিচিত৷ কোনও কোনও কালীতন্ত্রে এই দেবীকে দ্বিভুজা রূপে কল্পনা করা হয়েছে৷ আবার কোথাও কোথাও এই কালীকে ব্রহ্মরূপা ভুবনেশ্বরী হিসেবেও উল্লেখ করা হয়েছে৷ সালংকারা সিদ্ধকালীর রূপটি হল দক্ষিণহস্তের খড়্গের আঘাতে চন্দ্রমণ্ডল থেকে নিঃসৃত অমৃতরস বামহস্তে ধরে থাকা একটি পাত্রে পড়ছে এবং সিদ্ধকালী সেই অমৃত পরমানন্দে পানরতা৷ তাঁর বা পা শিবের বুকে ও ডান পা শিবের ঊরুদ্বয়ের মধ্যস্থলে৷

আরও পড়ুন-আমাকে খুন করার চক্রান্ত চলছে বিস্ফোরক তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ

মহাকালী
শ্রীশ্রীচণ্ডী-তে মহাকালীকে আদ্যাশক্তি, দশবক্ত্রা, দশভুজা, দশপাদা ও ত্রিংশল্লোচনা রূপে বর্ণনা করা আছে৷ কিন্তু তন্ত্রসার গ্রন্থ অনুসারে, মহাকালী পঞ্চবক্ত্রা ও পঞ্চদশনয়না৷ মহাকালীর দশ হাতে রয়েছে যথাক্রমে খড়্গ, চক্র, গদা, ধনুক, বাণ, পরিঘ, শূল, ভূসুণ্ডি, নরমুণ্ড ও শঙ্খ৷ এই কালী ভৈরবী হলেও গুহ্যকালীর সঙ্গে পার্থক্য রয়েছে৷ মাকে তুষ্ট করলে রূপ, সৌভাগ্য, কান্তি ও শ্রী লাভ করেন৷
গুহ্যকালী
গুহ্যকালীর অন্য নাম আকালী৷ সাধকদের আরাধ্য এই কালীর রূপকল্প ভয়ংকর৷ গুহ্যকালীর গায়ের রং ঘন মেঘের মতো৷ লোলজিহ্বা ও দ্বিভুজা, গলায় পঞ্চাশটি নরমুণ্ডের মালা, কর্ণে শবদেহরূপী অলংকার, কোমরে ক্ষুদ্র কৃষ্ণবস্ত্র, কাঁধে সাপ দিয়ে তৈরি যজ্ঞোপবীত, মস্তকে জটা ও অর্ধচন্দ্র, নবরত্নভূষিতা৷ দেবীর মুখমণ্ডল হাস্যযুক্তা৷ চারিদিকে নাগফণা দ্বারা বেষ্টিতা ও নাগাসনে উপবিষ্টা এই দেবীর বামকঙ্কণে সর্পরাজ তক্ষক ও দক্ষিণকঙ্কণে নাগরাজ অনন্ত৷ বামে বৎসরূপী শিব৷ গুহ্যকালী নিয়মিত শবমাংস ভক্ষণে অভ্যস্তা৷ নারদ ও অন্য ঋষিগণ শিবমোহিনী গুহ্যকালীর সেবা করেন৷ তিনি অট্টহাস্যকারিণী, মহা ভীমা, সাধকের অভিষ্ট ফলপ্রদায়িনী৷
বীরভূমের আকালীপুর গ্রামে মহারাজা নন্দকুমার রায় প্রতিষ্ঠিত গুহ্যকালীর মন্দিরে আকালীকালীর বিগ্রহ আছে৷ কিংবদন্তি আছে, ওই বিগ্রহটি নাকি রাজা জরাসন্ধের৷
ভদ্রকালী
ভদ্র শব্দের অর্থ কল্যাণ এবং কাল শব্দের অর্থ শেষ সময়৷ অর্থাৎ যে দেবী মরণকালে জীবের মঙ্গলবিধান করেন, তিনিই ভদ্রকালী৷ কালিকাপুরাণ মতে, ভদ্রকালীর গায়ের রং অতসী ফুলের ন্যায়, মাথায় জটাজুট, কপালে অর্ধচন্দ্র ও গলায় কণ্ঠহার৷ কিন্তু তন্ত্রমতে তিনি মসীর ন্যায় কৃষ্ণবর্ণা, মুক্তকেশী, কোটরাক্ষী, সর্বদা এমনই ক্ষুধিতা যে জগৎকে গ্রাস করতে উদ্যত৷ হাতে তাঁর জ্বলন্ত অগ্নিশিখা ও পাশযুগ্ম৷ গ্রামবাংলায় অনেক জায়গাতেই অত্যন্ত নিষ্ঠা সহকারে ভদ্রকালীর বিগ্রহ পুজো করা হয়৷
মহারাজ নন্দকুমারের আদি বাসস্থান বীরভূমের ভদ্রকালী গ্রামের নামটি এসেছে স্থানীয় ভদ্রকালী মন্দির থেকে৷
চামুণ্ডাকালী
দেবীভাগবত পুরাণ ও মার্কণ্ডেয় পুরাণ-এর বর্ণনা অনুযায়ী, চামুণ্ডা চণ্ড ও মুণ্ড নামক দুই অসুর বধের নিমিত্ত দেবী দুর্গার ভ্রুকুটিকুটিল ললাট থেকে এই দেবীর সৃষ্টি৷ চামুণ্ডার গায়ের রং নীলপদ্মের ন্যায়, পরিধানে ব্যাঘ্রচর্ম, অস্তিচর্মসার শরীর ও বিকট দাঁত৷ হাতে অস্ত্র হিসেবে থাকে দণ্ড ও চন্দ্রহাস৷ দুর্গাপুজোয় মহাষ্টমী ও মহানবমীর সন্ধিক্ষণে আয়োজিত সন্ধিপুজোর সময় দেবী চামুণ্ডার পুজো করা হয়৷ অশুভ শত্রুবিনাশের জন্য শক্তি প্রার্থনা করে চামুণ্ডাকালীর পুজো করবার বিধান রয়েছে শাস্ত্রে৷

আরও পড়ুন-দুর্যোগে ক্ষতির খতিয়ান নিলেন মুখ্যমন্ত্রী, মৃত্যু ১ জনের, ত্রাণে নজর-সহ একাধিক নির্দেশ

শ্মশানকালী
শ্মশানকালী দশমহাবিদ্যার প্রথম বিদ্যা কালীরই এক রূপ। তিনি নিরাকার ও সাকারও উভয় রূপেই অবস্থান করেন। শ্মশানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী৷ তিনি কাজলের পর্বতের ন্যায় কৃষ্ণবর্ণা, শুষ্ক শরীরবিশিষ্টা। মায়ের রক্তিম চক্ষু। কেশ আলুলায়িত। এই দেবীর ডান হাতে সদ্য ছিন্ন নরমুণ্ড ও বাম হাতে আসবপূর্ণ নরমুণ্ড নির্মিত পানপাত্র। দেবী সর্বদা ক্ষুৎপিপাসান্বিত ও শবরূপী সদাশিবের উপর দণ্ডায়মানা। কপালে অর্ধচন্দ্র শোভিতা। শবসাধকগণ কালীর এই মূর্তির আরাধনা করেন৷ তাই শ্মশানকালীর পুজো শুধুমাত্র মন্দির অথবা শ্মশানেই করা রীতি।
শ্রীকালী
গুণ ও কর্ম অনুসারে শ্রীকালী কালীর আরেক রূপ৷ অনেকের মতে এই রূপে তিনি দারুক নামক অসুর নাশ করেন৷ ইনি মহাদেবের শরীরে প্রবেশ করে তাঁর কণ্ঠের বিষে কৃষ্ণবর্ণা হয়েছেন৷ শিবের ন্যায় ইনিও ত্রিশূলধারিণী ও সর্পযুক্তা৷ কালীর এই নগ্নিকা ভয়াবহ মূর্তিভাবনার পিছনে আদিম কোনও ধর্মধারা বা ‘কালট’-এর প্রভাব রয়েছে বলেই অনুমান করেন সমাজবিদরা৷ কোনও এক নগ্নিকা খড়গহস্তা, নরমুণ্ডধারী যখন দেবী হিসেবে পূজিতা হচ্ছেন তখন তা আদিম অরণ্যচারী মানুষের সংস্কৃতির কোনও ঐতিহ্যকে বহন করছে বলে মনে করা হয়৷
কাম্যাকালী
বিশেষ রূপে প্রার্থনা করতে কালীর এই রূপ আরাধনা করা হয়। পুজোর নিয়মবিধি অনেকটাই দক্ষিণা কালীর মতোই। সাধারণত, অষ্টমী, চতুর্দশী, অমাবস্যা, পূর্ণিমা ও সংক্রান্তির মতো তিথিতেই কাম্যাকালীর আরাধনা করা হয়।

Latest article